ন্মের সময় দুটি হাত না নিয়েই জন্মগ্রহণ করে মানিক রহমান। তার দুটি পা রয়েছে, কিন্তু সেখানেও সমস্যা, একটি ছোট একটি লম্বা। শারীরিক প্রতিবন্ধী ছাত্র মানিক রহমান এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়ে এলাকাজুড়ে আলোচনায় এসেছেন। তিনি অন্যান্য সুস্থ-স্বাভাবিক শিক্ষার্থীদের মতই ভালো ফলাফল করায় তার পরিবারসহ আত্মীয়-স্বজনেরা অনেক খুশি। মানিক রহমান ভালো রেজাল্ট করার বিষয়টি প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না। তবে তার এধরনের রেজাল্ট করার সম্ভাবনা ছিল বলে জানিয়েছেন। অদম্য মেধাবী মানিক রহমান ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে মানিক তার ল্যাপটপ নিয়ে পরীক্ষার ফল বের করেন। slot online gacor পরীক্ষার ফল ঘোষণার পর মানিক গোল্ডেন জিপিএ-৫ পাওয়ার খবর শুনে সবাই হতবাক হয়ে যায়।
শারীরিক প্রতিবন্ধী মানিক রহমান কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার সদর ইউনিয়নের চন্দ্রখানা গ্রামের ও’ষুধ ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ও মা প্রভাষক মরিয়ম বেগমের ছেলে। তার বাবা-মা এবং শিক্ষকদের উত্সাহে তার আত্মবিশ্বাস ও মনোবলকে পুঁজি করে সে পিইসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ সহ ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি ও জেএমসিতেও গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছেন।
তিনি শুধু পা দিয়ে লিখেই ভালো ফলাফল করেন না, তিনি পা দিয়ে মোবাইল ফোন চালানো এবং কম্পিউটার টাইপিং ও ইন্টারনেট ব্যবহারেও পারদর্শী। তাই ভবিষ্যতে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার জন্য বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে চান মানিক রহমান। বাবা-মায়ের বড় ছেলে মানিক রহমান। লড়াকু সৈনিক মানিকের হাত না থাকলেও পড়ালেখায় কখনো পিছিয়ে পড়েননি।
মানিকের বাবা মিজানুর রহমান ও মা মরিয়ম বেগম বলেন, আমার দুই ছেলে। মানিক বড়। ছোট ছেলে মাহিম ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ে। আমরা মনে করি না বড় ছেলে মানিক প্রতিবন্ধী। জন্ম থেকে তার দুই হাত না থাকলেও ছোটবেলা থেকেই আমরা তাকে পা দিয়ে লিখতে শিখিয়েছি।
মানিক পিএসসি ও জেএসসিতে সমাজের অনেক সুস্থ-স্বাভাবিক ছেলে-মেয়ের চেয়ে ভালো নম্বর পেয়েছে। এটা আমাদের গর্ব। সবাই আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন যেন সে সুস্থ ও সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে। এইচএসসি পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেয়ে সে তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারে।
মানিক রহমান বলেন, দুই হাত না থাকলেও আল্লাহর রহমতে এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছি। এর আগে জেএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন এ-প্লাস পেয়েছি। তিনি আরও বলেন, এইচএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করলে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবো এবং ভবিষ্যতে কম্পিউটার প্রকৌশলী হয়ে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পারব।
ফুলবাড়ীর জছিমিয়া মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবেদ আলী খন্দকার জানান, শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী হয়েও মানিক রহমান অন্যান্য শিক্ষার্থীদের চেয়ে ভালো ফলাফল করেছে।
আবেদ আলী খন্দকার যিনি ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তিনি মানিক রহমানের সফলতা সম্পর্কে জানাতে গিয়ে বলেন, মানিক রহমান শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী, তা সত্বেও সে অন্য শিক্ষার্থীদের চেয়েও অনেক ভাল রেজাল্ট করেছে। সে আগামীতেও ভাল রেজাল্ট করবে এমনটাই আশা করি। সে ভবিষ্যতে এই এলকার গর্ব হবে। আমরা সকলে তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি।