নুরুল হক নুর বাংলাদেশের চেনা মুখ। তিনি কোঠা আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে দেশ জুড়ে পরিচিত এবং জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। সম্প্রতি দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের চলমান সংকট নিরসনের জন্য এবং দেশের জনগনের অধিকার আদায়ে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন তিনি।তার দলটি অতিশ্রীঘই আত্মপ্রকাশ করবে। তার দলের হয়ে কাজ করছেন ড. রেজা কিবরিয়া। এমনকি ধারনা করা হচ্ছে দলটির গুরুত্বপূর্ণ পদে তাকে দেখা যেতে পারে। সম্প্রতি তিনি এই দল এবং দেশের রাজনৈতিক কর্মকান্ড নিয়ে বেশ কিছু কথা জানালেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের গঠিত নতুন রাজনৈতিক দল ‘বাংলাদেশ অধিকার পার্টি’ (সম্ভাব্য নাম) গুরুত্বপূর্ণ পদে দেখা যেতে পারে অর্থনীতিবিদ ড. রেজা কিবরিয়াকে। সম্প্রতি একটি অনলাইন গণমাধ্যমকে নিয়ে দলটি গঠনের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি তিনি কেন গণফোরাম ছাড়লেন এবং এ দলের সঙ্গে যুক্ত হলেন সে কারণও জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি গণফোরামে যোগ দিয়েছিলাম ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্ব দেখে। কিন্তু যে ধরনের লোক তখন গণফোরামে ছিল তাদের সঙ্গে আমি কাজ করে আরাম পাইনি। গণফোরাম যে একটা নির্বাচনমুখী দল না সেটা বুঝতে পারলাম। আমার লক্ষ্য হলো নির্বাচন ও জনগণের অধিকার আদায়। তো নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে সেটা সম্ভব হচ্ছে না। সেজন্য ছেড়েছি। তারপর কিছুদিন চিন্তা করলাম। দেশের জন্য কিছু করতে চাইলে কোন জায়গায় গেলে সবচেয়ে ভাল হয়। শেষে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ নতুন দল গঠনের বিষয়ে গণফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য দলীয় একটা অবকাঠামো তৈরি করার সুযোগ আছে। আওয়ামী লীগ সরকারের ব্যর্থতার জন্য আমাদের এই সুযোগটা তেরি হয়েছে। সরকারের জনসমর্থন এতটা কমে গেছে যে মানুষ খুঁজছে কোথায় সাপোর্ট দিলে এদেরকে দূর করা যাবে। আমি মনে করি, জনসমর্থনের দিক থেকে আমাদের দলের এক নম্বর হওয়ার একটা সম্ভাবনা আছে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত ৫০ বছরেতো অনেক দল ক্ষমতায় ছিল। আমরা চাচ্ছি, জনগণের স্বার্থে একটা রাষ্ট্র কাজ করবে। তাদের স্বার্থ রক্ষা করবে। বৈষম্যভিত্তিক অর্থনীতি বদলাতে হবে। আমাদের উদ্দেশ্যটা অন্য দলের চেয়ে ভিন্ন। আমরা মধ্যপন্থী দল এবং আমাদের চিন্তাধারা অন্য দলের সঙ্গে মিলে না। আমি মনে করি এই চয়েজটা জনগণের সামনে থাকলে ভালো হয়। মানুষের সামনে আর একটা সুযোগ দিতে চাই, যে তারা অন্য কোথাও ভোট দেবে।’
দলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘একটা গণতান্ত্রিক আন্দোলন থেকে দলটি গড়ে উঠছে। তারা সব সিদ্ধান্ত প্রত্যেক জেলা প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা করেই নেয়। এজন্য সময় লাগে। দলের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়াই ভালো। কয়েকদিন বেশি লাগলে সমস্যা নেই। আগামী নির্বাচনের আগেই দলটি সংগঠিত হবে। আমি মনে করি, সামনের নির্বাচনের সময় আমরা এক নম্বর হবো। সাংগঠনিকভাবে কিংবা টাকার দিক থেকে পিছিয়ে থাকতে পারি, কিন্তু জনসমর্থনের দিক থেকে আমরা অনেকটা এগিয়ে থাকবো, এটা আমার বিশ্বাস। ৩০০ আসনে আমাদের প্রার্থী দেওয়ার ইচ্ছে আছে। তবে নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে আমরা অংশগ্রহণ করবো না।’ আগামী নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে হতে পারে, অথবা জাতিসংঘের অধীনে একটা নির্বাচন হতে পারে। হয়তো অন্য কোনো দেশের লোককে সেটা করতে হবে। জাতিসংঘের একটা ফোর্স দিয়ে নির্বাচনটাকে পরিচালনা করা অনেক দেশে হয়েছে। বাংলাদেশেও সেটা সম্ভব। একটা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে কোনো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। জনগণ জানে এই সরকার ভোটের অধিকার দেবে না। সেজন্য এটা ছিনিয়ে আনতে হবে।’
দেশে সরকারের দায়িত্ব পালন করছে আওয়ামীলীগ দল। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। প্রায় সময় তাদের কর্মকান্ড নিয়ে সরব হচ্ছে দেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দল গুলো। তবে তাদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিবাদী আন্দোলন গড়ে তুলতে না পরায় নানা ভাবে অবহেলিত এবং নি/র্যা/তি/ত হচ্ছে বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা।