সম্প্রতি চট্টগ্রামে ট্রেন-মাইক্রোবাস দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাণ তরতাজা ১১ জন যুবক। যাদের অকাল মৃত্যুতে রীতিমতো গোটা দেশজুড়ে নেমে এসেছে শোকের কালো ছায়া। তাদেরকে এভাবে বিদায় জানাতে হবে যেন, কখনো ভাবতেও পারেননি স্বজনরা। এদিকে নিহতদের মধ্যে অন্যতম একজন শিক্ষক জিয়াউল হক সজীব। খুব হাসি মাখা মুখ নিয়েই ঘর থেকে বের হয়েছিলেন তিনি।
তবে তিনি তার ছোট ভাই তৌফিককে এ যাত্রায় তার সাথে যেতে বলেন। কিন্তু তার প্রস্তাবে সাড়া না দিয়ে বেঁচে যান ছোট ভাই তৌফিক। সেই স্মৃতি স্মরণে তৌফিকের কান্নায় ভারি হয়ে ওঠে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রাঙ্গণ। জরুরী বিভাগের সামনে বিলাপ করে বললেন, ও ভাই কোথায় তুই? এখন আমাকে শাসন করবে কে? কে আমাকে পরামর্শ দেবে?
কাঁদতে কাঁদতে তৌফিক গণমাধ্যমকে জানান, শুক্রবার ভোরে তার বড় ভাই ঘুম থেকে উঠে বাড়ি থেকে বের হয়। তাই শেষবারের মতো বাড়ি থেকে বেরিয়েও ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হয়নি। কখনো কল্পনাও করেনি যে এটাই হবে তার শেষ যাত্রা। ও ভাই তুই আমাকে এভাবে একা রেখে গেলি কিভাবে? এখন থেকে কে আমাকে বকা দেবে? শাসন করবে? কাকে ভাই বলে ডাকবো ?
জিয়াউল হক সজীব ওমরগানি এমইএস কলেজের গণিতের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। পড়ালেখার পাশাপাশি ওই এলাকার যুগিরহাট এলাকার আরএন্ডজে কোচিং সেন্টারে পড়াতেন।
মুদি দোকানের কর্মচারী আবদুল হামিদের চার ছেলে-মেয়ের মধ্যে সজীব সবার বড়। তাদের স্বপ্ন ছিল ছেলে বড় হয়ে সংসারের হাল ধরবে। কিন্তু তার আগেই ট্রেন দুর্ঘটনায় না ফেরার দেশে যেতে হয় সজীবকে। তার মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না স্বজনসহ এলাকার বাসিন্দারা।
এদিকে শিক্ষক সজীবের অকাল মৃত্যুতে পরিবার-পরিজনদের মাঝে চলছে কান্নার রোল। তার এমন মৃত্যু যেন কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তারা। এ ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন নিহত বাকি পরিবারের স্বজনরাও।