প্রেমের প্রকাশের মধ্যে একটি চুম্বন। এর মাধ্যমে সহজেই প্রিয়জনের কাছে নিজের আবেগ-অনুভূতি প্রকাশ করা যায়। তাই বিশ্বজুড়ে পালিত হয় চুম্বন দিবস। তবে ভালোবাসার এই সেরা প্রকাশ রুখতে উদ্যোগী হয়েছে ভারতের পুরুলিয়ার একটি পার্ক কর্তৃপক্ষ।
সেই পার্কের নির্জনতায় প্রেমের চুম্বন আঁকলে বাঁশি বাজাবে পার্কের প্রহরীরা। চুম্বনে আবদ্ধ প্রেমিকরা যদি থেমে না যায়, তাহলে খুব কাছে গিয়ে মাটিতে লাঠি ঠেকিয়ে সতর্ক করবে।
পুরুলিয়া শহরের আরবান রিক্রিয়েশন ফরেস্ট্রি ডিপার্টমেন্টের অধীনে সুভাষ উদ্যান এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, পার্কের দৃশ্য দূষণ এড়াতে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সঙ্গম প্রতিদাই-এর খবরে বলা হয়েছে, জাতীয় বীর নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর নামে নাম করা সুভাষ উদ্যানে চুম্বন বা কাছে যাওয়া ঠেকাতে পার্ক কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আসলে এই পার্ক শুধু প্রেমিক-প্রেমিকাদের জন্য নয়, শিশু-বৃদ্ধসহ সকল মানুষের বিনোদনের জন্য। তাই চুম্বনের অনুভূতি যতই গভীরে থাকুক না কেন, বাঁশি বাজবেই।
পুরুলিয়ার সুভাষ পার্কের বিট অফিসার সঞ্জীবকুমার দাস বলেন, ‘এই পার্কের দৃশ্য দূষণ এড়াতে এই পদক্ষেপ। শিশু-বৃদ্ধসহ সকলেই এখানে আসেন। তারা এখানে ঘন্টার পর ঘন্টা কাটায়। ফলে কোথাও যেন শালীনতার সীমা অতিক্রম না হয় তা দেখতে হবে।
পার্ক কর্তৃপক্ষের মতে, প্রেম ছাড়া জীবন চলে না। প্রেমিক-প্রেমিকারা পার্কে আসেন শুধু আয়ের পথ প্রশস্ত করতে নয়। ভালোবাসাটাও ছড়িয়ে দিন, কোনো ক্ষতি হয়নি। কিন্তু যাতে চোখের দূষণ না হয়।
ভ্যালেন্টাইন সপ্তাহে চুম্বন দিবসের প্রাক্কালে সুভাষ পার্কের পদক্ষেপে প্রেমীরা যে অসন্তুষ্ট তা নয়। স্ত্রীকে নিয়ে এই পার্কে আসা রাজ খান বলেন, ‘দেখুন, আমরা পার্কে আসি আমাদের প্রিয়জনের সঙ্গে একা সময় কাটাতে। ফলস্বরূপ, কাছাকাছি আসা মানসিক, মানসিক চুম্বন হতে পারে। চুম্বনই একমাত্র জিনিস নয় যা সম্পর্ককে সুস্থ রাখে। মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যও ভালো রাখে।
তবে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে এই পার্ক যেন সবার জন্য হয়। যাতে এখানে কোনো দৃশ্য দূষণ না হয়। পার্ক কর্তৃপক্ষের এই পদক্ষেপ আমাদের নির্জনতার সময়কে কোনোভাবেই ব্যাহত করবে না,” যোগ করেছেন রাজ খান।
শুধু ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ নয়, রাজারা যুদ্ধে যাওয়ার আগে তরবারি চুম্বন করতেন। গির্জার উপাসনায় শান্তি স্থাপনের জন্য চুম্বন ব্যবহার করা হয়। আজও অনেক দেশের রাজনৈতিক নেতারা একে অপরকে সম্মান দেখানোর জন্য চুম্বন ব্যবহার করেন। এছাড়া বন্ধুত্বের হাত বাড়াতেও চুম্বন ব্যবহার করা হয়।