গ্রেপ্তার এড়াতে যেভাবে পালিয়ে যান তাহেরি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার চরইসলামপুর ইউনিয়নের নাজিরাবাড়ি এলাকায় শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে আলোচিত ইসলামি বক্তা মুফতি গিয়াস উদ্দিন তাহেরিকে গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালায় পুলিশ। তবে গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি স্থানীয় একটি বাড়িতে ঢুকে পড়েন এবং পরে পেছনে বয়ে যাওয়া বিলের পানিতে সাঁতরে পালিয়ে যান।

এ সময় তাহেরির অনুসারীরা পুলিশের ব্যবহৃত একটি পিকআপ, মাইক্রোবাস ও সিএনজি অটোরিকশায় ভাঙচুর চালায়। হামলায় ছয় পুলিশ সদস্য আহত হন। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ঘটনার সময় পুলিশ ছয়জনকে আটক করে। আটককৃতরা হলেন- ওমর আলী, শাহানুর, মোশারফ মিয়া, হাকিম মিয়া, সেলিম ও মিজান মিয়া। এরা সবাই নাজিরাবাড়ি এলাকার বাসিন্দা।

বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলী জানান, বিনা অনুমতিতে তাহেরির একটি মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে আখাউড়ায় পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা রয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে গেলে তিনি একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন এবং পরে বিলের পানি দিয়ে পালিয়ে যান। ঘটনাস্থল থেকে ছয়জনকে আটক করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

এর আগে শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) আখাউড়ায় বিনা অনুমতিতে তাহেরির আরেকটি মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। পুলিশ দ্রুত মাহফিল শেষ করতে বললে তার অনুসারীরা এক এসআইকে আক্রমণ করে তার মাথা ফাটিয়ে দেয়। এছাড়া মাহফিলে পুলিশের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তাহেরিসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করে।


বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তার মতে, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে চট্টগ্রামে ঘটে যাওয়া ঐতিহাসিক ঘটনার প্রেক্ষাপটে এ দাবি প্রমাণিত হয়।

তৎকালীন অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সহ-অধিনায়ক মেজর জিয়ার অনুপস্থিতিতে তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া চট্টগ্রাম সেনানিবাসের কেন্দ্রীয় অস্ত্রাগার থেকে পাকিস্তানি বাহিনীর অস্ত্র সংগ্রহ ঠেকানোর সিদ্ধান্ত নেন। ২৪ মার্চ ১৯৭১ সালে এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে তিনি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বাঙালি সৈন্যদের অস্ত্রহীন হয়ে পড়া থেকে রক্ষা করেন।

বিএনপি মহাসচিব ফখরুল বলেন, “বেগম জিয়া মুক্তিযুদ্ধের সেই সময়ে যে সাহসিকতা ও নেতৃত্ব দেখিয়েছেন, তা তাকে বাংলাদেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।” তিনি আরও প্রশ্ন করেন, “যদি বেগম খালেদা জিয়া মুক্তিযোদ্ধা না হন, তাহলে আর কে মুক্তিযোদ্ধা হবেন?”

এ ঘটনার ইতিহাস তুলে ধরতে মুক্তিযুদ্ধ গবেষক মেজর (অব.) সৈয়দ আবু বকর সিদ্দিক জানান, বেগম জিয়ার নির্দেশে চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় অস্ত্রাগারে থাকা অস্ত্র পাকিস্তানি বাহিনীর কাছে পৌঁছানো রোধ করা সম্ভব হয়। তার এই দূরদর্শী সিদ্ধান্তে ৮ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ১১০০ সৈন্য এবং মেজর জিয়া মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য প্রস্তুত থাকতে সক্ষম হন।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, “বেগম খালেদা জিয়া বন্দিদশায় থেকেও মুক্তিযুদ্ধের প্রতি অবিচল সমর্থন দেখিয়েছেন। তিনি শুধু নেতৃত্ব দেননি, তিনি তার সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে একটি মাইলফলক স্থাপন করেছেন।”

মুক্তিযুদ্ধকালীন বেগম জিয়ার অবদান আজও যথাযথভাবে মূল্যায়িত হয়নি বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব। ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে এই ঘটনাকে নতুনভাবে বিবেচনার আহ্বান জানান তিনি।