গেল বেশ কিছু দিন আগে বাংলাদেশে ঘটে একটি বড় ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা। ছোট বাচ্চা মেয়ে আয়াতকে শেষ করে দিয়েছে আবির নাম এক ছেলে। আর এই ঘটনায় এখনো চলছে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা। এ দিকে এবার জানা গেলো নতুন খবর। পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন আয়েতের বাবা ও দাদা। শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তারা এ অভিযোগ করেন। আয়াতকে হত্যার সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত থাকতে পারে বলেও দাবি তাদের।
আয়াতের দাদা মনজুর আলম বলেন, যারা আয়াতকে হত্যা করেছে তাদের ফাঁসি চাই। দ্রুত এই বিচার শেষ করে খুনিকে ফাঁসি দিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন। তার ফাঁসি না হওয়া পর্যন্ত বুকের জ্বালা শেষ হবে না।
তিনি বলেন, “কিছু লোক এখনো আমাদের মেসেজ দিচ্ছে, আয়াতটিকে 6 টুকরা করে, তারা আমাদের 12 টুকরো করে ফেলবে।” ফেসবুক আইডি থেকে মেসেজ পাঠিয়ে হুমকি দেওয়া হয়। পরে তারা আবার মেসেজ ডিলিট করে দেয়। আমরাও এখন নিরাপত্তাহীনতায় আছি।
আয়াতের বাবা সোহেল রানা বলেন, আয়াত শুধু আমার মেয়ে নয়, সারা দেশের মেয়ে। আয়াত হত্যায় আবিরের সঙ্গে আরও কয়েকজন জড়িত। তারা ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তারা আমাদের হুমকি দিচ্ছে। কিন্তু তারা কারা তা আমরা জানি না। তারা বলছে, আমার মেয়েকে কাটছে বলে আমাকে মেরে ফেলবে। তারা মেসেঞ্জারে হুমকি দিচ্ছে। আয়াতের খুনিদের ফাঁসি চাই।
এদিকে আজও আয়াতের ছিন্নভিন্ন লাশের সন্ধানে তল্লাশি চালিয়েছে পিবিআই। পিবিআই চট্টগ্রাম মহানগর পরিদর্শক ইলিয়াস খান জানান, আয়াতের মাথাসহ তিন টুকরো লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বে টার্মিনাল এলাকায় আজ অবশিষ্ট টুকরা অনুসন্ধান করা হয়েছে. অভিযানে ২০ জন কর্মীসহ ৪৯ জন পিবিআই সদস্য অংশ নেন। কিন্তু কোথাও কিছুই পাওয়া যায়নি।
গত ১৫ নভেম্বর ইপিজেড থানার বন্দরটিলা এলাকার বাসা থেকে পাশের একটি স্কুলে আরবি পড়তে যান পাঁচ বছর বয়সী আয়াত। এরপর থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। পরদিন তার নিখোঁজের বিষয়ে তার বাবা সোহেল রানা ইপিজেড থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর ২৬ নভেম্বর রাত ১১টার দিকে আবির আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। আবির একসময় আয়াতের নানার বাড়ির ভাড়াটিয়া ছিল। একটি পোশাক কারখানায় কাজ করত। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তাকে গ্রেফতার করে পিবিআই।
আবিরের বিষয়ে পিবিআই জানায়, ছয় মাস আগে ওই যুবক রাস্তায় একটি মোবাইল সিমকার্ড পায়। কাউকে অপহরণ করে মুক্তিপণের জন্য একটি নতুন মোবাইল ফোন কিনে সেই সিমটি পান। আয়তের পরিবার অনেক টাকার মালিক ভেবে শিশুটিকে অপহরণের পরিকল্পনা করে।
১৫ নভেম্বর বিকেলে আবির আয়াতকে অপহরণের চেষ্টা করে। শিশুটি চিৎকার করলে শ্বাসরোধে তার মৃত্যু হয়। পরে লাশ আকমল আলী সড়কের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ছয় টুকরো করা হয়। টুকরোগুলো দুটি ব্যাগে নিয়ে এলাকার পাশের বাঁধে ফেলে দেওয়া হয়। আয়াত হত্যা মামলায় আবিরের মা, বাবা ও বোনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পিবিআই।
প্রসঙ্গত, এ দিকে আয়াতের ঘটনায় গ্রেফতার আবির রয়েছে এখন পুলিশ এর হেফাজতে।তাকে নেয়া হচ্ছে রিমান্ডে তার কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে বয়ান। জানা গেছে তার নামে ইতিমধ্যে করা হয়েছে মামলা। আর সেই মামলার জের ধরেই তার বিচার চলবে।