মালিবাগের জেএস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে খৎনা করাতে গিয়ে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র আহনাফ তাহমিন আয়হাম (১০) এর মৃত্যুর খবরে তার বাবা ফখরুল আলম বলেন, ছেলে খুব উৎফুল্লভাবে ওটিতে ঢুকেছিল, কিন্তু আর ফিরে এলো না।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গের সামনে তিনি এ কথা বলেন। আহনাফ তাহমিন আয়হামের মরদেহ এই মর্গে রাখা হয়েছে।
ছেলের সঙ্গে সর্বশেষ আপনার কী কথা হয়েছিল, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ছেলেকে তো ওটিতে ঢুকিয়ে দিলাম। ও বলছিল একটু ভয় লাগছিল। আমি বলেছিলাম, বাবা কোন সমস্যা নেই, আল্লাহর উপর ভরসা রাখ। তারপরে সে ওটিতে প্রবেশ করে। আমার ছেলে খুব উত্সাহের সাথে প্রবেশ করেছিল।
তিনি বলেন, আমাকে বলেছে ১১টার সময় ছেলের লাশ দিয়ে দেবে। এখন ডাক্তার বলছে পাঁচটা-ছয়টা বাজবে। আমি চাইনি মামলা করার জন্য, মামলার দরকার নেই। আমার ডিস্ট্রিক্ট কমিশনার আমাকে ফোন দিয়েছেন, ফোন দিয়ে বলছেন মামলা করতে হবে, তারা পদক্ষেপ নেবেন।
তাহলে মামলা করতে চাননি কেন, সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কী লাভ হবে? কারণ এদেশে বিচার নেই? যে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে। গতকাল থেকে সারাদিন কাজ করে বাচ্চাকে নিয়ে গেছি, সারারাত জেগে আছি, সারাদিন জেগে আছি, ঘুমাতে পারিনি।
মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন উল্লেখ করে মো. ফখরুল আলম বলেন, এ জন্যই আমি মামলা করতে চাইনি। আমি জানি এখানে এখন আমার ছেলের নামে… সে অসুস্থ ছিল হেঁটে যেতে পারেনি, মানে বিভিন্ন ধরনের কথা মিডিয়ার লোকেরাই ছড়াচ্ছে।
তিনি বললেন, আমার সুস্থ ছেলে, সপ্তাহে পাঁচ দিন স্কুলে যায়। এরপর যোগ দেয় স্কাউটসে, সে ক্লাস ক্যাপ্টেন। অসুস্থ হলে সে তাদের সাথে যোগ দিতে পারতো না।
জানা গেছে, মালিবাগের জে এস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে অর্থোপেডিক ও ট্রমা সার্জন ডা. এস এম মুক্তাদিরের তত্ত্বাবধানে মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে সন্তানকে সুন্নতে খৎনা করাতে আসেন শিশু আয়হামের বাবা ফখরুল আলম ও মা খায়কুন নাহার চুমকি।
রাত আটটার দিকে খৎনা করানোর জন্য অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়ার পর আর ঘুম ভাঙেনি আহনাফের। এর ঘণ্টাখানেক পর হাসপাতালটির পক্ষ থেকে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
স্বজনদের অভিযোগ, লোকাল অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়ার কথা থাকলেও ফুল অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়া হয় আহনাফকে। যে কারণে তার জ্ঞান ফেরেনি।