দেশের প্রতিটি ইউনিয়নেই হতদরিদ্র পরিবারের জন্য কিছু ত্রাণ সামগ্রীর ব্যবস্থা থাকে। আলোচ্য বিষয় কজন পায় সেটা! যে মানুষগুলোর পাওয়ার কথা তাদের কাছে পৌঁছানোর পথে কর্মকর্তাদের পেটেই ফুরিয়ে যায় সে ত্রাণ সামগ্রী এমন নজির অনেক আছে। কিন্তু কাউকে স্বীকার করতে দেখেছেন? সম্প্রতি বরগুনার বেতাগীতে চাল মারার অভিযোগে অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের মুখ থেকে শোনা গেল ভিন্নরকম ১ মন্তব্য, যেখানে তিনি স্বীকারও করছেন আবার আত্মসাৎও করছেন।
বরগুনার বেতাগীতে হতদরিদ্রের জন্য বরাদ্দকৃত ১০টাকা কেজির চাল নিয়ে নয়-ছয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে বেতাগী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো.হুমায়ন কবির খলিফা বলেছেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ চালাতে এদিক ওদিক করতে হয়।’
জানা যায়, বেতাগী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নিজেই স্বাক্ষর করে উত্তোলন করেছেন সুবিধাভোগী হতদরিদ্রের ১০ টাকা কেজির চাল। এছাড়াও হতদরিদ্রের চালের তালিকায় নাম রয়েছে চেয়ারম্যানের ছেলের ও বোনের। এ নিয়েও সমালোচনার মুখে পড়েছেন চেয়ারম্যান হুমায়ন কবির খলিফা।
চেয়ারম্যান সত্যতা স্বীকার করে জানান, একটা ইউনিয়ন চালাতে অনেক কিছু এদিক ওদিক করতে হয়। এদিকে চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরে চাল উত্তোলন ও স্বজনদের নাম তালিকায় থাকা নিয়ে এলাকায় চলছে সমালোচনার ঝড়।
ভুক্তভোগী জেসমিন আক্তার, সাবিনা ইয়াসমিন, রশিদ সিকদার মোসা: সিমা বেগম অভিযোগ করেছেন, তাদের তিনমাসের চাল চেয়ারম্যান হুমায়ন কবির নিজেই উত্তোলন করেছেন। চাল প্রাপ্ত হতদরিদ্র ব্যাক্তিদের স্বাক্ষরের স্থানে রয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ন কবিরের স্বাক্ষর। এছাড়াও তালিকার ক্রমিক নম্বর ১০ এ রয়েছে ছেলে গোলাম শাহরিয়ার মনিরের নাম। অন্যদিকে ক্রমিক নম্বর ৯ এ বোন সাইদুন্নেছা বেগমের নাম রয়েছে।
ভুক্তভোগী জেসমিন আক্তার ও সিমা বেগম বলেন, প্রতিবারের মতো চাল আনতে গেলে বেতাগী সদর ইউনিয়নের ডিলার লাভলু জানান, আমাদের চাল চেয়ারম্যান নিয়ে গেছেন।
প্রমাণ দেখতে চাইলে তিনি দেখান তালিকায় চেয়ারম্যান নিজেই স্বাক্ষর দিয়ে আমাদের চাল উত্তোলন করেছেন। আরো দুই ভুক্তভোগী জানান, তাদের পরপর তিন মাসের চাল চেয়ারম্যান আত্মসাৎ করেছে।’
এ ব্যাপারে বেতাগী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: হুমায়ন কবির খলিফা বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ চালাতে এদিক ওদিক করতে হয়। আর আমার বোন অসহায় তাই তার নাম দিয়েছি। আর আমার ছেলের নামের চাল উঠিয়ে অসহায় মানুষদের দেই। তালিকায় স্বাক্ষর আমিই দিয়েছি। দুই তিন মাস একটু সমস্যা হয়েছিল চাল বিতরণে পরে সব ঠিক করে দিয়েছি।
বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: সুহৃদ সালেহীন বলেন, হতদরিদ্রের বরাদ্দকৃত চালে কেউ অনিয়ম করলে ছাড় দেয়া হবে না। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
যদিও নিবার্হী কর্মকর্তা ঘটনায় ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন। তবে গরিবের চাল আত্মসাতের মত ন্যাক্কারজনক ঘটনায় এখনো কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার কথা শোনা যায়নি। বাকিটা দেখার বিষয় শেষমেশ কি হয়। ভুক্তভোগী তাদের চাল ফেরত পায় কিনা, নাকি এভাবেই চলতে থাকে চেয়ারম্যানের অরাজকতা। নিবার্হী কর্মকর্তা যদিও কোন পদক্ষেপ নেই সেটা কি ধরনের স্টেপ সেটা জানতে গেল আমাদের করতে হবে আরো অপেক্ষা।