সাম্প্রতিক একটি ঘটনায় পুত্রবধুর সাথে খারাপ কাজের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে শশুরের বিরুদ্ধে। ঘটনা সুত্রে জানাযায়, ছেলে দীর্ঘদিন বাড়িতে না থাকায় রাত্রেবেলা পুত্রবধূর কাছে সুযোগ নিতে চাইছিলেন শশুর। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে। রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায়।
এই ঘটনার পর একটি সালিশ অনুষ্ঠিত হয়। তবে সালিশের নামে লিফলেট ছাপিয়ে গলায় জুতার মালা দিয়ে ঘুরে বেড়ানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় ভিকটিম বাদী হয়ে মামলা করলে শনিবার (৩১ জুলাই) প্রধান আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
রোববার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে উপজেলার হারাগাছ ইউনিয়নের ধুমগড়া চর গ্রামে সালিশ নামে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।
তবে নিহতের পরিবার জানায়, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মনির হোসেন ও আব্দুর রউফ পরিকল্পিতভাবে আমার বাবাকে অপবাদ দিয়ে তার বিরুদ্ধে সালিশ করে। থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। পুলিশ একজনকে আটক করেছে। ঘটনার সাথে জড়িত অন্যদের গ্রেফতার করে শাস্তি না হলে এলাকায় বড় ধরনের সংঘর্ষের সৃষ্টি হতে পারে।
পুলিশ, স্থানীয় বাসিন্দা ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, ভিকটিম ভুট্টু মিয়া পেশায় একজন বাবুর্চি। রাতে পুত্রবধূর ঘরে ঢোকার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। এ অভিযোগ উত্থাপনের পর গত ২৯ জুলাই সালিশ ডাকা হয়। এলাকায় ধুমগাড়া মসজিদ কমিটির নামে লিফলেট বিতরণ করে সামাজিক বিচ্ছিন্নতার ঘোষণা দেওয়া হয়। একপর্যায়ে তার গলায় জুতার ফিতা পেঁচানো হয়।
এলাকাবাসী জানায়, এক সপ্তাহ ধরে বিভিন্নভাবে প্রচারণা চালানোর পর শুক্রবার বিকেলে ধুমগাড়া জামে মসজিদের সামনে একটি খোলা মাঠে স্থানীয় বাসিন্দাদের উপস্থিতিতে মসজিদ কমিটির সদস্যরা সালিশ করেন। স্থানীয় প্রভাবশালী আব্দুর রউফ সালিশে নেতৃত্ব দেন। সেখানে স্থানীয় আরেক প্রভাবশালী মাতাব্বর মনির হোসেন জোরপূর্বক গলায় জুতার মালা পরিয়ে গ্রামে ঘুরে বেড়ায়। এ সময় উত্তেজনা সৃষ্টি হলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মসজিদ কমিটির আবদুর রউফ জানান, স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে সালিশ অনুষ্ঠিত হয়। তিনি জুতা শিক্ষার আদেশ দেননি।
ভুক্তভোগির মেয়ের জামাই জানান, রাতের আঁধারে কেউ তার বাড়িতে ঢুকেছে। এ সময় তার স্বামী বাড়িতে ছিলেন না। হঠাৎ রুমে অন্য কাউকে দেখে চিৎকার করলে ওই ব্যক্তি পালিয়ে যায়।
এদিকে স্থানীয় কয়েকজন জানান, মনির হোসেনের সঙ্গে টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে মিথ্যা অভিযোগ এনে সালিশের নামে নির্যাতন করা হয়। ঘটনাটি পরিকল্পিত ও মিথ্যা। তাছাড়া ভুক্তভোগী একজন সাধারণ মানুষ।
সার্বিক বিষয়ে জানতে হারাগাছ মেট্রোপলিটন থানার ওসি রেজাউল করিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, শনিবার নিহতের পরিবার বাদী হয়ে দু’জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১০ থেকে ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। ওই রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি মনির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। রোববার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, পুত্রবধূর বাড়িতে প্রবেশের কথা মিথ্যা।
তবে এ ঘটনায় কে সত্যি কথা বলছে তা ১০০ ভাগ নিশ্চিত নয় কেউ। এখনো এ মামলা তদন্ত এখনো চলমান। এলাকাবাসী বলছে, যদি এরকম এর ঘটনা হয়ে থাকে এটি আসলে নিন্দনীয়। আমরা আসল অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।