যশোরের মণিরামপুরে শ্রেণিকক্ষে ঢুকে শিক্ষিকাকে মারধরের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমান মিজানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে পৌর যুবলীগ। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন ও সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। মিজানুর রহমান নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সন্তোষজনক জবাব দিতে না পারলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রোববার পৌর যুবলীগের সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম রবি স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
মিজানুর রহমান মণিরামপুর শহরের দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পৌর শাখার ৪নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৩ আগস্ট দুর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ছলিমা বেগমকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় গণমাধ্যমে আপনাদের সম্পৃক্ত সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যা যুবলীগের সংগঠন বিরোধী।
যুবলীগের একজন দায়িত্বশীল নেতা এটা করতে পারেন না।
এদিকে শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার দুপুরে মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার দুপুরে তাকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৃতীয় আদালতে হাজির করে পুলিশ। মিজানুর রহমান বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
রোববার তার জামিন শুনানির দিন ধার্য ছিল। বিচারক আদালত কক্ষে বসে না থাকায় আগামী মঙ্গলবার জামিন শুনানির তারিখ ধার্য করা হয়েছে। মণিরামপুর থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) তৌহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলা ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মিজানুর রহমানের ছেলে রাকিবুল ইসলাম দুর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। গত মঙ্গলবার দুষ্টুমির জন্য তাকে শায়েস্তা করেন স্কুল শিক্ষিকা ছলিমা আক্তার।
তারপর বাড়িতে গিয়ে কাঁদতে লাগল। এরপর তার বাবা যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমান স্কুলে এলে শিক্ষিকা ছালিমা আক্তারকে মারধর করেন। একপর্যায়ে শিক্ষককে চুল ধরে স্কুলের মাঠে টেনে নিয়ে যায় সে। তখন অন্য শিক্ষকরা এসে মিজানকে থামায়।
মারধরের শিকার ছলিমা আক্তার বলেন, রকিবুলের বাড়ি স্কুলের পাশে। সে বাড়িতে গিয়ে ঘটনার অভিযোগ করে। এরপর ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা স্কুলে ছুটে আসেন। এ সময় আমি একটি কক্ষে দায়িত্বরত ছিলাম। মিজান এসে ছাত্রদের সামনে আমাকে ঘুষি মারতে থাকে।পরে চুল ধরে টেনে মাঠে নিয়ে যায়। মিজানের হাত থেকে ছাড়া পেয়ে আমি মণিরামপুর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছি। পরে এসে থানায় মামলা দিয়েছি।’
দুর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাহেব আলী বলেন, “স্কুলের বেসিন (হাত-মুখ ধৌত করার কাজে ব্যবহৃত) ধরায় রাকিবুলকে ‘বাপ’ তুলে কথা বলেন শিক্ষিকা ছালিমা আক্তার। এরপর রাকিবুল বাড়ি গিয়ে বিষয়টি জানালে তার বাবা এসে শিক্ষিকাকে মারধর করেন। শিক্ষিকা ও মিজানুরের বাড়ি পাশাপাশি।”