মানসিক অবস্থার সুযোগ নিয়ে এক ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি ) গণিত বিভাগের এক শিক্ষককে বিভাগীয় সব কার্যক্রম থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
সোমবার বিকেলে গণিত বিভাগের একাডেমিক সভায় অভিযুক্ত শিক্ষককে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় সর্বসম্মতিক্রমে। পাশাপাশি বিভাগের পক্ষ থেকে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর লিখিত আবেদন করা হয়েছে।
অভিযুক্ত শিক্ষক হলেন এবিএস মানিক মুন্সি, বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং ভিকটিম একই বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী।
জানা যায়, অভিযুক্ত শিক্ষক মানসিক অবস্থার সুযোগ নিয়ে নিজ বিভাগের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। নিজ স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে বলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে জানান ও বিয়ে করার আশ্বাস দেন
এরপর গত বুধবার বিভাগের আরেক শিক্ষকের নজরে আসে ওই ছাত্রীকে দীর্ঘদিন ধরে ওই শিক্ষকের নিজ কক্ষে আটকে রেখে ঘটনাটি জানাজানি হয়। এ সময় ওই ছাত্রীকে বিয়ে করতেও আপত্তি জানান ওই শিক্ষক।
পরে সংক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিভাগীয় চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গণিতের শিক্ষক বলেন, “সে কীভাবে ওই ছাত্রীর সঙ্গে এমন জঘন্য কাজ করল, তা আমাদের সবাইকে হতবাক করেছে।” ঘটনাটি হাতেনাতে ধরা না পড়লে হয়তো আড়াল হয়ে যেত। তিনি অস্বাভাবিক আচরণের কথা বলে ওই শিক্ষার্থীকে মধু এবং পানি পড়া পর্যন্ত খাইয়েছেন। তিনি নিজেই আমাদের বলেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি ভিকটিম ছাত্রী প্রথমে কাউন্সেলিং ও বিভিন্ন পরামর্শের জন্য শিক্ষকের কাছে গিয়েছিল। এ সুযোগে ওই শিক্ষক ছাত্রীর সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে এবং একপর্যায়ে ওই ছাত্রীকে বিয়ে করার কথা বলে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক মানিক মুন্সী বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। আমি আমার বিভাগের চেয়ারম্যানকে বলব।
গণিত বিভাগের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কল ও এসএমএস করে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
অভিযোগের বিষয়ে গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোঃ শরিফুল আলম বলেন, আমাদের বিভাগের এক শিক্ষার্থী শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি আমরা বিভাগ ও শিক্ষকের একাডেমিক সভায় তুলে ধরেছি। প্রাথমিকভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে বিভাগের সকল একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত ও অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা বিভাগের পক্ষ থেকে উপাচার্যের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছি।