ফেনীর সোনাগাজীতে ছাত্রলীগকে প্রশ্রয় দেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে উপজেলা ছাত্রদলের প্রতিদ্বন্দ্বী দুই পক্ষ। বুধবার (৩১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় পৌরসভার জিরো পয়েন্ট থেকে তাকিয়া রোড পর্যন্ত প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষে আহত হয়েছে অন্তত ৩০ জন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উভয় পক্ষকে ধাওয়া দেয়।
জানা গেছে, সোমবার সোনাগাজী সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়, যেখানে মিরাজ ও রায়হান নামে ছাত্রদলের দুই কর্মী আহত হয়। এর জন্য কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব ওসমান গনি জিহাদ উপজেলা ছাত্রদল নেতা পিয়াসের অনুসারী ওমরকে দায়ী করেন। প্রতিবাদে মঙ্গলবার দুপুরে জিরো পয়েন্টে পৌর, কলেজ ও উপজেলা ছাত্রদলের উদ্যোগে একটি প্রতিবাদ সভা হয়। সভায় উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক খুরশিদ আলম ভুঞা, ওমরকে ছাত্রলীগের কর্মী বলে অভিহিত করেন এবং তাকে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ করেন। এতে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং তিনি ওমরকে ধরে এনে শাস্তির ঘোষণা দেন।
রাতে আহত রায়হান বাদী হয়ে উপজেলা ছাত্রদল নেতা পিয়াসসহ অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহসপতিবার সন্ধ্যায় মামলার প্রতিবাদে উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সোহাগ নুর এবং নেতা পিয়াসের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল জিরো পয়েন্ট থেকে তাকিয়া রোডের দিকে এগোতে থাকে। সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। লাঠিসোটা, দেশীয় অস্ত্র ও ইটপাটকেল নিয়ে উভয় পক্ষ একে অপরের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। পরে সেনা সদস্য ও পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি সোহাগ নুর অভিযোগ করে বলেন, ছাত্রলীগের সমর্থকদের নিয়ে আমাদের প্রতিবাদ মিছিলে বাধা দিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করে এবং পরে আমাদের ওপর হামলা চালায়, এতে আমাদের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
অপরদিকে, কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য সচিব ওসমান গনি জিহাদ বলেন, তারাও আমাদের কর্মীদের উপর দুই দিন আগে হামলা চালায় এবং আজ আবার মিছিল করে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এতে আমাদের অন্তত ১০ জন কর্মী আহত হয়েছেন।
ফেনীর পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান জানান, উভয় পক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সক্ষম হয়েছে এবং তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।