Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Entertainment / চঞ্চলের চিকিৎসায় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে চিঠিতে যা লিখেছিলেন এ টি এম শামসুজ্জামান

চঞ্চলের চিকিৎসায় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে চিঠিতে যা লিখেছিলেন এ টি এম শামসুজ্জামান

বরেণ্য অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামানের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী ছিল গতকাল ২০ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার)। ২০২১ সালের এই দিনে, ৮০ বছর বয়সে এই গুনী শিল্পী মা”রা যান। তাকে স্মরণ করে, অনেক অভিনেতা এবং অভিনেত্রী সোশ্যাল মিডিয়ায় স্মৃতি শেয়ার করেছেন। তাদের একজন চঞ্চল চৌধুরী।

তিনি তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, আজ বাংলাদেশের দুই কিংবদন্তি অভিনেতার প্রয়ান দিবস। তারা হলেন জনাব গোলাম মোস্তফা ও জনাব এটিএম শামসুজ্জামান। তাদের বিদেহী আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।

তিনি লেখেন, গভীর শ্রদ্ধা জানাই তাঁদের বিদেহী আত্মার প্রতি। গোলাম মুস্তাফা সাহেবের সঙ্গ লাভ বা তার সঙ্গে অভিনয় করবার সৌভাগ্য আমার কখনো হয়নি। তবে ছোটবেলা থেকে তাঁর অভিনয় ও আবৃত্তির একনিষ্ঠ ভক্ত আমি।

অন্যদিকে চঞ্চল চৌধুরী এটিএম শামসুজ্জামানের সঙ্গে কাজ করার অসংখ্য সুযোগ হয়েছে। তাকে স্মরণ করে অভিনেতা লিখেছেন, সালাহউদ্দিন লাভলু, বৃন্দাবন দাস, মাসুম রেজা, মোশাররফ করিম, শাহনাজ খুশি, আখ ম হাসান, শামীম জামান এবং আমি অনেক নাটকে একসঙ্গে কাজ করেছি। এটিএম ভাইয়ের সাথে আমাদের সকলের অনেক প্রিয় এবং আনন্দের স্মৃতি রয়েছে।

একটি স্মৃতি স্মরণ করে চঞ্চল বলেন, ‘ভবের হাট’ নাটকের সেটে শুটিংয়ের মাঝখানে এটিএম ভাই হঠাৎ আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার কপালে কি হয়েছে চঞ্চল?” আমি বললাম, “কোন একটা কারণে আঘাত পাওয়ার পর থেকে টিউমারের মত শক্ত কি একটা যেন হয়েছে! অনেকদিন হয়ে গেল কমছে না।” উনি বললেন, “সে কি!!!! তোমার তো এখন কপাল খোলার সময়, কপালের যত্ন নাও। আমার বন্ধু ডা. সেন, ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটের প্রধান। আমি একটা চিঠি লিখে দিচ্ছি সেন মহাশয়কে, তুমি তাড়াতাড়ি দেখা করো ওর সাথে। তিন চার দিনের মধ্যে কপালটা ফাটিয়ে, জোড়া লাগিয়ে আবার আগের মত ফ্রেশ কপাল বানিয়ে দেবে।

যথারীতি এটিএম ভাই ডক্টর সেন স্যারকে লেখা চিঠি নিয়ে দেখা করলাম। সেন স্যার হলেন বিখ্যাত ডাঃ সামন্ত লাল সেন। যিনি বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী। সেন স্যার আমাকে দেখেই চিনতে পারলেন। এরপর এটিএম তার ভাইয়ের লেখা চিঠি পড়ে হাসতে থাকে।

চিঠির লেখাগুলো ছিলো

সেন, প্রীতস্তি কুশল রইলো। চঞ্চলকে পাঠালাম। ও ইদানীং ওর অভিনয়ে আমাদের সবাইকে চঞ্চল করে তুলেছে। কপাল জোড় কদমে দৌড়চ্ছে। সেই কপালে কি যেন হয়েছে। দেখে যদি মনে করেন ফাটিয়ে দেবেন। একবার ফাটলে আর ধরে কে ওকে। ভালো আছেন। ভালো থাকবেন। বৌদিকে নমস্কার। বাকী পরিবারের সবাইকে ভালবাসা।

এ টি এম শামসুজ্জামান
২৯ শে শ্রাবন, ১৪১৩ বাংলা।”

তখন সত্যিই আমার ফাটিয়ে দিলেন ড. সামন্ত লাল সেন। এটিএম ভাই যখন খুব অসুস্থ হয়ে পিজি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন, একদিন বৃন্দাবনদা, খুশী আর আমি ওনাকে দেখতে গেলাম। আমাদেরকে দেখে উনি আনন্দে কেঁদে ফেললেন। বললেন, আল্লার রহমতে, সকলের দোয়ায় আমি সুস্থ হইয়া যামু…..আবার অভিনয় করমু, তোমরা রেডি হও।

আমরা সত্যিই তার প্রত্যাবর্তনের আশা করতে প্রস্তুত ছিলাম, চিরতরে তার চলে যাওয়ার সংবাদ শুনতে প্রস্তুত ছিলাম না। সেই হাসপাতালেই তাঁর সঙ্গে শেষ দেখা। শেষ ছবি আমাদের শেষ স্মৃতি। আর ডা. সেন স্যারকে লেখা তাঁর হাতের লেখা চিঠিটা আগলে রেখেছি অনেক যত্নে।

পরপারে শান্তিতে থাকুন হে কিংবদন্তি।

About bisso Jit

Check Also

গোপনে বিয়ে করলেন তৌহিদ আফ্রিদি, জানা গেল কনের পরিচয়

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে যখন সারা দেশের মানুষ ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তখন বেশ নিরব ছিলেন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *