কয়েক দিন আগে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযোগের ভিত্তিতে ৭ উর্ধতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে বিষয়টি নিয়ে সমগ্র দেশ জুড়ে চলছে ব্যপক আলোচনা-সমালোচনা। এমনকি সরকারের নানা কর্মাকন্ড নিয়েও বিভিন্ন প্রসশ্ন উঠেছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের সদ্য সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদকে নিয়েও ত্রক-বির্তকের সৃষ্টি হয়েছে। সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দিনের বেশ কিছু কথা উঠে এসেছে জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদকে ঘিরে।
জার্মান বাংলা সংবাদ মাধ্যম ডয়েচে ভেলে (DW) তে প্রচারিত সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দিনের সাথে বাংলাদেশের সদ্য সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদের একটি সাক্ষাৎকার চোখে পড়লো। এই সাক্ষাৎকারে তিনি দুর্নীতির মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন, এমন এক প্রশ্নের জবাবে প্রশ্নকর্তা খালেদ মুহিউদ্দিনকে বলেন, শত শত কোটি টাকার কথা বাদ দেন, এর যদি সামান্য একটা অংশও আমার কোথাও পড়ে থাকে, তাহলে আমাকে তার সন্ধান দিন, আমি এই বয়সে তা দিয়ে একটু আরামে-আয়েসে টেনশনমুক্ত জীবন যাপন করি। এই বিষয়ে তাঁর জন্য আমার একটা বিনীত পরামর্শ আছে। স্যার, যেহেতু, আপনি দাবী করেছেন, আল জাজিরায় আপনার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। চ্যালেঞ্জ করে বলছেন, এসব মিথ্যা। তাহলে দয়া করে এই বিষয়ে চ্যালেঞ্জ না করে বরঞ্চ এখন আপনি আল জাজিরার চ্যালেঞ্জ কবুল করুন এবং কাতারের রাজধানী দোহায় আল জাজিরার বিরুদ্ধে শত কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে মানহানির মামলা ঠুকে দিন। আমি নিশ্চিত, নিঃসন্দেহে আপনি কোটি কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ পাবেন তাদের কাছ থেকে। তখন আপনার অবসর জীবন অনেক নির্ঝঞ্ঝাট, টেনশনমুক্ত ভাবে, যা আপনি চান, সেভাবে কেটে যাবে। আমার শুভ কামনা রইলো এর জন্য।
তবে স্যার, ক্ষমা করবেন, যুক্তরাষ্ট্র আপনার ভিসা বাতিল করেছে কি না, এই প্রশ্নের জবাবে আপনি অনেক যুক্তি-তর্কের অবতারণা করলেও সরাসরি “হ্যাঁ’ কিংবা ‘না’ না বলায় বিষয়টি আমরা অনেকেই ঠিকঠাক বুঝে উঠতে পারিনি। স্যার, আরো একটা বিষয়ে আপনাকে ক্ষমা করতেই হবে আমাকে, আপনার সাথে দ্বিমত পোষণ করার জন্য। আপনার আপন ভাইয়েরা নিজের নাম, মা এবং বাবার নাম, স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন করে অন্য সব নাম ব্যবহার করে জাতীয় পরিচয় পত্র এবং বাংলাদেশের পাসপোর্ট বানিয়ে বিদেশে বসবাস করছেন কি না, এই প্রশ্নের জবাবে এই অভিযোগ পরোক্ষভাবে আপনি স্বীকার করে উল্টো প্রশ্ন করেছেন সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী খালেদ মুহিউদ্দিনকে, ক’জন বাংলাদেশি আসল নাম-ঠিকানা নিয়ে বিদেশে বসবাস করে? স্যার, আপনার এই কথায় কিন্তু প্রায় কোটির কোঠায় বিদেশে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশিরা মনে ভীষণ দুঃখ পাবেন। কারণ, কেবল মাত্র দু-চারজন অপরাধী বাংলাদেশি হয়তো নিজের নাম, মায়ের নাম, বাবার নাম এবং নিজের আদি ও অকৃত্রিম ঠিকানা পরিবর্তন করে বিদেশে বসবাস করছেন। বাকিরা কিন্তু একজনও নয়।
শুধু যুক্তরাষ্ট্র দেওয়া প্রতিবেদননই নয় বছরের প্রথম দিকে বাংলাদেশের সেনাপ্রধানকে ঘিরে কাতার ভিত্তিক জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যম একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। এই প্রতিবেদনকে ঘিরেও বেশ বিপাকে পড়েছে বাংলাদেশ। এমনকি সমজের বিভিন্ন শ্রেনীর বিভিন্ন পেশার অসংখ্য এই প্রতিবেদনকে ঘিরে নানা প্রশ্নও তুলেছে। তবে সম্প্রতি জেনারেল আজিজ আহমেদ সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এবং এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছে।