সম্প্রতি প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে বিভিন্ন দেশে থেকে অনেক তরুণ-তরুণী বাংলাদেশে এসেছে। এক্ষেত্রে দেখা সামাজিক যোগাগোগ মাধ্যমে ও কাজের তাগিদে প্রবাসে যাওয়া বন্ধু হয় এবং বন্ধুত্বে থেকে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পরে বিয়ে করেন। তবে বেশির ভাগই দেখা যায় যারা বাহিরে থেকে এসে বাংলাদেশীদের বিয়ে করে পরে নিজ দেশে ফিরে যায়। কিন্তু ভিয়েতনামের তরুণী টিউ থিতু তাদের থেকে একটু ব্যতিক্রম সে ভালোবেসে বিয়ে করে বাংলাদেশের চাঁদপুরে থেকে গেছেন।
প্রেমের টানে চাঁদপুরে এসে সুখেই আছেন ভিয়েতনামের তরুণী টিউ থিতু। তিনি চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার প্রবাসী আলমগীর হোসেনের স্ত্রী। পাঁচ বছর ধরে বাংলাদেশে থেকে তিনি এখন বাংলায় কথা বলতে শিখেছেন। তার মতে বাংলাদেশ খুবই সুন্দর। এছাড়া তার পরিবার এবং প্রতিবেশীরাও খুবই ভালো। তবে বাঙালি পরিবারের সদস্য হলেও জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় প্রতিনিয়ত নানা সমস্যায় পড়ছেন বলে জানান তিনি।
টিউ থিতু ওরফে আমিনা বলেন, আমরা ভালো আছি। এখানে সবাই খুব ভালো। স্বামী বিদেশে চাকরি করেন। আমি শাশুড়ি এবং সন্তানদের সাথে থাকি। আমার কোনো সমস্যা হচ্ছে না। কিন্তু আমার বাংলাদেশি নাগরিকত্ব ও জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় অনেক সমস্যায় হচ্ছে। আইডি কার্ড না থাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারছি না, সম্ভব হচ্ছে না জমি কেনা। আর যেহেতু তিনি ভিয়েতনামে ফিরে যাবেন না, তাই তিনি বাংলাদেশি নাগরিকত্ব চান।
স্থানীয়রা জানায়, টিউ থিতুর স্বামী ও সন্তানরা বাংলাদেশি। কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তিনি।
শাশুড়ি খোদেজা বেগম বলেন, আমার ছেলের বউ খুব ভালো। তাকে আমাদের মতো পরিচয়পত্র দিলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যেত।
জানা যায়, শাহরাস্তি উপজেলার ৮নং ওয়ার্ডের মৃ/ত মোবারক হোসেনের ছেলে মো. আলমগীর হোসেন জীবিকার সন্ধানে প্রায় ১৫ বছর আগে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। সেখানে চাইনিজ কোম্পানি মিতরিয়া-এসটিএ-১-তে চাকরি শুরু করেন। চাকরির সুবাদে ভিয়েতনামের এক নারী সহকর্মীর সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক হয়। এক পর্যায়ে তিনি খ্রিস্টান ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তার নতুন নাম হয় আমিনা। পরে আলমগীর তাকে নিয়ে দেশে ফিরে বিয়ে করেন। বর্তমানে আবিদ হাসান শিহাব নামে তাদের একটি ছেলে রয়েছে। এছাড়া আলমগীরের প্রথমপক্ষের স্ত্রীর সন্তান সিয়ামকেও নিজের সন্তানের মতোই লালন-পালন করছেন টিউ।
প্রসঙ্গত, ভালোবেসে বিয়ে করে ওই তরুণী বাংলাদেশে থেকে যান। তাদের সংসারে একটি পুত্র সন্তানও হয়েছে তবে ওই তরুণী নিজ দেশে ফিরে আর যেতে চান না সে কারনে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব।