ছেলে-মেয়ের জন্য বাবা-মা তাদের সারা জীবন বিসর্জন দিতে পারে এ বিষয়টি সবার কাছে দৃষ্টান্ত। সম্প্রতি এক বাবা তার ছেলের জন্য জীবন বিসর্জন দিয়েছেন। যে ঘটনা সংবাদ মাধ্যমে উঠে এসেছে। সংবাদ সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরায় জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে স্বজনদের হামলায় আনছার আলী (৬০) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। রোববার (১২ জুন) সকালে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি নিথর হয়। এ ঘটনায় জুয়েল হোসেন নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত আনছার আলী সাতক্ষীরা সদরের লাবসা ইউনিয়নের কাইখালী গ্রামের প্রয়াত এচেম আলী সরদারের ছেলে। গ্রেফতারকৃত জুয়েল হোসেন স্থানীয় ইউপি সদস্য হোসেন আলীর ছেলে।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, লাবসা ইউনিয়নের কাইখালী গ্রামের মৃত এচেম আলী সরদারের প্রথম স্ত্রীর ছেলে আনছার আলীর সঙ্গে দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে হোসেন আলীর বিরোধ চলে আসছিল। হোসেন আলী স্থানীয় ইউপি সদস্য।
গত ৯ জুন রাত ৮টার দিকে আনছার আলীর ছেলে আব্দুর রাজ্জাক বাইপাসের পাশে মাছ ধরার মাঠে অবস্থান করছিলেন। এ সময় মেম্বার হোসেন আলীর নেতৃত্বে তার ছেলে রুবেল হোসেন, জুয়েল হোসেন ও জুলু হোসেন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে রাজ্জাকের ওপর হা’মলা চালায়। রাজ্জাক অজ্ঞান হয়ে গেলে তার বাবা আনসারী আলী তার ছেলেকে বাঁচাতে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। এ সময় রুবেল হোসেন তার বুকে লাথি মারেন। আনছার আলী মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এসময় হোসেন আলী ও তার অপর দুই ছেলে জুয়েল ও আনসার আলীকে মা’রধ’র করা হয়। পরে তারা তাকে প্রয়াত ভেবে সাবই ছেড়ে চলে যায়।
পরে স্থানীয়রা আব্দুর রাজ্জাক ও তার বাবা আনছার আলীকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। গুরুতর আহত আনছার আলীকে খুলনার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার সকালে আনছার আলী প্রয়াত হয়। আব্দুর রাজ্জাক বাদী হয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলা করেছেন। ঘটনার পর থেকে ইউপি সদস্য হোসেন আলী, তার ছেলে রুবেল হোসেন ও জুলু হোসেন পলাতক রয়েছে।
প্রয়াতের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক জানান, মেম্বার হোসেনের নেতৃত্বে তার তিন ছেলে আমাকে প্রায় মেরে ফেলে। তাদের হাত থেকে আমাকে বাঁচাতে গিয়ে তাদের হামলায় আমার বাবা মারা যান। আমার বাবার খু/ নিদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। সাতক্ষীরা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বিশ্বজিৎ অধিকারী বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আহতদের মধ্যে আনছার আলী থাকায় মামলাটি হ/ ত্যা মামলা হিসেবে ধরা হবে। আসামিদের মধ্যে জুয়েল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে ঘটায় মালার তেমন কোন জাটিলতা নেই। প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। ঘটনা স্থলে অনেকলোকের উপস্থিতি ছিলও বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী রাজ্জাক।