কিশোরগঞ্জের নিকলীতে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং শাখার গ্রাহকদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে উপজেলার দামপাড়া ইউনিয়নের দামপাড়া বাজার ভিআইপি রোডে এজেন্ট ব্যাংকিয়ারের শাখা হঠাৎ বন্ধ করে লাপাত্তা হয়ে যান এজেন্ট আবুল কালাম। এতে বিপাকে পড়েছেন আমানতকারীরা।
অভিযুক্ত আবুল কালাম দামপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে ব্যাংকের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, কয়েক বছর আগে দামপাড়া বাজারে ঝিনুক এন্টারপ্রাইজ নামে একটি কোম্পানি খুলে ডাচ-বাংলা এজেন্ট ব্যাংকিং শাখা চালু করেন আবুল কালাম। নিয়োগ দেন শাখা ব্যবস্থাপকসহ কর্মচারীও। গ্রাহকদের লাখ টাকায় মাসে হাজার টাকা সুদ দেওয়ার প্রলোভন দেখান তিনি।
আবুল কালাম এলাকার প্রবাসী পরিবারগুলোকে টার্গেট করতেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে প্রতি মাসে নির্ধারিত টাকা পরিশোধ করে আসছিলেন। আবুল কালাম জামানতের কোনো রশিদ না দিয়েই লাভের অংশ পরিশোধ করছিলেন।
উপজেলার দামপাড়া ইউনিয়নের গোয়ালহাটি গ্রামের আছির উদ্দিন ১০ লাখ টাকা জামানত হিসেবে রাখেন। এছাড়া মন্টু রায় ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা, রাধানাথ মল্লিক ৬ লাখ টাকা, যমুনা খাতুন ৪ লাখ ও সিদ্দিক হোসেন ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
রইস উদ্দিন, মন্টু রায়, সিদ্দিক হোসেন ও রাধানাথ মল্লিকসহ একাধিক গ্রাহক জানান, এজেন্ট আবুল কালাম আজাদ ১১ শতাংশ সুদের কথা বলে গ্রাহকদের টাকা আটকে রাখতেন। গত ১৯ জানুয়ারি মুনাফার সঙ্গে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা ছিল গ্রাহকদের। পরে হঠাৎ তার অফিসের তালা ঝুলতে দেখেন তারা।
এ ঘটনায় ডাচ-বাংলা এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ৭৯ লাখের মতো টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এজেন্ট আবুল কালাম। এ ঘটনায় মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডাচ-বাংলা এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের রিজিওনাল ম্যানেজার (আরএম) মো. মাহবুবুল আলম।
এরিয়া ম্যানেজার ফরিদ হোসেন জানান, গত ২২ জানুয়ারি তিনি ব্যাংকের পক্ষে বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে দামপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।
পরে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নুরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আবুল কালাম কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছে বলেও শুনেছি। কয়েকদিন ধরে তার সাথে আমার দেখা নেই। তিনি এখন কোথায় আছেন বলতে পারব না। তবে সে পরিবার নিয়ে পালিয়েছে বলে এলাকায় শুনেছি।