নরসিংদীতে ছাত্রদলের নেতা ছিলেন আশরাফুল হক। তিনি ছাত্রদলের সর্বশেষ যে কমিটি সেখানে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ছিলেন। নরসিংদী জেলার রায়পুর উপজেলাধীন বাঁশগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন তিনি। এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এই নেতা। তিনি এই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন। তাকে নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ পর্যায়ে রয়েছে নানা ধরনের বিরূপতা। তিনি ছিলেন একজন বিএনপি নেতা, কিভাবে তিনি আওয়ামী লীগে এসে পদ নিয়ে ল’/ড়’ছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আশরাফ ২০১২ সাল পর্যন্ত মেয়াদ থাকা বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ওই কমিটির পরে ছাত্রদলের আর কোনো কমিটি হয়নি। ২০১৮ সালের দিকে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন।
সম্প্রতি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও নরসিংদী-৫ আসনের সংসদ সদস্য রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু এবং উপজেলা আওয়ামী লীগ আশরাফকে নৌকার মনোনয়ন দিতে কেন্দ্রে সুপারিশ করে। তৃণমূল থেকে পাওয়া সেই সুপারিশের ওপর ভিত্তি করেই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ড থেকে গত রবিবার আশরাফকে নৌকা প্রতীক দেওয়া হয়।
আশরাফের বাবা প্রয়াত সিরাজুল হকও ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ছিলেন। তাঁর শ্বশুর মকবুল হোসেন চরমধুয়া ইউনিয়ন বিএনপির বর্তমান সহসভাপতি। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে বাবা ও ছেলের কর্মীদের হাতে বাঁশগাড়ি ইউনিয়নসহ উপজেলার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বেশ কয়েকজন নি’/র্যা’ত/’নের শি’/কা’র হয়েছিলেন। আর তাই ছাত্রদল নেতা আশরাফকে নৌকা প্রতীক দেওয়ায় তৃণমূল ক্ষো’/ভ প্রকাশ করেছে।
আশরাফের নাম কেন্দ্রে পাঠানোর বিষয়টি জানতে পেরে গত ৫ অক্টোবর লিখিতভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল মিয়া। অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগ আর নৌকা করে জীবন পার করলাম। বিএনপির আমলে হা’/ম’লা মা’/ম’/লার শি’/কা’র হলাম। কিন্তু আমরা নৌকা প্রতীক পেলাম না, পেলেন ছাত্রদলের সাবেক নেতা। কেন্দ্রে লিখিতভাবে জানানোর পরও ফল হয় নাই।’
রায়পুরা উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইমান উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘কেন্দ্রে তালিকা পাঠানোর সময় আশরাফুল হকের নামের পাশে অনুপ্রবেশকারী লিখেই স্বাক্ষর দিয়েছিলাম। গত উপনির্বাচনে এমপি রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডে একক প্রার্থী হিসেবে আশরাফুলের নাম পাঠিয়েছিলেন। ওই সময় আমি এ (ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক) পদে ছিলাম না। এবারও এমপি চাইছে, তাই তাঁর নাম লিস্টে ১ নম্বরে দিয়ে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডে পাঠানো হয়েছে। তার পর মনোনয়ন বোর্ড সিদ্ধান্ত দিয়েছে। এখন দল চাইলে প্রতীক বহালও রাখতে পারে, আবার বাদও দিতে পারে।’
আশরাফুল হক মনোনয়ন পাওয়ার পর সেখানকার আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন, আশরাফুলের বাবা একসময় বাঁশগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন, সেইসাথে তিনি উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি হিসেবে ছিলেন। বাশাগাড়িতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের অনেক লোককে তিনি মা’রধ’/র করেছেন এবং বেশ কয়েকজনকে খু’/’ন করার অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে আশরাফুল হকের বক্তব্য জানার জন্য ফোন দেয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি। তাকে এসএমএস দিলেও কোনো ধরনের উত্তর জানাননি। দলীয় প্রার্থী হিসেবে আশরাফের নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে জানার জন্য নরসিংদী নরসিংদী-৫ এমপি রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু কে মোবাইল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। এরপর তাকে এসএমএস করা হয় কিন্তু তিনি কোনো উত্তর দেননি ।