নাটোরে জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলার দয়রামপুর নামক এলাকায় ৬৫ বছর বয়সী একজন অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক তার এক ছাত্রীর সাথে আপত্তিকর কাজ করে। তাদের এই অপকর্মের সময় মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে এক কলেজ ছাত্র। ভিডিও ধারণ করায় ওই কলেজছাত্র মহা বিপাকে পড়েছেন। অভিযুক্ত শিক্ষক বেশ কয়েকজন সন্ত্রা”সী ভাড়া করে ওই যুবককে হু”মকি-ধামকি দিচ্ছে। সেইসাথে তার কাছ থেকে মোবাইলটি ছি”নিয়ে আনার নির্দেশ দেন তাদের। এ ঘটনায় ওই কলেজ ছাত্র এবং ঐ স্কুলছাত্রী এলাকা ছেড়ে বাইরে গেলেও শেষ পর্যন্ত তারা রেহাই পাননি।
অভিযুক্ত শাজাহান হোসেন (৬৫) জেলার বাগাতিপাড়ার দয়ারামপুরের একটি স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। তার গ্রামের বাড়ি বরিশালে। তিনি দয়ারামপুর মিস্ত্রিপাড়ায় কামাল হোসেনের ভাড়া বাসায় থেকে এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে ছাত্রদের পড়াতেন।
জানা গেছে, শাজাহান হোসেন ধুপইল উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বাড়িতে পড়াতেন। একপর্যায়ে শাজাহানের চোখ পড়ে ওই স্কুলছাত্রীর ওপর। পরে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ওই ছাত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব দিতেন। একদিন শিক্ষক শাজাহান ওই ছাত্রীকে প্রাইভেট পড়তে তার বাড়িতে যেতে বলেন।
ঘটনার দিন সকাল ৭টায় ওই ছাত্রী বাড়িতে এলে শাজাহান তাকে একটি ব্যক্তিগত কক্ষে নিয়ে যায়। এরপর বিভিন্ন প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে ওই ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। এরপর বিষয়টি বুঝতে পেরে বাড়ির মালিকের ছেলে (কলেজ ছাত্র) অনৈতিক কার্যকলাপের ভিডিও ধারণ করে। শিক্ষক শাজাহান বিষয়টি জানতে পেরে ওই কলেজ ছাত্রের হাত-পায়ে ধরে ভিডিওটি মুছে দেওয়ার অনুরোধ করেন। পরে ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়লে কলেজ ছাত্র ও স্কুলছাত্রী এলাকা ছেড়ে বড়াইগ্রামের কুমরুল গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেয়।
এদিকে শিক্ষক শাজাহান স্থানীয় যুবক সবুজ, হালিম ও ডালিমকে ভিডিওটি উদ্ধার ও মুছে ফেলার দায়িত্ব দেন। এরপর ওই তিন যুবকসহ ৯ যুবক চারটি মোটরসাইকেলে বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে শাকিব ও ওই স্কুলছাত্রীকে খুঁজে পায়। তবে কুমরুল গ্রামের লোকজনের সহযোগিতায় ভিডিওটি উদ্ধার করটে পারেনি।
বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় বিভিন্ন ওয়ার্ডের সদস্য, সাংবাদিক ও থানার সদস্যরা ওই গ্রামে জড়ো হন। ওই রাতেই মেয়েটির মাকে ডেকে মেয়েটিকে তার কাছে হস্তান্তর করা হয়। অন্যদিকে ভিডিও ধারণ করা ওই কলেজছাত্রী তার বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়দের সহায়তায় বাগাতিপাড়া থানায় হাজির হয়ে এ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
মোঃ কামরুজ্জামান যিনি বড়াইগ্রাম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তিনি ঘটনার বিষয়ে বলেন, ঘটনার বিষয়ে বাগাতিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে যিনি রয়েছেন তাকে অবগত করা হয়েছে। তিনি এ ঘটনার বিষয়ে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নেবেন। এ ঘটনার বিষয়ে যাতে আইনগতভাবে সমস্যার সমাধান হয় সেদিকেও নজর দেয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে প্রধান শিক্ষক যদি প্রকৃত এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকেন সেটা কাম্য নয়।