বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অন্যতম একটি শাখা ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’। দলের উন্নয়নের পেছনে তাদের অবদানও কোনো অংশে কম নয়, তবে মাঝে মধ্যে বিভিন্ন নেতাকর্মীদের অনৈতিক কাণ্ডের জেরে নানা বিপত্তিতে পড়তে হয় পুরো ছাত্রলীগ সংগঠনটির সকল নেতাকর্মীদের। আর এরই ধারাবাহিকতায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ছাত্রলীগ নেতা তানজিন আল আলামিন।
জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের ছাত্রীদের ওয়াশরুমে ঢুকে অশালীন অঙ্গভঙ্গি ও ছাত্রীকে শ্লী/ল/তাহানির অভিযোগ উঠেছে ঐ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার (১৭ আগস্ট) রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা তানজিন আল আলামিন ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র এবং ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক। এছাড়া তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল ছাত্র সংসদের সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক ছিলেন। ঘটনার সময় তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিলেন বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ঘটনার বিচার চেয়ে বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, তানজিন আল আলামিন মদ্যপ অবস্থায় নারীদের ওয়াশরুমে প্রবেশ করে, পরে টয়লেটের দরজা খোলা রেখে অ/র্ধন/গ্ন হয়ে মূ/ত্রত্যাগ করতে থাকেন এবং আমার দিকে অ/শ্লী/ল অ/ঙ্গ/ভঙ্গি করে।। আমি প্রচণ্ড ভীত ও উদ্বিগ্ন হওয়ার পরও ওই ব্যক্তি বের হয়ে চলে যাওয়ার সময় তাকে জিজ্ঞেস করতে গেলে তিনি এলোমেলো কথা তাচ্ছিল্যের সুরে বলতে থাকেন। তবে নিজের ভুল স্বীকার করেননি তিনি। তিনি এবং তার সাথে থাকা আরও কয়েকজন আমাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে যান। এমতাবস্থায় তার হয়রানি ও হুমকির কারণে আমি নিরাপত্তাহীনতা ও মানসিক বিপর্যয়ে ভুগছি। ওই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে দোষী ব্যক্তি ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, আমি ওয়াশরুমের ভেতরে ছিলাম। তারপর শুনলাম একটা ছেলের গলা। আমি দরজা খুলতে ভয় পাচ্ছিলাম। আমি তারপরেও দরজা খুললাম এবং বের হয়ে হাত ধোয়ার সময় এক ছেলেকে দেখতে পাই। সে আমার দিকে তাকিয়ে খুব বাজেভাবে হাসতে থাকে। তখন ভাবলাম ভুল করে ঢুকেছে। সে বেরিয়ে আসার সাথে সাথে আমি জিজ্ঞেস করলাম তুমি কি ভুল করে ঢুকেছ? আমাকে উপেক্ষা করে খারাপভাবে হাসছে। আমি ফিরে গিয়ে তার পরিচয় জানতে চাইলে সে আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে। এ সময় তিনি মদ্যপ ছিলেন। সহকারী প্রক্টর স্যারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। অভিযুক্তরা এখনও আমাকে বিভিন্নভাবে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে তানজিন আল আলামিন বলেন, আমি ভুল করে মেয়েদের ওয়াশরুমে ঢুকেছিলাম। বোঝার পর ছেলেদের ওয়াশরুমে গেলাম। মেয়েটিকে অনেকবার সরি বলেছি।
তিনি বলেন, তিনি মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন কিনা তা নিয়ে তারা অভিযোগ করেছেন। এই ক্ষেত্রে না হয়. আমি একটি ভুল করেছিলাম
এদিকে এ ব্যাপারটি ঢাবির প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানীর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ভুক্তভোগী ঐ ছাত্রী এরই মধ্যে তাকে ফোনে পুরো বিষয়টি জানিয়েছেন। সেই আলোকে বিষয়টি খুতিয়ে দেখে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।