Tuesday , December 24 2024
Breaking News
Home / Countrywide / ছেলের প্রেমিকাকে বন্ধ ঘরে আটকে বেদমভাবে প্রহর করলেন ইউপি চেয়ারম্যান

ছেলের প্রেমিকাকে বন্ধ ঘরে আটকে বেদমভাবে প্রহর করলেন ইউপি চেয়ারম্যান

পাচঁ বছর প্রেম করে যখন প্রসঙ্গ বিয়ে, তখনি বেধে যায় গোলযোগ। বিয়েতে রাজি নয় ছেলে। তবে কেন প্রেমিকাকে বিয়ে করার জন্য দেওয়া হল দুই হাজার টাকা। এমনি প্রশ্ন অনেকের। ঘটনাটি মোড় নিয়েছে অন্যদিকে।

বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাড়িতে নিয়ে গেলেও স্ত্রীর মর্যাদা দেওয়া হয়নি মাহমুদা আক্তার প্রিয়া (২১) নামের এক কলেজছাত্রীকে। উল্টো প্রেমিকার বাবা রাজবাড়ী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক মুলঘর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ওহিদুজ্জামান নিজেই তাকে নি/ র্যাতন করে র/ ক্তাক্ত অবস্থায় বাড়ি থেকে বের করে দেন। আহত কলেজ ছাত্রকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সোমবার রাতে রাজবাড়ী সদর উপজেলার মুলঘর ইউনিয়নের এরেন্দা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহত কলেজ ছাত্রী মাহমুদা আক্তার প্রিয়া ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের ব্রাহ্মন্দিয়া গ্রামের কালাম মাতুব্বরের মেয়ে। সে শিবচরের ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ডিগ্রি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী।

মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালের বেডে শুয়ে মাহমুদা আক্তার প্রিয়া জানান, তার মামার বাড়ি রাজবাড়ীতে। পাঁচ বছর আগে মামার বাড়িতে গিয়ে মুলঘর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ ওয়াহিদুজ্জামানের ছেলে হিমেলের প্রেমে পড়ে সে। এ সম্পর্কের জের ধরে হিমেল তাকে বিয়ে করবে বলে সোমবার বিকেলে বাড়ির সামনে থেকে একটি প্রাইভেটকারে করে তাকে ফরিদপুর নিয়ে আসে। সঙ্গে আসে তার ছোট বোন রিয়া। এরপর তারা ফরিদপুর থেকে খেয়ে বিকেলে তাদের বাড়িতে নিয়ে আসেন হিমেল।

প্রিয়া আরও জানান, এর আগে হিমেল তার বিকাশ নম্বরে দুই হাজার টাকা পাঠিয়ে বিয়ের শাড়ি কিনতে বলেছিল। হিমেলের কথামতো বিয়ের শাড়ি কিনে পরে আসে। হিমেলের বাড়িতে আসার পর হিমেল তাদের দুই বোনকে বাড়িতে রেখে পালিয়ে যায়। এরপর হিমেলের বাবা ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ওয়াহিদুজ্জামান ও তার স্ত্রী ও তাদের দুই বোনকে বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে শেখ ওয়াহিদুজ্জামান ও তার স্ত্রী তাকে শা/ রীরিকভাবে লা/ ঞ্ছিত করে এবং রাতে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এ ঘটনার পর তিনি ৯৯৯ নম্বরে কল করলে পুলিশ তাদের রাজবাড়ী থানায় গিয়ে অভিযোগ করতে বলে। এরপর মামাদের সহায়তায় ছোট বোনকে নিয়ে থানায় এসে বিস্তারিত জানান। পরে তাকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

প্রিয়ার ছোট বোন দশম শ্রেণির ছাত্রী তাহমিনা আক্তার রিয়া জানান, বড় বোন প্রিয়াকে মারধরের সময় তিনি বাঁচাতে গিয়েছিলেন। এসময় ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ওয়াহিদুজ্জামান তাকেও মারধর করেন। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চান রিয়া।

প্রিয়ার মা শাফিয়া বেগম জানান, প্রিয়ার সঙ্গে হিমেলের পাঁচ বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মেয়ের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কও করে হিমেল। বিষয়টি তার মেয়ে তাকে জানায়। সোমবার (২০ জুন) প্রিয়াকে বিয়ে করতে হিমেলকে বাড়িতে নিয়ে আসে হিমেল। কিন্তু হিমেলের বাবা প্রিয়াকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এ ব্যাপারে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ ভাই আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, প্রিয়ার নাক-মুখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য হিমেলের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি প্রিয়ার সঙ্গে ফেসবুকে কথা বলতাম। এর বাইরে তার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি আমার ঠিকানা নিয়ে সোমবার বিকেলে বাড়িতে আসেন। তারপর আমাকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। এ কারণে বাড়ি ছেড়ে কালুখালীতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে চলে আসি। এখন প্রিয়া আমাকে বিয়ে করার জন্য ব্ল্যা/ কমেইল করছে।

প্রিয়া ও তার ছোট বোন রিয়াকে বাড়িতে আটকে রেখে তোমার বাবা প্রিয়াকে মারধর করেছে এমন অভিযোগের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে হিমেল বলেন, এগুলো ষড়যন্ত্র। ষড়যন্ত্র করে আমাকে ও আমার বাবাকে ফাঁ/ সানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ওয়াহিদুজ্জামানের মোবাইল নম্বরে ফোন করা হলে তিনি বলেন, এসব মিথ্যাচার। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে কিছু অসাধু মহল। রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, বিষয়টি শুনেছি, মামলা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

About Nasimul Islam

Check Also

দীর্ঘ ১৭ বছর পর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন বিএনপি নেতা পিন্টু

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় খালাস পাওয়া বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *