জুলাই বিপ্লবের পেছনে কোনো একক নেতৃত্ব ছিল না। তাই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক এবং অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এই আন্দোলনে ‘মাস্টারমাইন্ড’ শব্দের সঙ্গে একমত নন। তবে আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে অনেকেই বুদ্ধি ও পরামর্শ দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ঠিকানা টিভির প্রধান সম্পাদক খালেদ মুহিউদ্দীনের মুখোমুখি হয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও অন্তর্বর্তী সরকারসহ বিভিন্ন প্রসঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান তিনি।
সম্প্রতি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের ‘ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ লিডারস স্টেজ’ অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তিনি তার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলমকে বাংলাদেশে সাম্প্রতিক আন্দোলন ও সরকার পতনের ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন।
গত মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে অনুষ্ঠান মঞ্চে ড. ইউনূস তার দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলার সময় সফরসঙ্গীদের মধ্যে মাহফুজ আলমসহ তিনজনের পরিচয় করিয়ে দেন।
এরপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয় নানা আলোচনা-সমালোচনা। বৃহস্পতিবার ঠিকানা টিভির প্রধান সম্পাদক খালেদ মুহিউদ্দিনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মোঃ নাহিদ ইসলাম বলেন, যে আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে, তাতে কোনো একক নেতৃত্ব ছিল না। সাধারণ মানুষ আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। পুরো আন্দোলনকে কয়েকজন মিলে পরিচালনা করতে হয়েছে। এ জন্য অনেকেরই বুদ্ধি-পরামর্শ নিতে হয়েছে। তবে আমরা একে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন হিসেবেই দেখি।
অন্তর্বর্তী সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারাও ছিলেন। এ আন্দোলনে একক কোনো নেতৃত্ব ছিল না। সাধারণ মানুষ আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। এ ক্ষেত্রে যার (মাহফুজ আলম) কথা বলা হয়েছে তিনি বিশেষভাবে আমাদের পরামর্শ দিয়েছেন।
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ বলেন, “তিনি (মাহফুজ আলম) কিংবা আমরা মাস্টারমাইন্ড শব্দের সঙ্গে একমত নই। তিনি (ড. ইউনূস) শব্দটাকে হয়তো ভালোবেসে ব্যবহার করেছেন।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ছাত্রদের নেতৃত্বে ১৯৬৯ ও ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থান হলেও রাজনৈতিক দলগুলো আন্দোলনের অগ্রভাগে ছিল।তারা আন্দোলনের পর ক্ষমতা নেয়। তবে এবারের আন্দোলনে সামনে কোনো রাজনৈতিক দল ছিল না। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সেই দায়িত্ব আমাদের (ছাত্রদের) কাঁধে এসে পড়েছে। আমরা এর জন্য প্রস্তুত ছিলাম না।