গত কয়েকদিন আগেই রাজধানী ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রে আদালতের সামনে থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের চোখে স্প্রে দিয়ে ছিনিয়ে নেয়া হয় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি আসামিকে। আর এ ঘটনার পরপরই সারা-দেশজুড়েই বেশ চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তবে ইতিমধ্যেই এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিলেছে চাঞ্চল্যকর এ তথ্য।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে অপহরণ করতে বিপুল পরিমাণ অর্থ লেনদেন করা হয়। রিমান্ডে থাকা একজন আসামি অর্থের উৎস হিসেবে কয়েকজন ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতার নাম উল্লেখ করেছেন। তার কাছ থেকে পাওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
তদন্তের এ পর্যায়ে ঘটনার তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক পুলিশ কর্মকর্তা এ তথ্য জানান।
আদালত থেকে ছিনতাই হওয়া দুই জঙ্গিকে অর্থদাতাসহ যেকোনো মূল্যে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
তবে ৯ দিন অতিবাহিত হলেও আদালত থেকে ছিনতাইকারী জঙ্গিদের গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এমনকি অপহৃত দুই জঙ্গির হদিস এবং তারা অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়েছিলেন কি না তাও নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।
সিটিটিসি সূত্রে জানা গেছে, জঙ্গি অপহরণের ঘটনায় এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার হওয়া একজনসহ ১২ জনকে আদালতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তারা প্রত্যেকেই ঘটনা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। বিশেষ করে হামলার মূল পরিকল্পনাকারী, অর্থ যোগানদাতারা, কারাগারের বাইরে জঙ্গিদের সঙ্গে কীভাবে যোগাযোগ করেছিলেন, এবিটি সামরিক শাখার প্রধান মেজর (অব.) জিয়া ও অন্যান্য নেতাদের কর্মকাণ্ড তারা রিমান্ডে দণ্ডিত আসামিদের নেতৃত্বে সংগঠিত করার চেষ্টা করেছিল। অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। .
সিটিটিসি বলছে, ২০ নভেম্বর আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশের ওপর হামলা এবং দুই জঙ্গি অপহরণের ঘটনায় এ পর্যন্ত মেহেদী হাসান অমিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
চক্রান্তকারীদের মধ্যে কারা ছিল জানতে চাইলে মেহেদী সিটিটিসিকে বলেন, দীর্ঘ ছয় মাস পরিকল্পনার পর তারা আদালত থেকে সহযোগীদের (আসামি) ছিনিয়ে নিতে সফল হয়েছে।
তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা একজন সিটিটিসি কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতারের আগে মেহেদি হিজবুত তাহরীরের সদস্য ছিলেন। পরে তিনি আনসার আল ইসলাম বা আনাসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
গত রোববার সিজিএম পুলিশকে’ মা’র’ধর’ ও চোখে’ ম”রি’চ’ ছি’টি’য়ে ”নিষি’দ্ধ সংগঠন আনসার আল ইসলামের দুই সদস্য’কে অপ’হর”ণ করে জ’ঙ্গি’রা। ঘটনার তিন দিন পর জামিনে থাকা মেহেদী হাসান অমিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এদিকে পুলিশের হেফাজত থেকে দুই জ’ঙ্গি ‘ছি’নতা’ই’য়ের ঘটনায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, পুলিশ সদর দপ্তর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু ৯ দিনেও কেউ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়নি।
এদিকে এ ঘটনার আলোকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে অতি শীঘ্রই তদন্ত কমিটির রিপোর্ট মিলবে। রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর জানা যাবে এ ঘটনায় কারো অবহেলা ছিল কিনা।