দেশের সবথেকে শক্তি হলো ছাত্র। আজ যত বিশিষ্টব্যাক্তি রয়েছে তারা ছাত্র জীবনে সংগ্রাম করেছে বলেই সমাজের প্রথম স্তরে আসতে পেরেছে। তাই একটি দেশের ভাগ্য নির্ধারণের জন্য ছাত্রদের ভূমিকা অপরিসীম। তাই ছাত্রদের বিশেষ কিছু পরামর্শ দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ব্যক্তিগত স্বার্থ-লোভের ঊর্ধ্বে উঠে ত্যাগ স্বীকার করলেই তারা প্রকৃত নেতা হতে পারবে। দাবি-দাওয়ার ঊর্ধ্বে উঠে ত্যাগ স্বীকার করলেই নিজেকে একজন যোগ্য নেতা হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। কিন্তু সম্পদের স্রোতে সম্পদের পেছনে ছুটলে সেই সম্পদে ভেসে যেতে হবে। এর নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা নেই, দেশ ও জনগণকে কিছু দিতে পারে না।
২১ আগস্ট বুধবার জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উচিত শিক্ষার পাশাপাশি মানবতার সেবা করা। ডিজিটাল বাংলাদেশ বানিয়েছি। আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ জনশক্তি চাই। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব আসবে এবং আমাদের বর্তমান প্রজন্ম বা প্রজন্মের পর প্রজন্ম তার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করবে।
তিনি বলেন, এখন তথ্যপ্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের যুগ। এর পাশাপাশি শিক্ষার মাধ্যমে উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। কারণ দেশ পরিচালনার জন্য প্রয়োজন শিক্ষা ও জ্ঞান। এছাড়াও, একজনকে ইতিহাস জানতে হবে এবং দূরদর্শী হতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের খুনিদের এদেশে শুধু পুরস্কৃত করা হয়নি, ৭ই মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে স্বাধীনতার পুরো ইতিহাস মুছে ফেলা হয়েছে এবং আবিষ্কৃত হয়েছে একটি মেজর। বাঁশি বাজিয়ে দেশ স্বাধীন হলো।আর তারা এ জন্য সংগ্রামের পথ ও ইতিহাস জানে না।তাই আমি বলব, ছাত্ররাজনীতি করতে হলে ইতিহাস জানতে হবে।’
তিনি বলেছিলেন, ইতিহাস না জানলে শেখা যায় না, ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে হয়। আমাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি পথ তৈরি করতে হবে। ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি না হলেও সময়ের সাথে সাথে তা হবে। আমরা এটা জানি কারণ আমরা সংগ্রাম করেছি।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান। এতে বক্তব্য রাখেন মহানগর উত্তরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম হোসেন ও সাইদুর রহমান হৃদয়, মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান ও জুবায়ের আহমেদ এবং ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সঞ্জীব চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্য।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের দুটি প্রকাশনা ‘মাতৃভূমি’ ও ‘জয় বাংলা’র মোড়ক উন্মোচন করেন। সভার শুরুতে সকলে দাঁড়িয়ে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের শহীদ এবং বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন জাতির জনক ও জাতির পিতা।
দেশকে উন্নয়নের শীর্ষে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকার অবিরাম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার পথে হঠাৎ বাঁধা সৃষ্টি করলো রাশিয়-ইউক্রেন ইস্যু। এরপর থেকে একেরপর এক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তবে সরকার এর হাল বের করার জন্য যথাযথ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।