বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে গত ১৫ বছরে ৮০ থেকে ৯০ হাজার সদস্যকে রাজনৈতিক পরিচয়ের ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগ প্রার্থীদের চৌদ্দ গোষ্ঠীর রাজনৈতিক পরিচয় খতিয়ে দেখে এ নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। সোমবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য প্রকাশ করেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, “গত ১৫ বছরে পুলিশে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীদের এবং তাদের পরিবারের রাজনৈতিক পরিচয় যাচাই করা হয়েছে। প্রার্থীর বাবা, দাদা এমনকি পূর্বপুরুষরা কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তা পর্যন্ত খতিয়ে দেখা হয়েছে। বর্তমানে দুই লাখ পুলিশ সদস্যের মধ্যে ৮০ থেকে ৯০ হাজার সদস্য এইভাবে নিয়োগ পেয়েছেন।”
তিনি আরও বলেন, “এত বিপুল সংখ্যক সদস্যকে এখন আর বাহিনী থেকে সরিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। তবে যারা অপেশাদার আচরণে লিপ্ত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পেশাদারিত্ব বজায় রাখতে আমরা কাজ করছি।”
ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ডিএমপি কমিশনার জানান, শহরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, “অটোরিকশা চলাচল নিয়ন্ত্রণে আনা না গেলে ঢাকার রাস্তায় হাঁটারও জায়গা থাকবে না। এ বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে এবং দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।”
সম্প্রতি রাজধানীতে ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, “ছিনতাই প্রতিরোধে ডিবি ও থানা পুলিশকে সক্রিয় করা হয়েছে। নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি।”
ডিএমপি কমিশনার ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় পুলিশের পেশাদারিত্বের অভাবের জন্য ক্ষমা চেয়ে বলেন, “তৎকালীন পরিস্থিতিতে কিছু অপেশাদার আচরণ দেখা গেছে। এ কারণে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং তাদের মধ্যে কয়েকজনকে বদলি করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার ফলে ঢাকা শহরে ডাকাতি এবং লুটপাট বেড়ে যায়। তখন সাধারণ মানুষকেও লাঠি হাতে পাহারা দিতে দেখা গেছে। তবে পুলিশকে পুনরায় সক্রিয় করতে আমরা কাজ করেছি এবং এখনো করে যাচ্ছি।”