ভবিষ্যত সর্বদাই অনিশ্চিত আর এই অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মানুষ হারায় তার সর্বস্ব। দুষ্কৃতিকারীরা তাদের অপরাধমূলক কর্মকান্ড ঘটনাতে ওত পেতে থাকে বিভিন্ন জায়াগায়। সুযোগ পেলেই আটার ঝাঁপিয়ে পড়ে নিরীহ মানুষের উপর। সম্প্রতি ফটেছে তেমনি একটি অপ্রত্যাশীত ঘটনা। এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে তার কাছ থেকে লুট করে নেয় সব।
ব্যবসায়ী মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন। মহিউদ্দিন খান। পথে কয়েকজন মোটরসাইকেল থামিয়ে একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। তারপর চোখ বেঁধে মারধর করা হয়। এক পর্যায়ে তাকে টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনতাই করে রাস্তার পাশে ফেলে দেওয়া হয়।
শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের সামনের রাস্তায় ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা দেন মহিউদ্দিন খান। তার পরিবারের সদস্যরা শাহবাগ থানায় খবর দেন।
মহিউদ্দিন খান দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, রাজধানীর নিউমার্কেটে রায়হান জুয়েলার্স নামে তার একটি ব্যবসা রয়েছে। শনিবার বেলা একটার দিকে তাঁতীবাজারের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হন। দুপুর দুইটার দিকে তাঁতীবাজার ২১ নম্বর মার্কেটে পৌঁছান। কাজ শেষে বিকেল ৩টার দিকে তাঁতীবাজার মোড় থেকে ভাড়ার মোটরসাইকেলে করে নিউমার্কেটের উদ্দেশে রওনা হন।
বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের মূল ফটকের ২০ গজ পূর্বে পাকা সড়কে আসেন মহিউদ্দিন। তখনই পেছন থেকে ‘সেনাবাহিনী’ লেখা একটি জলপাই রঙের গাড়ি এসে মোটরসাইকেলের পথ আটকে দেয়। গাড়ি থেকে তিনজন নেমে তাকে মোটরসাইকেল থেকে নামতে বলেন। তারা প্রশাসনের লোক ভেবে মটর সাইকেল থেকে নেমে পড়েন মহিউদ্দিন।
বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের মূল ফটকের ২০ গজ পূর্বে পাকা সড়কে আসেন মহিউদ্দিন। তখনই পেছন থেকে ‘সেনাবাহিনী’ লেখা একটি জলপাই রঙের গাড়ি এসে মোটরসাইকেলের পথ আটকে দেয়। গাড়ি থেকে তিনজন নেমে তাকে মোটরসাইকেল থেকে নামতে বলেন।
মহিউদ্দিন খান বলেন, “আমি মোটরসাইকেল থেকে নামার সাথে সাথে তিনজন আমার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে দেয়। তারপর আমাকে গাড়িতে নিয়ে গিয়ে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে দেওয়া হয়। গাড়ি উঠানোর সময় দেখি চালক ও পেছনে আরেকজন বসে আছে। ওদের জিজ্ঞেস কর ভাই, আমার চোখ বেঁধেছেন কেন?তখন ওরা উত্তেজিত হয়ে আমাকে চুপ থাকতে বলল এবং মুখে ঘুষি মারতে থাকে।’
ঘটনার একপর্যায়ে মহিউদ্দিন টের পান তিনি ডাকাতের কবলে পড়েছেন। তিনি বলেন, ‘ওই লোকজন আমাকে কিছু জিজ্ঞেস না করে মারধর করছিল। গাড়ি কিছুদূর যাওয়ার পর তারা আমার হাত পেছনে নিয়ে হাতকড়া পরিয়ে দেয়। তা ছাড়া তারা আমার মুখ গামছা দিয়ে বেঁধে রাখে যাতে আমি চিৎকার করতে না পারি।
ওই ব্যবসায়ীর দাবি, ডাকাতরা তার কাছ থেকে মোট ২০ লাখ টাকা ও একটি মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে। তিনি বলেন, ডাকাতরা রাবার দিয়ে আমার পায়ে বেঁধে ২ লাখ টাকাসহ মোট ৪ লাখ টাকা এবং কোমরে কাপড়ের বেল্টে রাখা আরও ১৬ লাখ টাকা নিয়ে গেছে। তারা আমার মোবাইল ফোনও কেড়ে নেয়। পরে তার হাত-পা ও চোখ বেঁধে রাস্তার পাশে ফেলে দেয়।
রাস্তার পাশ থেকে কীভাবে তাকে উদ্ধার করা হয় তার বর্ণনা দেন মহিউদ্দিন। তিনি বলেন, রাস্তার পাশে থাকা কয়েকজন তার আওয়াজ শুনে তাকে খুলে ফেলে।
তাদের কাছ থেকে জানতে পারেন, তিনি কেরানীগঞ্জের আবদুল্লাহপুরের সড়কে রয়েছেন। পরে তাদের সহায়তায় বিষয়টি তার ভাই কবির হোসেনকে জানানো হয়।
মহিউদ্দিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। ডাকাতদের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ডাকাতদের বয়স আনুমানিক ২৮-৩২ বছর। উচ্চতা প্রায় ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি। গায়ের রং বাদামী। চুল ছোট করে কাটা। তার পরনে ছিল প্যান্ট, হাফ হাতা, হাফ হাতা। ডাকাতরা শুদ্ধ ভাষায় কথা বলে। তাদের দেখলেই চিনতে পারব।
এ প্রসঙ্গে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মৌদুত হাওলাদার প্রথম বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, এ বিষয়ে মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি, অভিযোগটি যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। যাচাই-বাছাইয়ে সত্যতা পাওয়া গেলে মামলা করা হবে। এই ঘটনায় নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, দুর্ঘটনা কখনো বলে কয়ে আসেনা। কপাল খারাপ হলে যে কেউ যেকোনো সময় পরতে পারে দুর্ঘটনার কবলে। ঠিক সেই সময় মানুষ যে কতটা আসহায় হয়ে পড়ে সেইটা আসলে ভাবাও জানা। তবে এই ব্যবসায়ীর বলতে গেলে কপাল অনেক ভালো যে সে প্রাণে বেঁচে গেছে।