রাজশাহীতে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে ঘুষি মেরে মুখ ফুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ করা হলেও তিনি অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। পরে ভুক্তভোগী ছাত্রীর অভিভাবক রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন।
অভিযোগে বলা হয়, নেহা রানী (১৪) জেলার লক্ষ্মীপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। গত ২৬ জুলাই ক্লাসরুমে বেঞ্চে বসা নিয়ে তার আরেক সহপাঠীর সঙ্গে ঝগড়া হয়। বিষয়টি শিক্ষক নাজমা খাতুনকে জানায় সহপাঠী।
এতে ছাত্রী নেহা রানীর ওপর ক্ষিপ্ত হন শিক্ষিকা নাজমা খাতুন। এক পর্যায়ে তিনি রনির মুখে ঘুষি মারেন। এতে ওই ছাত্র চোখের নিচে আহত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে নেহার বাবা মাসুম লাল খবর পেয়ে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে স্কুল থেকে বাড়ি নিয়ে যান।
পরদিন আহত রনির মা শিক্ষিকা নাজমা খাতুনের সঙ্গে দেখা করেন। এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন অভিযুক্ত শিক্ষিকা নাজমা খাতুন। এ ছাড়া তিনি তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে নিম্ন বর্ণের মানুষ বলে সমালোচনা করেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ জানানো হলেও অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পরে মেয়েটির বাবা মাসুম লাল রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন। এ ছাড়া তিনি রাজপাড়া থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আইরিন জাফর জানান, অভিভাবকের লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে শিক্ষিকা নাজমা খাতুন বলেন, দুই বান্ধবীর ঝগড়ার সময় এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা।
রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম জানান, এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।
প্রসঙ্গত, শিক্ষকদের কর্মকান্ডই তাদের প্রতি শিক্ষার্থীদের সম্মান ও শ্রদ্ধা করার প্রবণতাটি অনেকাংশে কমিয়ে দেয়। সবাই এক না। তাই শিক্ষার্থীদের সবাইকে একই মানদন্ডে বিচার করলে চলবে না। কোনো অপরাধ করলে তাকে বুঝাতে হবে কিন্তু তাই বলে এভাবে ঘৃণ্য আচরণ করা ছাত্রীর সাথে সত্যিই খুব লজ্জার।