চট্টগ্রামে এক কিশোরের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মাস্ক পরা যুবককে খুঁজছে পুলিশ। শুক্রবার দুপুরে নগরীর পাঁচলাইশ থানার হিলভিউ আবাসিক এলাকা থেকে মো. নূর নবী (১৪) নামে এক কিশোরের ‘লা’শ’ উদ্ধারের পর রাতেই থানায় মামলা করা হয়।
পুলিশ জানায়, গত ২১ আগস্ট ঢাকার যাত্রাবাড়ীর ধলপুরে বাসা থেকে নিখোঁজ হন নূর নবী। তার সঙ্গে হোসেন নামে আরেক কিশোর বাসা থেকে বের হয়। এ ছাড়া নগরীর ষোলশহর রেলস্টেশনে নূর নবীর সঙ্গে ‘মাস্ক পরা’ এক যুবককে হাঁটতে দেখা গেছে। মুখোশধারী যুবককে পাওয়া গেলে এ ‘হ”ত্যা”র রহস্য উদঘাটন হবে।
শনিবার পাঁচলাইশ থানার ওসি সন্তোষ কুমার চাকমা জানান, অজ্ঞাত পরিচয় পাওয়া গেলে শুক্রবার সন্ধ্যায় নিহতের বড় ভাই রমজান হোসেন নূর নবীর ‘লা’শ শনাক্ত করেন। রাতে রমজান বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় ‘হোসেন ভাই’ নামে এক ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
নুর নবী যাদের সঙ্গে খেলতে বাসা থেকে বের হয়েছিল, তাদের সে হোসেন ভাইয়ের সঙ্গে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যাচ্ছে বলে জানিয়েছিল। এ ঘটনায় সুজন নামে এক দোকানদারকে আটক করা হয়েছে। ৫৪ ধারায় তাকে গ্রেফতারের জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে।
রমজানের বরাত দিয়ে ওসি সন্তোষ বলেন, জিডি করার পর তার বাবার ইমোতে কিশোরের ছবি পাঠিয়ে সে ভারতের সীমান্ত এলাকায় আছে বলে জানায়। ছেলেকে ফিরে পেতে হলে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। নুর নবীর বাবা পাঁচ হাজার টাকা পাঠান। কিন্তু নূর নবীকে ফেরত না দিয়ে অভিযুক্ত অপহরণকারীরা তার বাবার আইএমও নম্বরে আরেকটি ভিডিও পাঠায়, যেখান থেকে ষোলশর রেলস্টেশন চিহ্নিত করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার সকালে ভাইয়ের খোঁজে চট্টগ্রামে আসেন রমজান।
পাঁচলাইশ থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আফতাব হোসেন জানান, যেখান থেকে নূর নবীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। এর মধ্যে একটিতে ২৪ আগস্ট দুপুরে নূর নবীকে ষোলশর স্টেশনে দেখা যায়। এ সময় তার সঙ্গে মুখোশ পরা ২৫-২৬ বছর বয়সী এক যুবককে দেখা গেলেও হোসেনকে দেখা যায়নি। নূর নবীকে ওই যুবকের সাথে আড্ডা দিতে দেখা যায় এবং যুবককে তার মোবাইল ফোনে তার ভিডিও করতেও দেখা যায়। মুক্তিপণ দাবি করে নূর নবীর বাবার মোবাইলে যে ভিডিও পাঠানো হয়েছে, সেটি একজন মুখোশধারী যুবকের তৈরি বলে মনে হচ্ছে।
তবে লাশ উদ্ধারের পর পরই নুর নবীর সঙ্গে ঘর ছাড়া হোসেন এবং মাস্ক পরা যুবকের খোঁজও পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের পাওয়া গেলে ‘হ”ত্যা’কাণ্ডের মূল কারণ উদ্ঘাটন হবে। এ নিয়ে পুলিশের একাধিক কাজ করছে।