আসাদুজ্জামান নূরের জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানানোর মাধ্যমে এই অভিনেতা এবং রাজনীতিবিদকে নিয়ে বলেছেন তাঁর সহকর্মী অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা। নূর সাংস্কৃতিক অঙ্গনে কাজ করে জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন নব্বইয়ের দশকে। সেই সময় সুবর্ণা মুস্তাফাও অভিনয় জীবনে তখন একের পর এক নাটকে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। এই দুজন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রূপালী পর্দায়ও অভিনয় করেছেন, অবশ্য তাদের বড় পর্দায় কাজের সংখ্যা খুব বেশি নয়। সুবর্ণা মুস্তাফা আসাদুজ্জামান নূরের জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়ে একটি কলামও লিখেছেন। তা তুলে ধরা হলো-
নূর ভাইয়ের সঙ্গে বাবা প্রথম আলাপ করিয়ে দেন, ‘এ হলো তোমার নূর চাচা।’ সাল-টাল মনে নেই। সম্ভবত আমার বয়স চৌদ্দ-টোদ্দ হবে। নূর চাচা পরে অবশ্য আর চাচা থাকেননি, সহকর্মী হিসেবে কাজ শুরুর পর ভাই হয়ে গেলেন। নূর ভাইয়ের সঙ্গে আমার প্রথম নাটক ‘বরফ গলা নদী’। খুবই ইন্টারেস্টিং বিষয়, সেখানে আমরা জুটি হয়েছিলাম। বিটিভিতে এটাই আমার প্রথম বড়দের নাটক। নূর ভাই সেখানে একটা ফটোগ্রাফারের চরিত্র করেছিলেন। পরে তাঁর সঙ্গে অনেক অনেক কাজ করেছি। ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘অয়োময়’, ‘আজ রবিবার’-এর মতো মাইলফলক ছোঁয়া ধারাবাহিক তো আছেই, আছে প্রচুর একক নাটক। তখন বিটিভিতে ‘এ মাসের নাটক’ হতো, সেখানে প্রচুর ভালো ভালো কাজ আছে আমাদের। যেমন বলা যায় ‘কুল নাই কিনার নাই’-এর কথা। আমি, আফজাল (হোসেন) আর নূর ভাই ছিলাম। নূর ভাইয়ের সঙ্গে আমার খুবই পছন্দের নাটক এটা। এই নাটকে আমার সব দৃশ্যই ছিল নূর ভাইয়ের সঙ্গে! এ ছাড়া ‘আয়নায় বন্ধুর মুখ’-এর কথাও বলা যায়। এখনো অনেক মানুষ ই’উটিউবে আগের নাটক দেখে, নিয়মিতই তাদের প্রতিক্রিয়া পাই। ‘কোথাও কেউ নেই’ নিয়ে এখনো মানুষ কথা বলে। ফোন করে বলে, তখন এমন কাজ কী করে সম্ভব ছিল! সম্ভব ছিল কারণ কনটেন্ট ভালো ছিল, অভিনেতা ভালো এবং অভিনয়ে সবাই সিরিয়াস ছিল। যখন আমি, নূর ভাই ‘কোথাও কেউ নেই’ বা ‘অয়োময়’ করছি, তখন শুধু ওটাই করছি, অন্য কোনো কাজ নয়।
নূর ভাইয়ের সঙ্গে আমার সম্পর্কটা খুবই ইন্টারেস্টিং। শুরুতে চাচা, এরপর ভাই, এখন আমি আর নূর ভাই একই অফিসে বসি—বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ। আমরা দুজনই সংসদ সদস্য। একসঙ্গে দেশের জন্য কাজ করছি।
নূর ভাইয়ের অভিনয় মূল্যায়ন করবে দর্শক। আমি বলতে পারি মানুষ নূর ভাইকে নিয়ে—সদাচারী, মিষ্টভাষী একজন মানুষ। তাঁকে কখনো খুব রে’গে যেতে দেখিনি। ভী’ষণ সহযোগিতাপ্রবণ মানুষ। ৭৫তম জন্মদিনে নূর ভাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা, শুভ কামনা। উনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি। উনাকে পর্দায় আরো দেখতে চাই, উনার সঙ্গে আবারও কাজ করতে চাই।
প্রসংগত, আসাদুজ্জামান নূর বাংলাদেশের অভিনয় ও আবৃত্তির দক্ষতা সম্পন্ন কয়েকজন অভিনেতাদের একজন। তিনি শিল্পকলার এই উভয় অংশেই ভাল এবং দেশের মধ্যে একটি শক্তিশালী ভক্ত বেস অর্জন করেছেন। এছাড়া তিনি একজন রাজনীতিবিদ ও কর্মী। তিনি বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। ১৯৭২ সালে নাগরিক থিয়েটার ট্রু’পের মাধ্যমে নূর তার অভিনয় জীবন শুরু করেন।