বাংলাদেশের সব থেকে বড় ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। তবে এই ছাত্রলীগ নিয়ে এবার বেশ বিরক্তিতে আছে খোদ আওয়ামীলীগ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নিজেও। বিশেষ করে ছাত্রলীগের নানা ধরনের সব বিতর্কিত কর্মকান্ডের কারনে তিনি ছাত্রলীগ নিয়ে বেশ নাখোশ। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমি ছাত্রলীগের মেয়েদের কাছে বেশি শুনি, অমুক সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে সম্পর্ক রাখি। আমি এটি বেশিরভাগ ইডেন গার্লস কলেজের ছাত্রদের কাছ থেকে শুনেছি। এটি অত্যন্ত সাহসীভাবে উচ্চারিত হয়। আমি অমুক ভাইকে বজায় রাখি।’
আজ আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় কাউন্সিল উপলক্ষে গঠিত কার্যালয় উপ-কমিটির প্রস্তুতি সভায় ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ছাত্রলীগ নেতা কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা আওয়ামী লীগকে টিকিয়ে রাখবেন, শেখ হাসিনা। এবং কে বজায় রাখা? আমাদের নেতা বঙ্গবন্ধু। তার আদর্শ। আমরা শেখ হাসিনার কর্মী। এর বাইরে কী রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। এটা কি বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ নাকি? আশ্চর্যজনক জিনিস। এসব বদ অভ্যাসও স্লোগান দেয়। এই জিনিসগুলো সংগঠিত করতে হবে। অফিসেরও দায়িত্ব আছে।
ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা নাম উল্লেখ করে সালাম দেন, যা অতীতে দেখা যায়নি। আমি এই জন্য নীচের দিকে হাঁটা. ডানদিকে কে? বাম কে? আমি এটা আর দেখতে না. নামে অভিবাদন। এই অভ্যাস কি? হলের নাম, অমুক ভাইয়ের নাম।
ধানমন্ডিতে আসা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সমালোচনা করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, “ছাত্রলীগ একটি ছাত্র সংগঠন। তাদের সকাল নেই, দুপুর নেই, বিকেল নেই এখানে এসে লাইন দিয়ে দাঁড়াতে হবে। আসলে রুমে ঢোকার জন্য আমাকে লড়াই করতে হবে। এটা একটা লড়াই। এই বয়সে এটা সম্ভব নয়। তবুও কষ্ট করে আসি।
বরগুনার সম্মেলন শেষে ঢাকায় আসার পর আবারও আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আসার কথা উল্লেখ করেন কাদের। তিনি বলেন, “তবুও বয়সটা বোঝা উচিত। একদিন নেত্রী খেয়াল করলেন। আমি বকবক করতে করতে ফিরে এসেছি। তিনি বললেন বাড়ি যাও। আর না, প্রতিদিনই আসি।’
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে ব্যানার-ফেস্টুন ঝুলিয়ে তিনি বলেন, ‘কোথা থেকে কাউকে চিনি না, জানি না, রাস্তায় নক করে, সেও এসে নেতা হয়। নিজের ছবি, ব্যানার, পোস্টার, বিলবোর্ড লাগানো। এরপর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে আর আকাশ দেখা যাবে না। সম্মেলন যত ঘনিয়ে আসছে, আকাশ অদৃশ্য মনে হচ্ছে। এভাবেই শুরু হয়েছে। এটাকে একটু নিয়ন্ত্রণ করা দরকার জনাব বড়ুয়া (দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া)।
জাতীয় সম্মেলন তাৎপর্যপূর্ণ উল্লেখ করে ওবায়দুল ক্যাডার বলেন, এই সম্মেলন ডিসেম্বরের (২০২৩) শেষে বা জানুয়ারির (২০২৪) শুরুতে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিকে নিয়ে যাবে।
অফিসের কাজ অত্যন্ত স্পর্শকাতর উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের একটি কক্ষ বরাদ্দ আছে। এটি সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা উচিত। প্রত্যেকেরই দায়িত্ব আছে। আমরা কেউই আমাদের অবস্থানে চিরকাল থাকবে না। দলের জন্য শৃঙ্খলা তৈরি করা আমাদের দায়িত্ব। পাশেই বিশাল দর্শনার্থীর ঘর। তাদের সেখানে বসতে দিন। কারো প্রয়োজন হলে আমরা সেখানে গিয়ে দেখা করব। অথবা তার পাশেই প্রচার কক্ষ আছে, সেখানে বসে কথা বলব।
ওবায়দুল কাদের বলেন, তাকে দেখেই কেন্দ্রীয় নেতাদের কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান দর্শনার্থীরা। তিনি বললেন, “এখন আমি না থাকলে ভরে গেছে। এটা ঠিক নয়। আমাকে দেখলে তোকে পালাতে হবে, পালাতে হবে- এই অবস্থা চিরকাল থাকবে না। কোনো দিন, যদি আমি না থাকি। এই অবস্থানে, শুভেচ্ছা জানাতে কষ্ট হবে।যে আবার তাকাবে, অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে নেবে।তাই দেখছি।জলিল ভাইয়ের ভালো দিনগুলোও দেখেছি, খারাপ দিনগুলোও দেখেছি।
প্রসঙ্গত, এ দিকে সামনের সম্মেলন নিয়ে ইতিমধ্যেই ওবায়দুল কদর দিয়েছেন বেশ কিছু নির্দেশনা। ওবায়দুল কাদের বলেন, সম্মেলনে ৮ হাজার কাউন্সিলর ও ১৬ হাজার প্রতিনিধি থাকবেন। তিনি বলেন, এর বেশি হতে পারে না। তবে আমন্ত্রিত অতিথিদের আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।