Sunday , September 8 2024
Breaking News
Home / Countrywide / ছেলের পক্ষে জামিন চাইতে গিয়ে আইনজীবীকে বিচারক, সাজা তো আপনার হওয়া উচিত

ছেলের পক্ষে জামিন চাইতে গিয়ে আইনজীবীকে বিচারক, সাজা তো আপনার হওয়া উচিত

অসচেতনাতার ফলে প্রতিনিয়তই ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। আর এর ফলে যেমন অকালেই বিদায় নিতে হয় অনেককে, ঠিক তেমনই নানা বিপত্তিতে পড়তে হয় পরিবার-্পরিজনকেও। আর সম্প্রতি এবার এমনই একটি ঘটনা ঘটতে চলেছিল রাজধানী ঢাকাতে। তবে সৌভাগ্যবসত এ যাত্রায় প্রাণে বেঁচে যায় সকলেই।

জানা গেছে, গত শনিবার রাজধানীতে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে রিকশা গুঁড়িয়ে দিয়ে পাঁচ মাসের শিশুসহ তিন আরোহীকে আহত করার ঘটনায় গ্রেফতার কিশোরকে গাজীপুরের টঙ্গী কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেই চালক তাসকিন দশম শ্রেণির ছাত্র। গাড়ি চালানোর জন্য তার কোনো লাইসেন্স ছিল না।

তেজগাঁও বিভাগ পুলিশ জানায়, বেপরোয়া গতিতে রিকশাকে ধাক্কা দিয়ে তাসকিন শনিবার (২০ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তার মাকে নিয়ে বাসে করে মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলায় তার দাদার বাড়ি চলে যায়। সেখান থেকে আবার চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গায় তার খালার বাড়িতে গিয়ে আত্মগোপনে থাকে।

এ সময় রিকশার যাত্রী ফখরুল হাসানের কোলে থাকা ছয় মাসের একটি শিশু দূরে ছিটকে পড়লে তার পা ভেঙে যায়। হাত ভেঙেছে ফখরুলেরও। এ ঘটনায় আহত হন রিকশাচালকও। রাজধানীর বেইলি রোডে এ দুর্ঘটনার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় মামলা হলে সেই কিশোর চালককে চুয়াডাঙ্গা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কাকরাইলের উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ওই কিশোরকে ঢাকার আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ। তার পক্ষে তার বাবা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তারজেল হোসেন জামিন আবেদন করেন। শিক্ষানবিশ আইনজীবী হাসিবুজ্জামান বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন। বিচারক ওই কিশোরকে দেখে বলেন, ওর তো গাড়ি চালানোর বয়স হয়নি। লাইসেন্স নাই। তার হাতে গাড়ি দিল কেন? ওর বাবা এত দায়িত্বহীন কেন?গাড়ি কার নামে নিবন্ধিত জানতে চাইলে ওই কিশোর বলে, তার বাবার নামে গাড়ি।

তখন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জেসমিন আক্তার বিচারককে বলেন, সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি, ৬ মাস আগে কেনা হয়েছে। তার বাবা সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী। বিচারক তার ছেলের গাড়ি চালানোর লাইসেন্স আছে কি না জানতে চাইলে তিনি না সূচক জবাব দিয়ে বলেন, তার ছেলে যে গাড়ি নিয়ে বের হয়েছিল, তা তিনি জানতেন না। তখন বিচারক তাকে বলেন, সাজাতো আসলে আপনার হওয়া উচিত। ওই কিশোরকে বিচারক বলেন, এখনো অনেক সময় পড়ে আছে। বড় হও, অনেক গাড়ি চালাতে পারবে। তুমি তো একজনের ছেলে। যে শিশুটাকে আহত করেছো সেও তো কারো না কারো ছেলে। কত সময়, কত দিন পরে আছে, জীবনটা কী এতো ছোট! শুনানি শেষে দুটি আবেদনই নাকচ করে গাজীপুরের টঙ্গী কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার ৬ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ও শিশু আদালতের বিচারক আল-মামুন।

এদিকে এ সময়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সেই চালক তাসকিনের বিরুদ্ধে আদালতে রিমাণ্ডের আবেদন জানায় পুলিশ। তবে শিশু বিবেচনা করে রিমাণ্ডের আবেদন খারিজ করেন আদালত। তবে শুনানী শেষে তাসকিনকে একদিনের জিজ্ঞাসাবাদে নেয়ার আদেশ দেন আদালত।

About

Check Also

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর হলেন তাজুল ইসলাম

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম। শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *