কিছুদিন আগে প্রতিবেশী দেশ ভারতে চলছিল হিজাব বিষয়ে বিতর্ক এবং আলোচনা। কর্নাটকের একটি কলেজে হিজাব পরা নিয়ে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের( India ) সর্বোচ্চ আদালত রায় দেন, “হিজাব পরা যাবে স্কুল-কলেজে”। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সেই ঘটনার মতো ঘটলো আমাদের দেশেই, ইউপি চেয়ারম্যান ক্লাসে ঢুকে নিজ হাতে খুলে ফেললেন ছাত্রীদের মাথার হিজাব। স্কুলের একজন শিক্ষক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। বিষয়টি ছিল আলোচনার সৃষ্টি হয়।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ক্লাসে ঢুকে শিক্ষার্থীদের হিজাব খুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় ওঠে।গত রোববার বেলা ১১টার( ১১টার ) দিকে উপজেলার বান্ধাবাড়ী ইউনিয়নের বান্ধাবাড়ী গ্রামে অবস্থিত জেবিপি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে এ ঘটনা ঘটে।
সরেজমিন বান্ধাবাড়ী গ্রামে গিয়ে কথা হয় শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও স্থানীয়দের সঙ্গে। হঠাৎ ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ( Mizanur Rahman ) মানিক ক্লাসে ঢুকে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে বাধা দেন। চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান( Mizanur Rahman ) শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, তারা যেন বোরকা ও হিজাব পড়ে স্কুলে না আসে। হিজাব না পরে খোলা চুলে ক্লাসে এলে ভালো লাগবে। তার কথা শুনে ছাত্ররা হতভম্ব হয়ে যায়।এসময় তিনি বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর শরীর থেকে হিজাব ও চুলের স্কার্ফ খুলে নিজ হাতে টেবিলে রাখেন।
বান্ধাবাড়ী জেবিপি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী ফজিহা রহমান ( Fajiha Rahman ) রিয়া, তানিয়া আক্তার( Tania Akhter ), খাদিজা হাওলাদার ( Khadija Hawladar ) ও রহিমা সরদার ( Rahima Sardar ) জানান, চেয়ারম্যান শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করে আমাদের বলেন, স্কুলের পর হিজাব ও বোরকা পরা যাবে না। তিনি নিজেই আমাদের মাথায় হাত দিয়ে ক্লিপটি খুলে হিজাবের টেবিলে রাখলেন। দশম শ্রেণীর ছাত্র অর্ণব দাস( Arnab Das ) ও সলিমুল্লাহ জানান, চেয়ারম্যান অকারণে তাদের চুল ধরে শারীরিকভাবে লা’ঞ্ছিত করেন।
বান্ধাবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা হান্নান মোল্লা বলেন, ঘটনাটি খুবই স্পর্শকা’তর। ভাবতে অবাক লাগে একজন চেয়ারম্যান এমন ঘটনা ঘটাতে পারেন। আমরা স্থানীয়দের বিচার চাই।বান্ধাবাড়ী জেবিপি স্কুলের বাংলার শিক্ষক শামীম আহমেদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের ক্লাস করছিলাম। এ সময় চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মানিক ক্লাসে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের বোরকা পড়ে ক্লাসে আসতে নিষেধ করেন। এমনকি তিনি নিজের হাতে অনেক হিজাব খুলে টেবিলে রেখেছিলেন।
এ বিষয়ে বান্ধাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মানিকের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করে তাড়িয়ে দেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পেরেছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে, যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একজন চেয়ারম্যান কিভাবে এমন ঘটনা ঘটাতে পারে, এটা নিয়ে ক্ষুদ্ধতা প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের অনেকটা অকারনে, চুল ধরে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন ইউপি চেয়ারম্যান। ঘটনাটি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে কথা বলেন সেখানকার কয়েকজন। এই সংবাদ লেখা পর্যন্ত আইনিভাবে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।