বাংলাদেশে জুলাই মাসের অভ্যুত্থান পরবর্তী ছাত্রদের মধ্যে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাদের ঘোষিত ৩১ ডিসেম্বর শহীদ মিনারে “প্রোক্লেমেশন অব জুলাই” কর্মসূচি নিয়ে সরকারকে আলোচনা ও বোঝাপড়া সৃষ্টি করতে পরামর্শ দিয়েছে বিএনপি। সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) রাতের দিকে বাংলা গনমাধ্যমকে বিএনপির উচ্চপর্যায়ের একটি দায়িত্বশীল সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
রাত দেড়টার দিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদ সাংবাদিকদের জানান, “জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র” নিয়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র হয়েছে। তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই, ছাত্রদের এই দাবিগুলি দেশের স্বার্থে যুক্তিসঙ্গতভাবে উপস্থাপিত হোক।”
তবে ৩১ ডিসেম্বর দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা “প্রোক্লেমেশন অব জুলাই” কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন, যা নিয়ে সরকারের মধ্যে আলোচনার ঝড় উঠেছে। সোমবার রাত ৯টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। এই ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে জনগণের ঐক্য, ফ্যাসিবাদবিরোধী চেতনা ও রাষ্ট্র সংস্কারের আকাঙ্ক্ষাকে সুসংহত করার লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, “আজকের বৈঠকে আমরা আলোচনা করেছি, এবং তাদের ঘোষণার বিষয়ে দলীয় অবস্থান পরবর্তীতে প্রকাশ করা হবে।”
সূত্র জানায়, রবিবার বিএনপির পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টাকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতাদের বক্তব্য পর্যালোচনা করে তাদের সঙ্গে বোঝাপড়া সৃষ্টি করতে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “বদল চাওয়ার প্রক্রিয়া অবশ্যই যুক্তিসঙ্গত হতে হবে, এবং যৌক্তিকভাবে উপস্থাপন করতে হবে, নাহলে জনগণ সহমত হবে না।”
এদিকে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, “দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকার রয়েছে। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই, যেখানে জনগণের মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত থাকবে।”
সরকারের কাছে বিএনপির দাবি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে তাদের চিন্তা-ধারার সাথে সমঝোতা তৈরি করা হোক। এমনকি, ছাত্রদের কাছে সরকার যদি অত্যধিক চাপ দেয়, তবে তা জামায়াতের পক্ষে যেতে পারে, এমন আশঙ্কাও রয়েছে বিএনপির।
এই পরিস্থিতিতে, ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘোষণার প্রতি আলোচনা চলমান রয়েছে এবং মঙ্গলবার শহীদ মিনারে “মার্চ ফর ইউনিটি” কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে আন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল।