সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বিশ্বের গনতান্ত্রিক দেশ গুলোর সরকার প্রধানদের আমন্ত্রন জানিয়ে এক সম্মেলনের আয়োজন করেছেন। প্রথম বারের মত এমন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে এই সম্মেলনে আমন্ত্রন পায়নি বিশ্বের অনেকে দেশ। এদের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, চীন, রাশিয়া সহ আরও বেশ কয়েকটি দেশ। এই সকল দেশ গুলোর মধ্যে এই নিয়ে চলছে বেশ আলোচনা-সমালোচনা। এমনকি এই প্রসঙ্গে সম্প্রতি বাংলাদেশকে উদ্দেশ্যে করে এক ভিডিও বার্তা দিয়েছেন চীনা রাষ্ট্রদূত। তবে চীনা রাষ্ট্রদূতের দেওয়া বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়েছে বিএনপি দল। এবং দলটি এই প্রসঙ্গে দিয়েছে এক বিবৃতি।
ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূতের একটি বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিএনপি। শনিবার রাতে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ ক্ষোভ ও বিস্ময় প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, ‘সম্প্রতি সামাজিক গণমাধ্যমে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূতের দেওয়া ভিডিও বক্তব্য বিএনপির গোচরীভূত হয়েছে। বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের বর্তমান সরকার সম্পর্কে তার মূল্যায়ন ও মন্তব্যে গণতন্ত্রকামী দেশবাসীর মতো আমরাও ক্ষুব্ধ ও বিস্মিত।’
রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের সমালোচনা করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহিদের প্রাণ আর ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের মাতৃভূমির স্বাধীনতার মূল চেতনা হলো গণতন্ত্র, সাম্য, মানবাধিকার ও সামাজিক ন্যায়বিচার। জনগণের ম্যান্ডেটবিহীন ক্ষমতাসীন গণবিরোধী এ অবৈধ সরকার গোটা দেশবাসীকে এসব অধিকার থেকে লাগাতারভাবে যখন বঞ্চিত করে চলছে। দেশের জনগণ যখন তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধারে সোচ্চার, বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক গণতান্ত্রিক মহল ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো যখন লাগাতারভাবে এ সরকারকে হুঁশিয়ারি বার্তা দিয়ে চলছে, ঠিক তখন চীনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারের পক্ষে দেওয়া এ বাস্তবতাবিবর্জিত বক্তব্য দেশের মানুষকে গভীরভাবে ক্ষুব্ধ ও আহত করেছে।’
ঢাকায় চীনা দূতাবাসের ফেসবুক পেজে শুক্রবার দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আয়োজিত গণতন্ত্র শীর্ষ সম্মেলন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তার মতে, বাংলাদেশসহ বিশ্বের অর্ধেক জনগোষ্ঠী সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশের তালিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। আবার প্রশ্ন রয়েছে, গণতন্ত্রকে সংজ্ঞায়িত করার যোগ্যতা যুক্তরাষ্ট্র রাখে কি না। লি জিমিং আরও বলেন, বাংলাদেশ আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন করেছে। যে দেশে একটি সরকারের যখন ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে, তখন তা যদি গণতন্ত্র হিসাবে স্বীকৃত না হয়, তাহলে হয়তো গণতন্ত্রের সংজ্ঞাটি পুনর্মূল্যায়ন করার অথবা এই সংজ্ঞার পেছনের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলার সময় এসেছে।
অবশ্যে চীন ও বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘ দিনের সুসম্পর্ক রয়েছে। তবে সম্প্রতি এই সম্পর্কের ব্যপক বিস্তার লাভ করেছে। এমনকি বাংলাদেশের উন্নয়নের লক্ষ্যে দেশটি বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও দেশে চলমান নানা উন্নয়নমূলক প্রকল্পের দেশটি অগ্রনী ভূমিকা পালন করছে।