অনেকটা হঠাৎ করে মঞ্চে নিক্ষেপ শুরু হয় ইট পাটকেল। এমন ধরনের ইট পাটকেল আ’ঘাতের হাত থেকে বাঁচতে সাবেক শিক্ষা মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদসহ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতারা চেয়ার উল্টো করে ধরে ঢালবানিয়া নিজেদের রক্ষা করেন। সেখানে হাজির ছিলেন স্থানীয় নেতারাও। আজ অর্থাৎ ১৪ ই নভেম্বর দিরাই উপজেলা বিএডিসি মাঠে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের উপজেলা সম্মেলন এমন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
গত পৌরসভা ও উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দুই বিদ্রোহী প্রার্থীর নেতৃত্বে এভাবে অত”র্কিত মিছিল দিয়ে এসে মঞ্চে হামলা চালায়।
আহ”ত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। পরিস্থিতি শান্ত হলে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট বিভাগের নেতা আহমেদ হোসেন মাইক্রোফোন নিয়ে হাম”লায় নেতৃত্বদানকারী দুজনকে আজীবন বহিষ্কারের ঘোষণা দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দিরাই উপজেলার বিএডিসি মাঠে আওয়ামী লীগের সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে কেন্দ্রীয় নেতারা মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন। নুরুল ইসলাম নাহিদসহ মঞ্চে ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, সদস্য আজিজুস সামাদ ডন, সুনামগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য ডা. জয়া সেনগুপ্তা, সুনামগঞ্জ-সিলেট সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শামীমা আক্তার খানম, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন প্রমুখ।
হঠাৎ করেই গত দিরাই পৌর নির্বাচনে অংশ নেওয়া বিদ্রোহী প্রার্থী ও সাবেক মেয়র মোশাররফ মিয়া ও উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক রঞ্জন রায়ের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা স্লো’গান দিতে দিতে মঞ্চে এসে ইট পা’টকেল, চেয়ার ছুঁ”ড়তে থাকে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মোশাররফ মিয়ার ছেলে, ভাতিজা ও স্বজনরা লাঠিসোঁটা নিয়ে হাম”লায় অংশ নেয়।
এ সময় মঞ্চে উপস্থিত নেতারা প্লাস্টিকের চেয়ার উল্টে ঢাল বানিয়ে আত্মর’ক্ষার চেষ্টা করেন। পুলিশ ও আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতারা হাম”লাকারীদের ধাও”য়া দিলে হাম”লাকারীরা পালিয়ে যায়।
দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য কামাল মিয়া বলেন, হঠাৎ বহিষ্কৃত মোশাররফ মিয়া ও রঞ্জন রায়সহ তাদের স্বজন ও বিএনপি জামায়াতের কয়েকজন দা”ঙ্গাবাজ মঞ্চে বসা কেন্দ্রীয় নেতাদের লক্ষ্য করে ইট পাথর ছুড়তে থাকে। মঞ্চ ও চেয়ার ভাঙা শুরু করে। আমরা সাধারণ নেতাকর্মীরা তাদের প্রতিহত করি।’
হাম”লার অভিযোগ অস্বীকার করে মোশাররফ মিয়া বলেন, ‘আমরা মিছিল নিয়ে সম্মেলনস্থলে গিয়েছিলাম। আমাদের ওপর হাম”লা হয়েছে। ‘
দিরাই থানার ওসি মো. সাইফুল আলম বলেন, “আওয়ামী লীগের মঞ্চে হাম”লার চেষ্টা হয়েছে। উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহ’ত হয়েছে। পরে পুলিশ দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এনামুল কবির ইমন বলেন, বিদ্রোহীরা আওয়ামী লীগের প্রকৃত আদর্শে বিশ্বাস করে না। এবার তারা জামায়াত-বিএনপি নিয়ে আমাদের মঞ্চে হাম”লা করেছে। আমাদের নেতা আহমদ হোসেন তাদের আজীবনের জন্য আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেন। ‘
প্রসঙ্গত, আ.লীগের তৃণমূল পর্যায়ে কোথাও কোথাও বিদ্রোহী প্রার্থী সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে এমন ধরনের বিদ্রোহী প্রার্থী আসতে পারে, কারণ ক্ষমতার মাধ্যমে সুবিধা পাওয়ার জন্য প্রার্থীরা এমন কাজটি করে থাকে। আগামী নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যা ক্ষমতাসীন দলে অনেকটা বেশি, যার কারণে কিছু কিছু এলাকায় আ.লীগের ভোট সংখ্যা কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এমনটাই বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।