চাঁদপুর জেলার হাইমচর উপজেলাধীন একটি এলাকায় সিদ্দিক মৈশাল নামের এক ব্যক্তির স্ত্রী সেখানকার এক মাদ্রাসা শিক্ষকের হাত ধরে নিখোঁজ হয়েছেন। ওই গৃহবধূর নাম জেসমিন বেগম এবং শিক্ষকের নাম সাইমুন সিরাজী। গত সোমবার অর্থাৎ ১৪ নভেম্বর দুপুরের দিকে আশরাফ উদ্দিন যিনি হাইমচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তিনি এ ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে শুক্রবার (৫ নভেম্বর) রাতে গৃহবধূ জেসমিন বেগম ঘরে থাকা নগদ আড়াই লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে সাইমন সিরাজীর হাত ধরে পালিয়ে যায়। এদিকে গৃহবধূর স্বামী সিদ্দিক মৈশাল বাদী হয়ে হাইমচর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযুক্তের নাম সাইমন সিরাজী। তিনি উপজেলার উত্তর চরভাঙ্গা কারীমিয়া নূরানী হাফিজিয়া মাদরাসার নূরানী বিভাগের শিক্ষক।
অভিযোগে জানা যায়, জেসমিন বেগমের ছোট ছেলে ছাব্বির হোসেনকে এক বছর আগে মুফতি সালমান সাকির পরিচালিত প্রতিষ্ঠান উত্তর চরভাঙ্গা কারীমিয়া নূরানী হাফিজিয়া মাদরাসায় ভর্তি করেন। জেসমিন নিয়মিত মাদ্রাসায় গিয়ে ছেলেকে খাবার দিয়ে আসতেন। সেখান থেকে মাদ্রাসা শিক্ষক সাইমুন সিরাজীর সঙ্গে তার সখ্যতা গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে সে অবৈ’ধ পর’কীয়াতে লি’প্ত হয়। মাদ্রাসা শিক্ষক সাইমন বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে জেসমিনের কাছ থেকে প্রায় দেড় লাখ টাকা নেয়। পরে গত ৫ নভেম্বর আ’সামি জেসমিন বেগম সাইমন সিরাজীর সাথে পালিয়ে যান এবং ঘরে থাকা বেশ কিছু পরিমান নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যায়।
মাদ্রাসার পরিচালক মুফতি সালমান সাকি জানান, পরীক্ষার পর গত ৩ নভেম্বর থেকে সাত দিনের জন্য মাদ্রাসা বন্ধ ছিল। খোলার দিনে সবাই উপস্থিত থাকলেও নূরানী বিভাগের শিক্ষক সাইমুন সিরাজী উপস্থিত হননি। তার মোবাইলে কল করেও যোগাযোগ করতে পারিনি। পরে শুনি আমার মাদ্রাসার ছাত্র ছাব্বির হোসেনের মাকে নিয়ে পালিয়ে গেছে। তবে তাকে খুঁজে পেলে থানার মাধ্যমে উপযুক্ত শাস্তির সম্মুখীন করা হবে ইনশাআল্লাহ।
অভিযুক্ত জেসমিন বেগমের স্বামী সিদ্দিক মৈশাল বলেন, ছেলেকে বিদেশে পাঠাতে টাকা জমিয়েছি। আমার স্ত্রী সেই আড়াই লাখ টাকা নিয়ে সাইমন সিরাজীর হাত ধরে চলে গেছে। এনজিও থেকেও কিস্তিতে টাকা তোলা হয়েছে, সেগুলোও সে নিয়ে গেছে। লম্পট সাইমুন সিরাজী ও জেসমিন বেগমকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
জেসমিন বেগমের বাবা লনি মিজি বলেন, আমার মেয়ে জেসমিন বেগম কোথায় আছে বলতে পারছি না। তবে ছাব্বির হোসেনের নাতি সাইমুন সিরাজী নামে এক শিক্ষকের সাথে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ধরে চলে গেছে বলে শুনেছি। এরপর সে ফিরে এলেও আমরা তাকে মেয়ে বলে পরিচয় দেব না।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বে থাকা আশরাফ উদ্দিন ঘটনার বিষয়ে আরো জানান, ওই মাদ্রাসার শিক্ষকের সাথে মাদ্রাসায় যাওয়া আসার জেরে এক সময় ওই গৃহবধূর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এবং একপর্যায়ে তারা পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। শেষমেষ গত ৫ নভেম্বর তারা দু’জন একসাথে নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী সিদ্দিক মৈশাল থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনা বিষয়ে তদন্ত চলছে এবং তাদের খোঁজে চেষ্টা চলছে।