Monday , December 30 2024
Breaking News
Home / Countrywide / চট্টগ্রামে ট্রেন দূর্ঘটনা: যে ভাবে বেচেঁ গেলেন জুনায়েদ কায়সার (ভিডিও সহ)

চট্টগ্রামে ট্রেন দূর্ঘটনা: যে ভাবে বেচেঁ গেলেন জুনায়েদ কায়সার (ভিডিও সহ)

আজ সকালে শনিবার একটি মাইক্রোবাসের সাথে ট্রেনের ধাক্কায় প্রায় ১১ জন নিহত হয়েছেন। ঘটনা সুত্রে জানা যায়, ওই মাইক্রোবাসটিতে প্রায় ১৮ জন লোক ছিল। বিভিন্ন বয়সী লোকেদের মধ্যে ১১ জনের মৃত্যু এবং আহত হয়েছেন বাকি সাতজন তাদের মধ্যে অনেকেই এখন রয়েছেন চিকিৎসাধীন। কেউ কেউ সাধারণ চিকিৎসার পরে বাড়ি চলে গিয়েছেন। তবে এ ঘটনায় কিভাবে বেঁচে গিয়েছিলেন তারা, সেই ঘটনার বর্ণনা দিলেন জুনায়েদ।

তিনি বললেন, গেট খোলার পর গাড়ি উঠে। ট্রেনটি হঠাৎ মাঝপথে ধাক্কা মারে। সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির পেছনের দরজা খুলে যায়। আমরা পড়ে যাই।’
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন জুনায়েদ কায়সার ইমন তার বেঁচে থাকার অভিজ্ঞতা নিম্নরূপ বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “শাখা খুলে যাওয়ায় পেছনের সবাই বেঁচে গেছে।

শুক্রবার চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার বড়তাকিয়া স্টেশন এলাকায় জুনায়েদের মাইক্রোবাসটি ট্রেনের ধাক্কায় উল্টে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ১১ জন নিহত হন। আহত হয়েছেন আরও ৭ জন। আহতদের মধ্যে হাটহাজারীর আরএনজে কোচিং সেন্টারের ছাত্র-ছাত্রী ১৬ জন। নিহতদের মধ্যে একজন চালক ছিলেন। আহত হয়েছেন তার সহকারীও।

আহত সাতজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে ছয়জন নিউরো সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন। অস্ত্রোপচার বিভাগে ভর্তি হওয়া জুনায়েদ সবচেয়ে কম আহত হয়েছেন।

আজ শনিবার বিছানায় বসে ঘটনাটি বর্ণনা করেন জুনায়েদ। তিনি বলেন, ‘আমরা আটটায় রওনা দেই। আমাদের সাথে চারজন শিক্ষক ছিলেন। প্রায় ১০টার দিকে পৌঁছে গেলাম। সেখানে স্নান করুন। অনেক আনন্দ আছে। এরপর বেলা একটার দিকে খৈয়াছড়া ঝর্ণা থেকে রওনা দিলাম। কিছুক্ষণের মধ্যেই মাইক্রোবাসটি বড়তাকিয়া এলাকার রেলগেটে পৌঁছায়। এরপরই ঘটে দুর্ঘটনা।

জুনায়েদ আরো বলেন, আমরা পাঁচজন পেছনে বসেছি। আমি ছাড়াও এক বন্ধু মাহিম এবং তিনজন এসএসসি পরীক্ষার্থী আয়াত, সৈকত ও তাসফীর ছিল। ক্রসিংয়ের গেট খোলা ছিল। আমি গেটম্যানকে দেখিনি। গাড়ি লাইনে উঠতেই ট্রেনটি ধাক্কা মারে। বিকট শব্দে আমরা হতবাক হয়ে গেলাম। নিচে পড়ে আমি উঠে দাঁড়ালাম। অন্যরা রাস্তার পাশে পড়ে। তখন বৃষ্টি হচ্ছিল। আমি কিছু লোককে বৃষ্টির পানি খাওয়াই।

ট্রেনটি ঘটনাস্থল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে মাইক্রোবাসটিকে ধাক্কা দেয়। এসময় যাত্রীরাও ট্রেন থেকে নেমে পড়েন। জুনায়েদ তখন হেঁটে মাইক্রোবাসে ওঠেন।

জুনায়েদ বলেন, “হাঁটতে হাঁটতে পায়ে ব্যথা অনুভব করছি। বেশ কিছু জায়গা থেকে রক্ত ​​আসছে। মাইক্রোবাসে গিয়ে দেখি সবাই রক্তাক্ত। আমি আর দেখতে পাচ্ছি না।
জুনায়েদ, একজন উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র, এখনও জানে না তার কোন বন্ধু বা শিক্ষক মারা গেছে কিনা। হাসপাতালে তার পাশে আছেন তার বাবা আবুল কাশেম। বেঁচে যাওয়ার পর জুনায়েদ ট্রেনের এক যাত্রীর কাছ থেকে ফোন নিয়ে আবুল কাশেমের সঙ্গে কথা বলেন।

আবুল কাশেম বলেন, এক মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে জুনায়েদ সবার ছোট। তাকে নিয়ে অনেক আশা। আল্লাহ তাকে এই সফরে রক্ষা করেন। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

তবে এই ঘটনায় বিপাকে পড়েছেন রেলক্রসিংয়ে থাকা গেটম্যান। তার দায়িত্ব ছিল নির্দিষ্ট সময়ে গেইট বন্ধ করা এবং নিয়মিত সময়ে গেট উন্মুক্ত করে দেওয়া । ট্রেন আসার পূর্বেই গেট বন্ধ করে দিলে বা নির্দেশনা দিয়ে গাড়িগুলোকে থামিয়ে দিলে আজকের দুর্ঘটনা হতো না বলে মনে করছেন অনেকে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত গেটম্যান কে বহিস্কার ও আটক করা হয়েছে।

https://youtu.be/7jTxgfeU8Xk

About Nasimul Islam

Check Also

কোহিনূরের পর বিশ্বের সবচেয়ে দামি হীরা দরিয়া-ই-নূর বিদেশে পাচার করেছিল শেখ হাসিনা

ঢাকার নবাবি আমলের মহামূল্যবান হীরকখণ্ড ‘দরিয়া-ই-নূর’ নিয়ে রহস্য আজও অমীমাংসিত। ২০১৬ সালে সোনালী ব্যাংক সদরঘাট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *