ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় বেড়ে ওঠা রকিবুল ইসলাম রাকিবের হাতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতির দায়িত্ব। গত শুক্রবার দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নির্বাচনের পর সব নেতা-কর্মীদের নিয়ে বিএনপির রাজনৈতিক মাঠ শক্তিশালী করতে বিএনপি ছাত্রদলের আংশিক কমিটি ঘোষণা করেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, রাকিব ১৯৮৮ সালে কাশিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের কাশিমপুর গ্রামের বাসিন্দা ক্বারি ছাইর উদ্দিন ও মোছা. ফিরোজা বেগম দম্পতির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। ৬ ভাই ও ৪ বোনের মধ্যে তিনি চতুর্থ। গ্রামের বাড়ি কাশিমপুর হলেও রাকিবের বাবা-মা ও বড় ভাই ময়মনসিংহ শহরের পন্ডিতপাড়ায় থাকেন।
বাড়ির কাছের কাশিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক বাধা অতিক্রম করে রাকিব। পরে তিনি উপজেলার নবারুণ বিদ্যানিকেতন স্কুল থেকে ২০০৩ সালে বিজ্ঞান বিভাগে মাধ্যমিক (এসএসসি) এবং শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজ থেকে ২০০৫ সালে উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পাস করেন। এরপর ২০০৬-০৭ সেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন।
গ্রামীণ পরিবেশে বেড়ে ওঠা রাকিব শৈশব থেকেই নম্র ও বুদ্ধিমান ছিলেন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার পর থেকে তিনি বারবার ক্লাস ক্যাপ্টেন ছিলেন। নেতৃত্বদানের গুণাবলীর হাতেখড়ি তখন থেকেই হয় বলে জানালেন রাকিবের শৈশবের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মো. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ছোট থেকেই সে (রাকিব) বারবার ক্লাস ক্যাপটেন নির্বাচিত হতো এবং খুব ভালোভাবেই তা পরিচালনা করত। তার কাঁধে একটি বড় দলের সভাপতির দ্বায়িত্বভার এসেছে, শুনেও ভালো লাগছে। রাকিব দেশ ও দশের জন্য অবদান রাখবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা থাকবে।
রাকিব রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম না নিলেও নিজের মেধা ও পরিশ্রমে রাকিব এতদূর এসেছে বলে মনে করেন এলাকাবাসী। রাকিব ছাত্রদলের সভাপতি হওয়ায় তার এলাকায় মিষ্টি বিতরণের খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার লোকজন ও গণমাধ্যমকর্মীরা রাকিবের বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।
রাকিবের প্রশংসা করে কাশিমপুর ইউনিয়নের ৪র্থ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা সার্জন মোঃ আতাহার আলী বলেন, রাকিব মুক্তাগাছা আমাদের এলাকার গর্ব। তিনি দলমত নির্বিশেষে সবার জন্য কাজ করবেন- এটাই আমরা তার কাছ থেকে প্রত্যাশা করি।
কিন্তু পরিবার চাইছিল না রাকিব রাজনীতি করুক। এ প্রসঙ্গে তার ভাই নজরুল ইসলাম গনমাধ্যমকে বলেন, তার পরিবার তাকে রাজনীতি করতে বাধা দেয়। আর বাবা একজন কারি মানুষ। তিনি সব সময় রাকিবকে রাজনীতি ছেড়ে ধর্মের পথে চলতে বলেন।তবুও সে একা একাই রাজনীতিতে যুক্ত থেকে আজ এ পর্যায়ে এসেছে। এখন অবশ্য বাবা ও পরিবারের সবাই খুশি।
উল্লেখ্য, রাকিব ছাত্রদলের আগের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এর আগে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন।