সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের সুবাদে মালয়েশিয়ান তরুণী জুলিজা বিনতে কামিসের সঙ্গে পরিচয় হয় টাঙ্গাইলের মনিরুলের। এরপর ধীরে ধীরে তাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। আর এরই জের ধরে ২০১৭ সালে বাংলাদেশে ছুটে এসে মনিরুলের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন জুলিজা। কিন্তু মাত্র ১৫ দিন সংসার করেই আবারও মালয়েশিয়ায় ফিরে যায় ঐ তরুণী।
ওই ১৫ দিনে মনিরুলের পরিবার তার পেছনে খরচ করেছে ৮০ হাজার টাকা। মনিরুলের বাবা ইমান আলী দাবি করেন, ঋণ এখনো বকেয়া রয়েছে এবং এই বিয়ের মাধ্যমে তার ছেলের জীবন নষ্ট হয়ে গেছে। মনিরুল ইসলামের (২৬) বাড়ি সখীপুরের কাদেরনগর মুজিব কলেজ মোড় এলাকায়।
সম্প্রতি মনিরুলের গ্রামের বাড়িতে গেলে স্থানীয়রা জানায়, ফেসবুকে মালয়েশিয়ান তরুণী জুলিজার সঙ্গে মনিরুলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে ২০১৭ আগস্টে ওই তরুণী মনিরুলের কাছে সখীপুরে চলে আসেন। এরপর সামাজিকভাবে কোর্ট ম্যারেজ করা হয়। হঠাৎ মালয়েশিয়া থেকে খবর আসে ওই তরুণীর স্বামী ও চার সন্তান রয়েছে। এরপর ওই তরুণীকে নিয়ে আত্মগোপনে চলে যান ওই যুবক। পরে ওই তরুণী নিজ দেশে ফিরে আসেন।
মনিরুল ইসলাম বলেন, “জুলিজার সঙ্গে আমার পরিচয় ফেসবুকে। এক পর্যায়ে আমি প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। প্রায় ছয় মাস প্রেম করার পর জুলিজা আমার কাছে চলে আসে। পরে কোর্ট ম্যারেজসহ সামাজিকভাবে বিয়ে পড়ানো হয়। তার ভিসার মেয়াদ ছিল ১৭ দিন। আমরা ১৫ দিন একসাথে ছিলাম।’
জুলিজা ফিরে যাওয়ার পর থেকে মনিরুল হতাশ। তিনি বলেন, ‘এখন স্ত্রী হিসেবে নয়, একজন ভালো বন্ধু হিসেবে তার সঙ্গে আমার যোগাযোগ আছে। শুনেছি তার স্বামী ও চার সন্তান রয়েছে। কিন্তু আমি জানি সে তার স্বামীর কাছ থেকে আলাদা হয়ে গেছে।
এদিকে মনিরুলের বাবা ইমান আলী দাবি করেছেন, মালয়েশিয়ার মেয়েকে বিয়ে করে তার ছেলের জীবন নষ্ট হয়েছে। তিনি বলেন, ‘মেয়েটি হয়তো কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে বাংলাদেশে আসে। আমার ছেলের জীবন নষ্ট করে মেয়েটা চলে গেছে। এখন ছেলের বিয়েও দিতে পারছি না। আমার ছেলে তখন কলেজে পড়ত। এখন লেখাপড়া না করে রাজমিস্ত্রির কাজ করছেন। ছেলের ভবিষ্যৎ নষ্ট।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা গরীব মানুষ। ১৭ দিনে ওই মেয়েটির পেছনে প্রায় ৮০ হাজার টাকা খরচ করেছি। এখনো সেই ঋণ বহন করছি। তাদের নিজেদের থাকার জায়গাও নেই। অন্যের বাসায় বাসা ভাড়া করি। আমাদের জীবন কষ্টের। মেয়েটি আমাদের ইজ্জত হারিয়ে অনেক ক্ষতি করে চলে গেছে।
স্ত্রীকে ফিরে না পেয়ে রীতিমতো মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন মনিরুল। এখনো তার অপেক্ষায় পথ চেয়ে বেসে থাকেন তিনি। জানা গেছে, জুলিজার ফিরে আসার অপেক্ষায় এখনো বিয়ে করেননি তিনি।