আ স ম আবদুর রব হলেন জাতীয় সমাজতান্ত্রীক দলের একজন নেতা। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় করেছিলেন সংগ্রাম। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি অনেক অবাদান রেখেছেন। তৎকালীন সময়ে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেছিলেন। সম্প্রতি তিনি তার এক বক্তব্যে বলেছেন ভিন্ন মত পোষণ করলেই জাতির শত্রু হয় না।
জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, ভিন্নমতাবলম্বী ও পথপ্রদর্শকদের ‘জাতির শত্রু’ আখ্যা দিয়ে জনগণের ‘স্বতন্ত্র স্বাধীনতা’ ও ‘দেশপ্রেম’ পদদলিত করা সমর্থনযোগ্য নয়। বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
আ স ম রব বলেন, “আমাদের সংবিধান চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেয়, কিন্তু দেশের ঔপনিবেশিক ধাঁচের শাসনব্যবস্থা গণতন্ত্রের আড়ালে ফ্যাসিবাদের জন্ম দেয় মানুষের স্বাধীনতাকে নিয়ন্ত্রণ ও শ্বাসরুদ্ধ করে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে।” ভিন্নমতকে দেশের শত্রু বলা, তাদের খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়া এবং গ্রেপ্তারের দাবি করা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য। ‘
জাসদ সভাপতি বলেন, “যে কোনো ইস্যুতে জাতির শত্রুকে দেশের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য নাগরিকদের নৈরাজ্যকর প্রবণতা ও বাগাড়ম্বর জনগণের মৌলিক অধিকারকে মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন করবে এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে সরকারকে ভয়ভীতি প্রদর্শনে প্রলুব্ধ করবে। এবং দমনমূলক শক্তি। “আমাদের সকলের এই ধরনের অসাংবিধানিক এবং বিপজ্জনক বিবৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রে খুব সতর্ক হওয়া উচিত।”
আব্দুর রব জানান, নড়াইল সদরের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে অপমান করা হয়েছে। যা প্রতিনিয়ত সমাজ ও রাষ্ট্রকে অসভ্যতার পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে। ‘
তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, “স্কটল্যান্ডের জনগণ শুধুমাত্র প্রকাশ্যেই যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে স্বাধীনতা দাবি করছে না, বরং তাদের দাবিতে গণভোটও করছে।” কিন্তু তারপরও কেউ কাউকে দেশ বা জাতির শত্রু বলেনি। আবদুর রব বলেন, “অরাজনৈতিক স্বার্থের জন্য অজুহাত দেখিয়ে, ভিন্নমত ও পথকে প্রতিপক্ষ বানিয়ে ছিটকে দেওয়া বা নির্মূল করা বা নিশ্চিহ্ন করা সমর্থনযোগ্য নয়, বরং এটা খুবই অশুভ।
‘পৃথিবীতে এমন কোনো বিষয় নেই যার ওপর একাধিক মত বা পথ বা মত ও পথের পার্থক্য নেই। মত ও পথের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা গণতন্ত্রের ভিত্তি ও সৌন্দর্য। ব্যক্তিস্বাধীনতা নিশ্চিত হলেই রাষ্ট্রের উন্নয়ন, অগ্রগতি ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত হয়। ভিন্নমতের স্বাধীনতাকে বঞ্চিত করলে রাষ্ট্রের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও স্থিতিশীলতা বিপন্ন হবে। ‘
জাসদ সভাপতি আরও বলেন, রাজনীতিতে বিভেদ উসকে দিয়ে জোরপূর্বক প্রতিপক্ষ বানিয়ে সমস্যা মিটিয়ে মুনাফাখোর প্রবণতা থেকে সবাইকে বিরত থাকতে হবে।
প্রসঙ্গত, স্বাধীন দেশে যার যার নিজের মতামত প্রকাশ করার রয়েছে পূর্ণ স্বাধীনতা। নিজের কাছে কোনো বিষয় সঠিক মনে না হলোএ সেই ক্ষেত্রে ভিন্ন মত পোষণ করতেই পারে সেইটা অপরাধের কিছু না। মত প্রকাশের স্বাধীনতা না থাকলে মানুষের মূল্য একেবারেই থাকেনা।