কুশাগরা দশম শ্রেণীর ছাত্র, যে ভারতের উত্তর প্রদেশের কানপুর জেলার একজন ব্যবসায়ীর ছেলে। কয়েকদিন আগে সে নিখোঁজ হয়। বাড়িতে মুক্তিপণ চেয়ে চিঠি আসে। তাতে লেখা ছিল, শিশুটিকে সঠিকভাবে ফেরত পেতে হলে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। আমি চাই না তোমাদের উৎসব নষ্ট হোক। তুমি আমার হাতে টাকা দাও আর এক ঘণ্টা পর ছেলে তোমার কাছে থাকবে।
শেষ পর্যন্ত অবশ্য কুশাগরাকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে ঘটনার তদন্তে নেমে পুরো ঘটনাটিকেই সম্পূর্ণ ভিন্ন বলে দেখেছে পুলিশ। প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপা দিতেই মুক্তিপণের চিঠিটি লেখা হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
নিখোঁজ হওয়ার দিন কুশাগরা টিউশন পড়তে গিয়েছিল। পুলিশ তদন্ত শুরু করে এবং প্রথমে টিউশন শিক্ষিকা রচিতা ও তার প্রেমিক প্রভাতকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় ডেকে নেয়। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ সন্দেহ প্রকাশ করে এবং প্রভাতের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। জিজ্ঞাসাবাদের মুখে ভেঙে পড়ে প্রভাত।
এরপর রাতভর অভিযান চালিয়ে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ। ফুটেজ দেখে তদন্তকারীরা টিউশনি শিক্ষিকা রচিতার বাড়িতে পৌঁছায়। সেখানেই স্টোর রুমে কুশাগরের মৃতদেহ পাওয়া যায়।
ভারতীয় গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে কুশাগরা নিজ ইচ্ছায় ওই শিক্ষকের বাড়িতে গিয়েছিলেন। সিসিটিভিতে তাকে বাড়ির ভেতরে যেতে দেখা গেছে। এরপর রচিতা ও তার প্রেমিক প্রভাত দুজনকেই স্টোর রুমে যেতে দেখা যায়। প্রায় আধাঘণ্টা পর দুজনেই ঘর থেকে বেরিয়ে এলেও কুশাগরা ভেতরেই থেকে যায়।
পুলিশ জানায়, তখনই তাকে হ”ত্যা করা হয়। তখন সিসিটিভিতে প্রভাতকে কুশাগরের স্কুটার কেড়ে নিতে দেখা যায়। অচেনা জায়গায় পার্ক করে রাখে। এরপর অভিযুক্ত প্রভাত ও তার বন্ধু আরিয়ান মুক্তিপণের চিঠি নিয়ে স্কুটারে বাড়ি যায়, যার জন্য স্কুটারের নম্বরও বদলানো হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, মুক্তিপণ হিসেবে উদ্ধার করা চিঠিটি প্রভাতের লেখা। তার বন্ধু আরিয়ানকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের সন্দেহ, কুশাগরের সাথে তার শিক্ষিকার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। এ সন্দেহ থেকেই প্রভাতকে হ”ত্যা করা হয়।