Monday , December 23 2024
Breaking News
Home / Countrywide / জন্মদিনে বাবার কাছ থেকে ১০ টাকা নিয়ে বের হয়ে আর বাড়ি ফেরা হলো না মাঈনউদ্দিনের

জন্মদিনে বাবার কাছ থেকে ১০ টাকা নিয়ে বের হয়ে আর বাড়ি ফেরা হলো না মাঈনউদ্দিনের

মৃত্যু এমনই এমনই একটি চিরন্তন সত্য, যা থেকে রক্ষা নেই কাররই। তবে কিছু কিছু মৃত্যু যেন কাঁদিয়ে যায় সবাইকে। গতকাল সোমবার (২৯ নভেম্বর) এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে রাজধাণী ঢাকার রামপুরায়। জানা যায়, গতকাল রাত ১১ টার দিকে বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে রামপুরা বাজারের সামনে এলেই অনাবিল পরিবহনের একটি বাস চাপায় প্রাণ হারান মাঈন উদ্দিন নামের এক শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় মাঈনের পরিবরের মাঝে নেমে এসেছে শোকের কালো ছায়া।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, নিহত মাঈন উদ্দিন এ বছর স্থানীয় একরামুন্নেসা স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিল। তার বাবার নাম আব্দুর রহমান ভান্ডারি। তিনি পেশায় একজন চা দোকানি। পূর্ব রামপুরার মোল্লা বাড়ি এলাকায় চা বিক্রি করেন তিনি।

নিহতের বন্ধু মারুফ ইসলাম জানায়, বেপরোয়া গতির অনাবিল পরিবহনের বাসটি মাঈন উদ্দিনকে চাপা দেয়। তার চাচাতো ভাই মো. বাদশা বলেন, সে সন্ধ্যায় বাবার দোকানে চা বিক্রি করেছে। রাতে এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল। সেখান থেকে ফেরার পথে বাস তাকে চাপা দেয়। একজন পথচারী বাসায় ফোন দিয়ে এ খবর জানায়। তখনই আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মাঈন উদ্দিনের লাশ দেখতে পাই।

২০০২ সালের ২৯ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করে মাঈন উদ্দিন। সে ৩ ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট। পূর্ব রামপুরার মোল্লা বাড়ি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, স্বজনদের আহাজারি। বাবা-মায়ের কান্নার শব্দের যেন আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে আছে।

আহাজারি করে মাঈন উদ্দিনের বাবা আব্দুর রহমান বলছেন, বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে যেতে আমার ছেলে ১০ টাকা চেয়েছিল। আমি ১০টাকা দিয়ে বলি দ্রুত বাসায় ফিরে এসো বাবা। কিন্তু আমার বাবা আর ফিরলো না।

একটি ভালো কলজে পড়ার ইচ্ছে ছিল মাঈন উদ্দিনের। তার বাবা বলেন, গতকাল দুপুরে একসঙ্গে ভাত খেয়েছিলাম আমরা। খাওয়ার সময় ছেলে বলছিলে, ‘পরীক্ষা ভালো হয়েছে। বাবা আমি ভালো কলেজে পড়তে চাই।’ তখন আমি তাকে আশ্বাস দিয়ে বলেছিলাম ভালো কলেজে পড়াবো। আমার সব দিয়ে হলেও পড়বো। কিন্তু আমার সব শেষ হয়ে গেল।

মাঈন উদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তার মায়ের আহাজারি। কেঁদে কেঁদে তার মা রাশেদা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলেটাকে বড় করতে চেয়েছিলাম, পড়াশোনা করাতে ছেয়েছিলাম। কিন্তু একি সর্বনাশ হয়ে গেল আমার…! ছেলেটা জন্মদিনে মারা গেল…!

এদিকে এ বিষয়ে মতিঝিল বিভাগের রামপুরা থানার ওসি রফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, খবর পাওয়া মাত্রই তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন বেশ কয়েকটি বাসে আগুন দেয়া হয়েছে। এরপর সেখান থেকে ছেলেটির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি।

About

Check Also

অবশেষে বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা তদন্তে কমিশন গঠন

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দফতরে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *