Friday , November 22 2024
Breaking News
Home / International / গ্রিসে বড় যে সুযোগ বাংলাদেশিদের জন্য

গ্রিসে বড় যে সুযোগ বাংলাদেশিদের জন্য

গ্রীক অর্থনীতি শ্রমের ঘাটতি অনুভব করছে। দেশটির আশ্রয় ও অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও সামাজিক নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় শূন্যস্থান পূরণের জন্য প্রায় ৩০ ,০০০ অনথিভুক্ত অভিবাসীদের নিয়মিতকরণের ঘোষণা দিয়েছে।

গ্রিসের বেশ কয়েকটি সেক্টর সাম্প্রতিক বছরগুলিতে শ্রমিক সংকটের কারণে সংগ্রাম করেছে। বিশেষ করে, বিপুল সংখ্যক আলবেনিয়ান নাগরিক পশ্চিম ইউরোপের বিভিন্ন দেশে চলে যাওয়ার কারণে গ্রীক কোম্পানিগুলি অচল অবস্থায় রয়েছে। এথেন্স অ-ইউরোপীয় বা তৃতীয়-দেশের নাগরিকদের জন্য অঘোষিত বা অনথিভুক্ত কর্মসংস্থান বন্ধ করতে এবং জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য একটি নতুন ধরনের আবাসিক অনুমতি ঘোষণা করেছে।

গ্রিসের আশ্রয় ও অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও সামাজিক নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় ১৪ ডিসেম্বর যৌথ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে। এই উদ্দেশ্যে একটি খসড়া সংশোধনীও প্রকাশ করা হয়েছে।

এর ফলে যেসব অনিয়মিত অভিবাসী বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে দেশে বসবাস করছেন এবং চুক্তি ছাড়াই চাকরিতে নিয়োজিত আছেন, তারা নিবন্ধন করতে পারবেন এবং বৈধ চাকরির সুযোগ নিতে পারবেন।

বৈধতা আবেদন শর্তাবলী
গ্রীক সরকারের নতুন নিয়মিতকরণের সিদ্ধান্ত কাকে বৈধ করা হবে তা নির্দিষ্ট করে। একজন ব্যক্তি নিম্নলিখিত শর্তগুলি পূরণ করে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বৈধতার জন্য আবেদন করতে পারেন।

# চলতি বছরের ৩০ নভেম্বর বা তার আগে ক্রমাগত কমপক্ষে তিন বছর গ্রীসে বসবাস করুন। আগের আইনে এর মেয়াদ ছিল সাত বছর। নতুন ঘোষণায় এই মেয়াদ কমিয়ে চার বছর করা হয়েছে।
# নিয়োগকর্তার কাজের প্রস্তাব চুক্তি জমা দেওয়া, যেখানে কর্মচারী বৈধতার পরে কাজ চালিয়ে যেতে পারে।
# কোন ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত নয়।
# পাসপোর্টের কপি। যদি কারো পাসপোর্ট মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে থাকে, তাহলে কেউ পূর্বের কপি জমা দিয়ে প্রাথমিকভাবে আবেদন করতে পারেন।

তিন বছরের জন্য বসবাসের অনুমতি
এই নিয়মের অধীনে, একজন ব্যক্তিকে তিন বছরের জন্য বসবাসের অনুমতি দেওয়া হবে। আবেদনকারীর পত্নী এবং সন্তানদেরও বৈধতা দেওয়া হবে যদি তারা ৩০ নভেম্বরের আগে গ্রিসে উপস্থিত থাকে।

তবে নিয়মিতকরণের পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে চাকরিতে অব্যাহত রাখতে হবে। অন্যথায় আপনি কার্ড বাতিলের ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারেন। অনিয়মিত অভিবাসী যারা শর্ত পূরণ করে তারা নতুন নিয়মের অধীনে ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ পর্যন্ত নিয়মিতকরণের জন্য আবেদন করতে পারবে।

তবে এই বিধানের আওতায় নিয়মিত হওয়া ব্যক্তিরা তাদের পরিবারের সদস্যদের নিজ দেশ থেকে ফেরত আনার সুযোগ পাবেন না। এমনকি স্থায়ী বসবাসের অনুমতি এবং নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন না। এ ছাড়া এই কোটার আওতায় বৈধ অভিবাসীরা কোনো ধরনের সামাজিক ভাতা পাবেন না।

গ্রীক সরকার এর আগে ১৯৯৭ /১৯৯৮ , ২০০১, ২০০৫ এবং ২০০৭ সালে বেশ কয়েকটি রাউন্ডে অনথিভুক্ত অভিবাসীদের নিয়মিত করেছিল।

এছাড়া, ২০১৪ সাল থেকে গ্রিসে অন্তত সাত বছর ধরে থাকা অভিবাসীরা বিভিন্ন শর্ত পূরণ করে নিয়মিত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। গ্রীক গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, এই আইনে প্রতি বছর ছয় থেকে আট হাজার অনিয়মিত অভিবাসী বৈধ হয়।

অসাধু মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

গ্রিসের আশ্রয় ও অভিবাসন মন্ত্রণালয় আশা প্রকাশ করেছে যে নতুন আইন অনিয়মিত অভিবাসীরা দ্রুত নিয়মিত হতে পারবে এবং আইনিভাবে কাজ চালিয়ে যেতে পারবে।

খসড়া আইনে কর্তৃপক্ষ মানব পাচার ও অনিয়মিত অভিবাসনের বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

এছাড়াও, কর ফাঁকি দিয়ে কোনো ধরনের চুক্তি ছাড়াই অনিয়মিত ও নিয়মিত অভিবাসীদের নিয়োগকারী নিয়োগকর্তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর শাস্তি ও জরিমানা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। মালিকদের বিরুদ্ধে গ্রিসের কৃষি খাতসহ বিভিন্ন খাতে শ্রমিক শোষণের অভিযোগ রয়েছে।

বর্তমানে, প্রায় ১৪৯ ,০০০ অভিবাসী গ্রীসে তাদের বসবাসের অনুমতি পুনর্নবীকরণের জন্য অপেক্ষা করছে। এসব প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য মন্ত্রণালয় ও অভিবাসন বিভাগের পর্যাপ্ত কর্মী নেই।

বাংলাদেশীদের জন্য সুনির্দিষ্ট চুক্তি রয়েছে
গ্রিস ও বাংলাদেশের মধ্যে আরেকটি চুক্তির আওতায় বাংলাদেশি অভিবাসীরা ইতিমধ্যেই দেশে বৈধ মর্যাদা পাচ্ছেন।

চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি শুরু হওয়া এই প্রক্রিয়া এখনও চলছে। বিশেষ চুক্তির আওতায় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বৈধ হওয়ার জন্য বাংলাদেশিদের নিবন্ধন করা যাবে।

এথেন্সে বাংলাদেশ দূতাবাস গত ২ ডিসেম্বর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

২ অক্টোবর পর্যন্ত, দুই দেশের মধ্যে এই চুক্তির অধীনে এথেন্সে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে ১০,০০০ এরও বেশি অভিবাসী নিবন্ধিত হয়েছে।

তাদের মধ্যে দ্বিতীয় ধাপের প্রক্রিয়া শেষে গ্রীক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বৈধতার নিশ্চয়তা পাওয়ার পর অন্তত ৬ হাজার বাংলাদেশি রেসিডেন্স পারমিট বা স্মার্ট কার্ডের জন্য অপেক্ষা করছেন।

About Zahid Hasan

Check Also

বাংলাদেশ নিয়ে ভারতীয় সাংবাদিকের অভিযোগ, যা বলল যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে ভারতীয় মিডিয়া এবং সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন দাবি তোলা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *