Monday , February 17 2025
Breaking News
Home / Countrywide / গোলাম আযমের ছেলে আযমীকে হ*ত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা

গোলাম আযমের ছেলে আযমীকে হ*ত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা

জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযমের ছেলে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) আব্দুল্লাহিল আমান আযমীকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) সোমবার (২৭ জানুয়ারি) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এক সেনা কর্মকর্তা সংস্থাটিকে জানান, তিনি আর্মিতে আযমীর সহকর্মী ছিলেন। আযমীর শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে তিনি তার মুক্তির জন্য শেখ হাসিনার কাছে অনুরোধ করেন, কিন্তু শেখ হাসিনা বারবার তা প্রত্যাখ্যান করেন। এক পর্যায়ে শেখ হাসিনা আযমীকে মেরে ফেলতে তাকে পরামর্শ দেন, তবে তিনি তা করেননি। এর পর থেকে আযমীর মুক্তির বিষয়ে আর কথা বলেননি ওই সেনা কর্মকর্তা।

২০১৬ সালে আযমী, মীর আহমাদ বিন কাসেম (আরমান) এবং হুম্মাম কাদের চৌধুরী আটক হন। তারা তিনজনই বিরোধী দলের নেতাদের সন্তান, যাদের বাবাদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের সহযোগী থাকার অভিযোগ এনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল।

হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল শর্তে যে তিনি তার বেআইনি আটক সম্পর্কে কাউকে কিছু বলবেন না। হাসিনার পতনের পর হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সাথে একমাত্র হুম্মাম সাক্ষাৎ করেন এবং তার গ্রেফতার হওয়ার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। তিনি বলেন, যেখানে তাকে রাখা হয়েছিল, সেখানে আরও অনেক বন্দী ছিল এবং সবাইকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হত।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, মীর আহমদ বিন কাসেম (আরমান) গ্রেফতারের সময় তার স্ত্রী, বোন ও সন্তানদের সামনে তাকে আটক করা হয়। তিনি গ্রেফতারি পরোয়ানা দেখাতে চান, কিন্তু কর্তৃপক্ষ তা প্রত্যাখ্যান করে এবং তাকে বাড়ি থেকে টেনে বের করে নেয়। এক কর্মকর্তা বলেন, “দয়া করে আমাদেরকে আপনার সাথে নিষ্ঠুর আচরণ করতে বাধ্য করবেন না।”

আরমানের গ্রেফতার সম্পর্কিত এক কর্মকর্তা জানান, “এ ধরনের সিদ্ধান্ত রাজনৈতিকভাবে এবং সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নেওয়া হয়েছিল।” ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, “যখন তিনি তার ইউনিটে যোগ দেন, তখন তাকে জানানো হয় যে আযমী, আরমান ও হুম্মাম কাদের চৌধুরী বিরোধী দলের প্রথম সারির নেতাদের সন্তান। তাদের মুক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে শেখ হাসিনাকেই।”

প্রতিবেদনে নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা চলানো নির্যাতনের কথা তুলে ধরা হয়েছে, এবং তাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রতিবেদনে র‌্যাবের বিলুপ্তি এবং পুলিশের সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর সংস্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। একইসাথে বিচার বিভাগে সংস্কারেরও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে নিরাপত্তা বাহিনী ক্ষমতার অপব্যবহার করে বহু মানুষকে গুম করেছে। অন্তর্বর্তী সরকার একটি কমিশন গঠন করে এবং তাদের প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনার আমলে অন্তত সাড়ে তিন হাজার মানুষকে গুম করা হয়েছিল। এসব ঘটনার জন্য শেখ হাসিনা ও তার শীর্ষ কর্মকর্তারা দায়ী।

About Nasimul Islam

Check Also

কারো রক্তচক্ষু বা ধমক শুনবেন না, ডিসিদের ড. মুহাম্মদ ইউনূস

জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *