Saturday , November 9 2024
Breaking News
Home / Law / গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ২২ বছর জেল

গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ২২ বছর জেল

আদালত গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের (সাবেক এনআরবি গ্লোবাল) প্রাক্তন ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারকে (পিকে) ২২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে।

এ মামলায় বাকি ১৩ জনকে পৃথক দুটি ধারায় সাত বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের মামলায় এ রায় ঘোষণা করেন।

পিকে হালদারের বিরুদ্ধে দায়ের করা ৫২টি মামলার মধ্যে এটিই প্রথম মামলার রায়। বাকি ৫১টি মামলা এখনো তদন্তাধীন।

এর আগে গত ৪ অক্টোবর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম রায়ের জন্য আজ দিন ধার্য করেন। এদিন যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সময় আসামি পিকে-র বান্ধবী অবন্তিকা বড়াল, শঙ্খ বেপারী, সুকুমার মৃধা ও অনিন্দিতা মৃধাকে আদালতে হাজির করা হয়।

দুদকের অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, পিকে হালদার ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ৬ হাজার ৭৯০ শতাংশ জমি বেনামে কিনেছেন। এ সম্পদের বাজার মূল্য দেখানো হয়েছে ৩৯১ কোটি ৭৫ লাখ ৮১ হাজার ১২ টাকা। বর্তমানে এর বাজার মূল্য ৯৩৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে নিজেদের নামে জমি কিনেছেন ৪ হাজার ১৭৪ শতাংশ। নথিতে এর দাম দেখানো হয়েছে ৬৭ কোটি ৯৪ লাখ ২০ হাজার ৯৩০ টাকা। তবে এ সম্পদের বর্তমান মূল্য ২২৮ কোটি টাকা।

এ ছাড়া রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিকে হালদারের নামে দুটি ফ্ল্যাট রয়েছে। অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, পিকে হালদার তার নিকটাত্মীয় পূর্ণিমা রানী হালদারের নামে উত্তরায় একটি ভবন নির্মাণ করেছেন। যার দাম ১২ কোটি টাকা। পূর্ণিমার ভাই উত্তম কুমার মিস্ত্রীর নামে তেজগাঁও, তেজতুরী বাজার ও গ্রিন রোডে ১০৯ শতাংশ জমি কিনেছেন। যার বাজার মূল্য ২০০ কোটি টাকা। তিনি তার কোম্পানি ক্লিউইস্টোন ফুডস এর নামে কক্সবাজারে ২ একর জমিতে একটি আট তলা হোটেল (র্যাডিসন নামে পরিচিত) নির্মাণ করেন। যার আর্থিক মূল্য এখন ২৪০ কোটি টাকা।

এছাড়া তিনি পিকে হালদারের চাচাতো ভাই অমিতাভ অধিকারী ও অনঙ্গ মোহন রায়ের নামে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে ৪০৪ শতাংশ জমি কিনেছেন, যার বর্তমান মূল্য ১৬৭ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এবং কানাডিয়ান ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের তথ্য উদ্ধৃত করে দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে পিকে হালদার তার ভাই প্রীতিশ হালদারের কাছে ২০১২ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ১ কোটি ১৭ লাখ ১১ হাজার ১৬৪ কানাডিয়ান ডলার পাচার করেছেন। যার পরিমাণ ৮০ কোটি টাকার বেশি।

২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি দুদকের উপ-পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী পিকে হালদারের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগে মামলা করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, পিকে হালদার তার দখলে রেখেছেন ৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ। এ ছাড়া টাকা আড়াল করতে বিদেশে পাচার করে মানি লন্ডারিং আইনে অপরাধও করেছেন।

মামলাটি তদন্ত করে ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন। 8 সেপ্টেম্বর, ২০২২ তারিখে, আদালত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে।

প্রধান আসামি পিকে হালদার। পিকে হালদারকে অর্থ পাচারের অভিযোগে গত বছরের ১৪ মে ভারতের অশোকনগর থেকে গ্রেফতার করা হয়।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- পিকে হালদারের আইনজীবী সুকুমার মৃধা, মেয়ে অনিন্দিতা মৃধা, সহযোগী অবন্তিকা বড়াল ও চাচাতো ভাই শঙ্খ বেপারী, পিকে হালদারের মা লীলাবতী হালদার ও ভাই প্রীতিশ কুমার হালদার, সহযোগী পূর্ণিমা রানী হালদার, অমিতাভ অধিকারী, রাজকুমারী, সুব্রত মৃধা। , আন মোহন রায়, উত্তম কুমার মিস্ত্রী ও স্বপন কুমার মিস্ত্রী।

এদের মধ্যে সুকুমার, অনিন্দিতা, অবন্তিকা ও শঙ্খকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। তারা আজ আদালতে ছিলেন।

এদের মধ্যে সুকুমার, শঙ্খ ও অনিন্দিতা এর আগে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

এ মামলায় অভিযোগকারীসহ রাষ্ট্রপক্ষের ১০৮ জন সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন আদালত।

About Zahid Hasan

Check Also

খতনা করতে গিয়ে শিশুর মৃত্যু, ২ চিকিৎসকের জন্য আদালত থেকে এল যে নির্দেশ

মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী আহনাফ তাহমিন আয়হাম (১০) খতনা করাতে গিয়ে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *