সৌদি আরবে দীর্ঘদিন ধরে নতুন নতুন নিয়ম কানুন করছে দেশটির উর্ধতন কর্মকর্তারা। তবে এই সকল নতুন নিয়ম কানুন করার পর দেশটি কে নিয়ে নানা রকম আলোচনা সমালোচনা লেগে রয়েছে। এবার দেশটিতে নতুন একটা নিয়ম করা হয়েছে যে সৌদি আরবে এখন থেকে নামাজের সময় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে। এই সংবাদ প্রকাশ পাওয়ার পর থেকে এর পক্ষে অনেকে কথা বলছেন, আবার এর বিপক্ষেও অনেকে কথা বলছেন। এবার এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ পেল।
কয়েক দশক ধরে সৌদি আরবের বাণিজ্যিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আযান এবং নামাজের সময় বন্ধ রাখা হত, গাড়িগুলো পেট্রোল স্টেশনগুলি খোলার জন্য অপেক্ষায় থাকত, এবং ফার্মেসী, রেস্তোঁরা, সুপার মার্কেটের পৃষ্ঠপোষকরা গ্রাহকদের বাইরে অপেক্ষা করতে দেখা যেত।
এসব দিনগুলো এখন থেকে আর সৌদিতে থাকছে না। শুক্রবার (১৬ জুলাই) সৌদি চেম্বারসের প্রধানের জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সৌদি আরব নামাজের সময়ে দোকানগুলোকে খোলা রাখার অনুমতি দেবে।
আরব নিউজের প্রতিবেদনের বরাত জানা যায়, শপিংয়ের অভিজ্ঞতা এবং ক্রেতাদের জন্য পরিষেবাগুলোর স্তর উন্নত করার প্রয়াসে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার বিষয়ে সৌদি চেম্বার্সের প্রধান আজলান বিন আবদুল আজিজ আল-আজলান তার বিজ্ঞপ্তিতে সৌদি চেম্বারস অফ কমার্সের সকল সদস্যদের অবহিত করেন।
এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে মন্তব্য করে সৌদি আরবের রাজনীতি ও অর্থনীতি বিষয়ক লেখক ও ভাষ্যকার আলী সমীর শিহাবী টুইট করেছেন যে, নামাজের সময় দোকানপাট খোলা রাখা ধর্মীয়দের আধিপত্যের অবসান হওয়ার বিশাল প্রতীকী এবং ব্যবহারিক পদক্ষেপ হিসেবে দৈনন্দিন জীবনের একটি অংশ হবে।
শিহাবী আরও বলেন, নামাজের জন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়া লোকেরা দীর্ঘ বিরতি নিতে বা গ্রাহকদের পণ্য ও পরিষেবার জন্য অপেক্ষা করিয়ে রাখা একটি অজুহাত ছিল।
অর্থনীতিবিদ হাবিবুল্লাহ আল-তুরকিস্তানি বলেন যে, এই সিদ্ধান্তের জাতীয় অর্থনীতিতে কোনও প্রভাব পড়বে না।
নামাজের সময় দোকান ও ব্যবসা-বাণিজ্য উন্মুক্ত রাখার বিতর্ক দীর্ঘকাল ধরে সৌদি সমাজের লোকদের মধ্যে অনেকগুলো আলোচনার বিষয়ের মধ্যে অন্যতম হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
সাম্প্রতিক এই সংস্কারগুলোর আগে, লঙ্ঘনগুলি পর্যবেক্ষক করতে হায়া বা ধর্মীয় পুলিশ হিসাবে পরিচিত (সিপিভিপিভি) এর প্রচার ও প্রতিরোধের জন্য কমিশন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়েছিল।
কমিশন অফিসারগণ দোকানদারদের গ্রেপ্তার এবং শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা ছিল, এমনকি কয়েক মিনিটের জন্য তাদের দোকান বন্ধ করতে দেরি করার জন্য হলেও শাস্তি পেতে হত। এছাড়া প্রবাসী দোকান পরিচারকদের আটক থেকে নির্বাসন পর্যন্ত শাস্তি দেওয়ার বিধান ছিল।
এদিকে, এই নতুন সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশ বিদেশে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকে বলছেন দেশটি নতুন যে সিদ্ধান গ্রহণ করেছে এতে করে সাধারণ মানুষ সহ অসংখ্য প্রবাসী ইচ্ছে মত কেনা-কাটা করতে পারবে। তবে এতে করে ধর্মীয় কাজ গুলো অনেকে করতে পারবে না এমন কথাও অনেকে বলছেন। দেশটির অর্থনীতিবিদরা এই বিষয়ে তাদের মতামত দিচ্ছেন। অন্য সব বিষয়ের সঙ্গে এই বিষয়টি নিয়ে বর্তমানে বেশ আলোচনা শুরু হয়েছে।