বিগত বেশ কিছুদিন ধরেই মরণব্যাধি ক্যান্সারে ভুগছিলেন হৃষীকেশ পাল নামে এক ব্যক্তি। তবে এর পাশাপাশি মানুষের কাছ থেকে ধার-দেনা করে নিজের চিকিৎসা করিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু এরই জের ধরে একপর্যায়ে বিপুল পরিমাণে দেনা হয়ে যান হৃষীকেশ। আর এ অবস্থায় দিন দিন মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন তিনি। তবে শেষমেষ ঋণের বোঝা বইতে না পেরে মৃত্যু/র পথ বেঁছে নিলেন হৃষীকেশ পাল ও রিয়া সরকার দম্পতি।
‘আমাদের সময় শেষ। আমরা আমাদের মৃত্যু নিয়ে কোনো আলোচনা চাই না। মঙ্গলবার সকালে কলকাতার বাঁশদ্রোণী থানায় এমন একটি ইমেল আসার পরে আ/ত্ম/হ//ন//ন রুখতে ছুটে যায় পুলিশ। ঠিকানা খুঁজে পেতেও সমস্যা হয়নি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, ফ্ল্যাটের দরজা বন্ধ। পুলিশ তা ভেঙ্গে ভিতরে গিয়ে দেখে যে বেডরুমটা খুব ঠান্ডা। এসি চলছে, আর খাটের ওপর কম্বলের নিচে দুটি /লা///শ/! ঘটনাটি ঘটেছে গোরিয়ার ব্রহ্মপুরে।
লালবাজারের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে ,দম্পতি একটি ইমেলে লিখেছেন যে তারা তাদের মৃত্যুর বিষয়ে আলোচনা করতে চান না। তাই পুলিশ বেশি কিছু বলতে চায়নি। কীভাবে তাদের মৃত্যু হয়েছে তাও জানায়নি পুলিশ।
দম্পতির নাম হৃষিকেশ পাল ও রিয়া সরকার। দুজনেরই বয়স তিরিশের কোঠায়। পুলিশের ধারণা তারা /আ//ত্মহ//ন/ন করেছে।
২০১৯ সালে হৃষিকেশ রিয়ার সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে। হৃষিকেশ এর আগে একটি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার জন্য কাজ করেছিল। কিন্তু চাকরি পাওয়ার আগেই মহাসড়কে গাড়ি দুর্ঘটনায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। হাতে ও চোখে গুরুতর আঘাত। ফলে চাকরি চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। চিকিৎসার খরচ বড় টাকা। এরপর হৃষিকেশের ক্যান্সার ধরা পড়ে। রিয়া একটা পার্লারে কাজ করত। বিয়ের পর তারা ব্রহ্মপুরে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিতে শুরু করেন।
পুলিশ জানিয়েছে যে তারা জানতে পেরেছে যে হৃষিকেশ এবং রিয়া ক্যান্সারের চিকিৎসা চালানোর জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে টাকা ধার করেছিল। সব মিলিয়ে তাদের প্রায় ২৫ লাখ টাকা ঋণ রয়েছে।
পুলিশের কাছে পাঠানো ইমেইলে উইল করে রেখে দেওয়ার কথাও লেখা ছিল। তাপস দাস নামে এক ব্যক্তি এলে তাকে দুটি মর/দেহ দিতে হবে বলে জানানো হয়েছে। উইলে আরও বলা হয়েছে, রিয়ার পরিবার লা/শ পাবে না।
তাপস নামে ওই ব্যক্তি পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি একটি গাড়ি সার্ভিসিং কোম্পানিতে কাজ করেন। সেখানে গাড়ির কাজ করতে যাওয়া হৃষিকেশের সঙ্গে দেখা হয়। তখনই জানলেন ক্যান্সারের কথা। হৃষীকেশ বলেছিল, তাদের মৃত্যুর পরে সৎকারের দায়িত্ব নিতে। রিয়ার পরিবার যেভাবে অপমান করেছে, তার পরে ওদের যেন দেহ না দেওয়া হয়।
এদিকে এ ঘটনায় তদন্ত চালিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, হৃষীকেশের সঙ্গে রিয়ার বিয়ে মানতে পারেনি তার পরিবার। কিন্তু তারা পালিয়ে যান। তবে চিরবিদায়ের আগে রিয়া বিশেষ এক বার্তা রেখে গেছেন, যেখানে হৃষীকেশকে অপমানের নানা কথা তুলে ধরেন তিনি।