Saturday , November 23 2024
Breaking News
Home / Countrywide / ছয় মার্কিন কংগ্রেসম্যানের তথ্য চ্যালেঞ্জ, চিঠি দিল যুক্তরাষ্টে এক সংগঠন

ছয় মার্কিন কংগ্রেসম্যানের তথ্য চ্যালেঞ্জ, চিঠি দিল যুক্তরাষ্টে এক সংগঠন

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে জো বাইডেন প্রশাসনকে ছয় মার্কিন কংগ্রেসম্যানের লেখা চিঠির প্রতিবাদ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশিদের সংগঠন ‘কংগ্রেস অব বাংলাদেশি আমেরিকান ইনকরপোরেশন’। পাল্টা চিঠি পাঠিয়ে তথ্যের সত্যতা চ্যালেঞ্জ করেছে সংগঠনটি।

ছয় রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান ব্যারি মুর, টিম বার্চেট, ওয়ারেন ডেভিডসন, বব গুড, স্কট পেরি ও কিথ সেলফ এই বছরের ১৭ মে বাইডেন প্রশাসনকে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। বাংলাদেশের মানবাধিকার ও আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি নিয়ে নানা অভিযোগ তুলে ধরে।

গত ২৬ আগস্ট ২৬৭ জন প্রবাসী বাংলাদেশির স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখিত তথ্যের সত্যতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘বাইডেন প্রশাসনের কাছে ছয় কংগ্রেসম্যানের চিঠিতে আমাদের জন্মভূমি সম্পর্কে মিথ্যা ও অসম্পূর্ণ তথ্য রয়েছে। এটা আমাদের অনুভূতিতে আঘাত করছে।’

চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, ব্যবসায়ী, মার্কিন সরকারের উচ্চপদে কর্মরত বাংলাদেশি এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত তরুণ-তরুণীরা।

চিঠিতে তারা বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, নারী-পুরুষের সমান অধিকার, নারী উন্নয়ন অগ্রগতি, ধর্মীয় সহনশীলতা বিবেচনা না করেই বাংলাদেশকে অত্যন্ত সংকীর্ণ ও একচোখাভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

চিঠিতে তারা মনে করিয়ে দেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত সন্ত্রা”সী সংগঠন জামায়াতে ইসলামী এবং বাংলাদেশের বিরোধী দলগুলো অর্থের বিনিময়ে লবিস্ট ফার্মগুলোকে ব্যবহার করে এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা ও অর্জন এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জাতিসংঘের জন্য শান্তি বজায় রাখতে গিয়ে বিদ্রোহীদের হাতে নিহ”তদের আত্মত্যাগের কথা উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনার কারণে এত বিশাল অবদান আর আত্মত্যাগ কি অস্বীকার করবে জাতিসংঘ? জাতিসংঘ মিশনে বাংলাদেশের উজ্জ্বল অংশগ্রহণকে নিষিদ্ধ করা কোনোভাবেই নীতি-নৈতিকতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।’

রোহিঙ্গাদের বিষয়ে বলা হয়, বিশ্ব মানবতা রক্ষায় ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশ প্রায় ১৪ লাখ রোহি”ঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। পৃথিবীর আর কোনো দেশ এত বিপুল সংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়নি। নিজের দেশের স্বার্থের কথা চিন্তা না করে এত বিপুল সংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ায় আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ কর্তৃক ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন।

বিএনপি-জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রা”স ও স্বৈরাচারী শাসনের কথা উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, ‘আমেরিকা ২৪৭তম স্বাধীনতা দিবস পালন করছে। তারপরও এই দেশ প্রতিনিয়ত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, মানবিক অধিকার, ধর্মীয় অধিকার নিয়ে নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। সেই তুলনায় ৫২ বছর বয়সি বাংলাদেশের চেষ্টাটি প্রশংসার দাবি রাখে কিনা, সেই প্রশ্নই আমরা রাখতে চাই।’

চিঠিতে চারটি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। প্রথমত, টানা ৫ বার দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়া বিপদগ্রস্ত বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারই দুর্নীতি দমনে কার্যকর ও সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশের নানা পর্যায়ে দুর্নীতি কমে আসছে ক্রমান্বয়ে।

দীর্ঘদিনের অবৈধ সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের দল বিএনপি ও অন্যান্য স্বৈরশাসকের অধীনে দুর্নীতির শিকড় এত গভীরে ছড়িয়ে পড়েছে যে তা রাতারাতি নির্মূল করা সম্ভব নয়। দ্বিতীয়ত, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানসহ সামরিক শাসকদের দুঃশাসন এবং ধর্মীয়ভাবে বিভক্ত বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৯৯৬ সালে প্রকৃত গণতন্ত্রে ফিরে আসে।
ইতিহাস থেকে আমরা জানি, দীর্ঘদিন ধরে সামরিক শাসিত দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা সহজ কাজ নয়। তারপরও বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে গণতন্ত্রের আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে উন্নীত করার চেষ্টা করছে।

তৃতীয়ত, বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত ও সামরিক শাসনামলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক ভিন্নমতাবলম্বীদের দমন ও হ”ত্যার রাজনীতি শুরু হয়। সেখান থেকে স”ন্ত্রাস-মৌলবাদ-জ”ঙ্গিবাদের প্রতি জিরো টলারেন্স দেখিয়ে আইনের শাসনে ফিরছে বাংলাদেশ, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সুশাসনের ধারায় ফিরে আসছে।

চতুর্থত, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং একই সঙ্গে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে মার্কিন বন্ধুদের আঞ্চলিক নিরাপত্তা নির্ভর করে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতার ওপর। বাংলাদেশে আবার বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত সরকার গঠিত হলে এই অঞ্চলে আগের মতো মৌলবাদ ছড়িয়ে পড়বে। যা প্রতিবেশী দেশ ভারতের জন্য হুমকিস্বরূপ।

২০০১-০৬ সাল থেকে বিএনপি-জামায়াত সরকারের ছত্রছায়ায় এ অঞ্চলে ইসলামী জি’হাদি ও সন্ত্রা”সী গোষ্ঠীর প্রশিক্ষণ ও সদর দপ্তর স্থাপিত হয়।

 

About bisso Jit

Check Also

সংস্কারের নামে ভয়াবহ দুর্নীতি-লুটপাট

সংস্কার ও উন্নয়নের নামে কয়েকগুণ বেশি ব্যয় দেখিয়ে হরিলুটের ব্যবস্থা করা হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *