ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব নিয়ে সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে কানাঘুষা চলছে। এদিকে এ উত্তেজনা প্রকাশ্যে এসেছে।
ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনকে শুভেচ্ছা জানাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে জড়ো হয়েছেন সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ানের অনুসারীরা তাদের হ/য়রানি করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সলিমুল্লাহ মেডিকেলের নেতারা আরও দাবি করেন, শায়ানের অনুসারীরা সাদ্দামের জন্য আনা ফুলের তোড়া ছিঁড়ে ফেলে। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ছাত্রলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক শাহরিয়ার নীরব ও বিজয় একতার সহ-সভাপতি মেহেদী হাসান নিবির নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী রোকেয়া হলের সামনে আসেন। সেখানে সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের ছাত্রলীগ নেতারা সাদ্দামের অপেক্ষায় ছিলেন। ঢাবি ছাত্রলীগ নেতারা তাদের জিজ্ঞেস করেন কার জন্য এনেছেন ফুলের তোড়া। জবাবে সলিমুল্লাহ ছাত্রলীগ নেতারা বলেন, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দামকে দেওয়ার জন্য এসেছেন। তখন ঢাবি ছাত্রলীগের নেতারা বলেন, ফুল দিতে চাইলে পার্টি অফিসে যান নয়তো নেতার বাড়িতে যান। এই বলে তারা তোড়াটা কেড়ে নিয়ে ছুড়ে ফেলে দেন। নিরব ও নিবির শয়ানের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।
সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি দুর্জয় পাল গণমাধ্যমকে বলেন, গত ৩১ জুলাই আমাদের কমিটি গঠন করা হয়। আগস্ট হওয়ায় শুভেচ্ছা বিনিময় করতে পারিনি। তাই শনিবার সাদ্দাম ভাইকে শুভেচ্ছা জানাতে তিনটি ফুলের তোড়া নিয়ে ঢাবি ক্যাম্পাসে যাই। দেখি আমাদের নারী কর্মীদের ঢাবির ছাত্র পরিচয় দিয়ে প্রশ্ন করা হয়, আপনারা কে? কোথা থেকে এসেছেন? তারপর আমরা গিয়ে কথা বলি, যখন আমরা নিজেদের পরিচয় দেই, তারা আমাদের হাতে ফুল ফেলে দিয়ে বলে তাড়াতাড়ি এখান থেকে চলে যাও। অবস্থা বেগতিক দেখে আমরা সেখান থেকে চলে আসি। পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় সাদ্দাম ভাইকে দেখে আমরা নতুন ফুল কিনে কুশল বিনিময় করি। সাদ্দাম ভাই বিষয়টি দেখবেন বলেও জানান।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিজয় একতার হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মেহেদী হাসান নিবির। তিনি বলেন, আমি অসুস্থ। আমি রিকশায় করে মেডিকেলে যাচ্ছিলাম, তারপর তাদের সাথে কথা বলে তাদের পরিচয় জানতে পারলাম। পরে মেডিকেল থেকে ফিরে দেখি ছেঁড়া ফুল রাস্তায় পড়ে আছে। ঘটনার সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।
শাহরিয়ার নীরব বলেন, আমি দুই দিন ধরে ক্যাম্পাসে ছিলাম না, ওই ঘটনায় জড়িত থাকার প্রশ্নই আসে না।
মাজহারুল কবির শয়ন বলেন, ঘটনা জানি না। খোঁজ নিচ্ছি।
প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন ধরে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে ঢাবি শাখার দ্বন্দ্ব চলছে। কেন্দ্রীয় কমিটিতে ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের মনোনীত প্রার্থীদের নিয়োগ না দেওয়া, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিশাল ছাত্র সমাবেশে ঢাবি নেতাদের বক্তব্যের সুযোগ না দেওয়া, সাত কলেজকে ঢাবি ছাত্রলীগের অধীনে আনার চেষ্টা, শাখা ছাত্রলীগে কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীদের পদায়ন দিতে না চাওয়ার কারণে কেন্দ্রীয় কমিটি ও ঢাবি শাখার মধ্যে এ বিরোধ। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বেশ কিছু খবর প্রকাশিত হয়েছে।