Friday , November 15 2024
Breaking News
Home / Countrywide / গোড়ান ক্লাবে জোড়া প্রাণনাশের চিহ্ন রেখে যায় মাসুম

গোড়ান ক্লাবে জোড়া প্রাণনাশের চিহ্ন রেখে যায় মাসুম

মতিঝিল আওয়ামী লীগের ( Motijheel Awami League ) সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপুকে ( Jahidul Islam Tipu ) গু/লি করে হ”ত্যা করেছে মাসুম মোহাম্মদ আকাশ। তিনি ঢাকা ছেড়ে জয়পুরহাটে চলে গিয়েছিলেন। লক্ষ্য ছিল ভারতে ( India ) পালিয়ে যাওয়া। কিন্তু তা সম্ভব না হওয়ায় তিনি বগুড়া ( Bogra )য় পালিয়ে যান। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ এড়াতে পারেনি। ঘটনাস্থলের আশপাশের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার (সিসি ক্যামেরা) ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আকাশকে শনাক্ত করা হয়। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাসুমের অবস্থানও চিহ্নিত করা হয়। অবশেষে বগুড়া ( Bogra )য় গোয়েন্দা পুলিশের ( police ) হাতে ধরা পড়ে আকাশ।

একটি ঐতিহ্য আছে – প্রাননাশকারী সবসময়েই কোন না কোন চিহ্ন রেখে যায়। শাহজাহানপুরে ( Shahjahanpur ) জোড়া প্রয়াতের মাধ্যমে এটি পুরোপুরি মিলে গেছে। গোয়েন্দারা কীভাবে জানলেন বন্দু/কধারীর নাম, কী আছে খু/নের নেপথ্যে? ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ( police ) ( Dhaka Metropolitan Detective Police ) (ডিবি ( DB )) একাধিক কর্মকর্তার কাছে এমন প্রশ্ন করা হলে বেরিয়ে আসে চমকপ্রদ ঘটনা। শুটার মাসুম মোহাম্মদ মাসুম ( Masum Mohammad Masum ) দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় সফলভাবে নিথর মিশন শেষ করে ২৪ মার্চ রাতে ( March night ) নিজ এলাকার গোরান ক্লাবে ( Goran Club ) যান। তার পুরোনো বন্ধুরা প্রতিদিনের মতো ক্লাবে আড্ডা দিচ্ছিল। তবে মাসুমের অভিব্যক্তি দেখে বন্ধুদের অস্বাভাবিক মনে হলো। মাসুমের আবার ওখান থেকে বের হওয়ার তাড়া ছিল। ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সঙ্গেও কথা বলেন। ঢাকার ( Dhaka ) চমকপ্রদ মামলার রহস্য উদঘাটনের প্রথম সূত্র ছিল গোরান ক্লাবে ( Goran Club ) বন্ধুদের সামনে ওই ধরনের আচরণ ও কথাবার্তার মিল।

মামলার তদন্তের সঙ্গে সরাসরি জড়িত একাধিক কর্মকর্তা দেশের একতি জনপ্রিয় গনমাধ্যেমকে বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর ডিবি ( DB )র ছয় কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে যান। তারা প্রাথমিকভাবে একাধিক সিসিটিভি ফুটেজ দেখেছেন। এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রের সঙ্গে কথা হয়েছে যারা তদন্ত করছে। পাশাপাশি সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে। এতে তারা প্রথমে একাকী শ্যুটারের শারীরিক আকৃতি এবং উচ্চতা সম্পর্কে একটি পরিষ্কার ধারণা পায়। গোয়েন্দারা দেখেছেন, শ্যুটারের উচ্চতা হবে ৫ ফুট ৬ ইঞ্চির বেশি। ফুটেজ বিশ্লেষণের পাশাপাশি প্রযুক্তিগত তদন্তও শুরু করেছে তারা। এরপর ঘটনার প্রথম রাতে এলাকায় এক ব্যক্তিকে খুঁজে পান তারা।

তথ্য জানার জন্য তাকে গোয়েন্দা হেফাজতে ডাকা হয়। ওই ব্যক্তি মাসুমকে দীর্ঘদিন ধরে চেনেন। সে রাতে গোরান ক্লাবে ( Goran Club ) গোয়েন্দাদের কাছে মাসুমের অস্বাভাবিক আচরণের কিছু বিবরণ দেন। এরপর মাসুমের নাম সামনে আসে। রাতে তার বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। দেখা যায় মাসুম বাসায় নেই। পরিবারের সদস্যরা জানেন না তিনি কোথায় আছেন। এরপর সন্দেহ বাড়তে থাকে তাকে ঘিরে। এরপর মাসুমের স্ত্রী দিনাকে ( Dinake ) জিজ্ঞাসাবাদ করেন গোয়েন্দারা। তিনি তার স্বামীর অবস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারেননি। এরপর কারিগরি ও উৎসভিত্তিক তদন্তে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, ওই রাতেই ঘনিষ্ঠ বন্ধুর গাড়িতে করে জয়পুরহাটের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছিলেন মাসুম।

আর তার সহযোগীরা বিভিন্ন পথ ধরে। এরপর মাসুমকে ধরতে কাজ শুরু করে গোয়েন্দারা। দলটি জয়পুরহাটের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করে। সীমান্ত দিয়ে পালাতে ব্যর্থ হয়ে মাসুম বগুড়া ( Bogra ) চলে যান। রেজিস্ট্রারে নাম না লিখে অজ্ঞাত হোটেলে চলে যান তিনি। এক বন্ধু তাকে সাহায্য করেছিল। পরে বগুড়া ( Bogra ) পুলিশের ( police ) সহায়তায় ঢাকার ( Dhaka ) গোয়েন্দারা তাকে গ্রেপ্তার করে। সে সময় তিনি খুবই শান্ত ও স্বাভাবিক ছিলেন।

পরে জানা যায়, জীবন নাশের মিশন শেষ করে শাহজাহানপুর ও মতিঝিল এলাকা ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন মাসুম। আওয়ামী লীগ নেতা টিটুকে হ/ত্যার পর শাহজাহানপুর থেকে রাজারবাগ মোড়ে মোটরসাইকেল নিয়ে যান। এরপর তারা মালিবাগ ফ্লাইওভার হয়ে বাংলামটরে আসেন। মাসুম বাংলামটর থেকে মগবাজার হয়ে হাতিরঝিলে প্রবেশ করে। বাড্ডার আইলুপ হয়ে ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সামনে বনশ্রী হয়ে গোরানে প্রবেশ করে। এরপর চাপড়া মসজিদের সামনে গিয়ে অ/স্ত্র ও মোটরসাইকেল একজনের কাছে তুলে দিয়ে ক্লাবে প্রবেশ করেন। প্রায় দশ মিনিট গোরান ক্লাবে ছিলেন মাসুম।

বন্দু/কধারীকে শনাক্ত করতে তার বন্ধুসহ অন্তত ১৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। মাসুমের স্ত্রী দিনা পুলিশকে জানান, তিন মাস ধরে স্বামীর সঙ্গে বসবাস করছেন না তিনি। এ কারনে বাবার বাড়িতেই অবস্থান করছেন তিনি। বগুড়া সদর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক তাজমিলুর রহমান জানান, ঢাকা ডিবির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল সকালে এ অভিযান চালানো হয়। ওই সময় হোটেলের দ্বিতীয় তলায় ২১ নম্বর কক্ষে শুটার মাসুম অবস্থান করছিলেন। তার ছবি আগেই পাঠানো হয়েছে। সেই ছবি দেখে মাসুমকে শনাক্ত করা হয়। ধরা পড়ার পর তিনি আওয়ামী লীগ নেতা টিপুকে নিথর করার কথা অকপটে স্বীকার করেন।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) রাতে শাহজাহানপুরে মতিঝিল আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপুকে গু/লি করে হ/ত্যা করা হয়। মাইক্রোবাসসহ যানজটে আটকে পড়েন টিপু। তাকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গু/লি করা হয়, যার মধ্যে একটি টিপুর গাড়ির পাশে রিকশায় থাকা কলেজ ছাত্রী সামিয়া আফনান প্রীতিকে আঘাত করে। টিপুর মতো তাকেও গু/লি করে হত্যা করা হয়। টিপুর চালক মনির হোসেন মুন্না (২৬) গু/লিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

 

About Syful Islam

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *